কর্মফল সম্পর্কে জ্যোতিষশাস্ত্র কী কথা বলছে।
কথায় আছে যেমন কর্ম তেমন ফল । বেদান্তসূত্রে বলা হয়েছে, জগৎকে সৃষ্টির জন্য ব্রহ্মকেও জীবের কর্মফলের অপেক্ষায় থাকতে হয়েছে। আমাদের সাধারণ জীবনযাপনে দেখা যায় অনেকেই নানা পদ্ধতিতে শ্রমের দ্বারাও জীবনে সুখের সন্ধান পেতে পারে না আবার অন্যদিকে কেউ কেউ বিনা পরিশ্রমেই অনেক শ্রমের ফল ভোগ করে। উপনিষদে বলা হয়েছে ভাল কাজ করলে পুণ্য আর পাপ কাজ করলে মন্দ ফল ভোগ করতে হয়। পূর্ব জন্মের কর্মফলেই ইহলোক ও পরলোক প্রাপ্তির প্রধান কারণ হিসাবে মনে করা হয়। দেহত্যাগের পর যারা খুব পুন্যবান তারা চন্দ্রালোকে যান সুখ ভোগ করতে, আর পাপী আত্মাদের গন্তব্য হয় যমলোকে।
এবারে আসা যাক কর্মফলের জন্য ভাগ্য বিপর্যয়ের প্রসঙ্গে –
আমরা জানি জ্যোতিষশাস্ত্রের নবম ভাব থেকে ভাগ্য বিচার করা হয়। অর্থাৎ নবমভাব ও নবমপতি যদি দুর্বল থাকে তাহলে ভাগ্যের বিড়ম্বনা অপরিহার্য। কিন্তু আসল কারণটি হল ভুল সিদ্ধান্তের ফলে জীবনে বিপর্যয় ঘটে। কর্মক্ষেত্রের ভুল আপনাকে কর্মহীন করতে পারে, অর্থাৎ তাই হল কর্মফল।
জন্মরাশি বা চন্দ্রের অবস্থান হতে নবম স্থানে যদি কোনও অশুভ গ্রহের অবস্থান হয় তাহলে বিপর্যয় আসবে।
জন্ম ছকে যদি ভাগ্যস্থান সবল না হয় তাহলে বিপর্যয় আসবে।
সাধারণত অষ্টমপতি পাপগ্রহ হয়ে অষ্টমে, তুঙ্গে বা ত্রিকোণ স্থলে থাকলে যে কোনও বিপর্যয় হতে পারে। অনেক সময় দেখা যায় কোনও ব্যক্তি ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে এমন একটি বিষয়ে পড়াশোনা করল সেটা তার কোনও কাজেই লাগলো না। জন্ম ছকে নির্দেশিত বিষয়ে পড়াশোনা করলে সাফল্যময় কেরিয়ার পেত, কিন্তু তা হল না, অর্থাৎ ভুল কর্মফলে ভাগ্য বিপর্যয় সৃষ্টি হল।
বিবাহের ক্ষেত্রেও একই ফল বর্তমান। পাত্র-পাত্রী উভয়ের শুক্র, চন্দ্র, মঙ্গলের অবস্থান এবং রবি ও বৃহস্পতি অবস্থান বিচার না করে, সর্বোপরি সপ্তমপতি বিচার না করে বা মাঙ্গলিক কিনা বিচার না করেই বিবাহ দিয়ে দেন, তবে এক্ষেত্রে বিবাহিত জীবনে বিপর্যয় ঘটবেই।
তাই অবশ্যই জ্যোতিষ বিচার অপরিহার্য এবং জ্যোতিষ বিচার না করলে ভাগ্য বিপর্যয়ের কারণ বোঝা সম্ভব নয়। অতএব দেখা যাচ্ছে সুচিন্তিত এবং সঠিক সিদ্ধান্তযুক্ত কর্মফল মানুষকে ভাগ্য বিপর্যয়ের রাস্তা থেকে উদ্ধার করে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy