Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

একাদশীতে কী কী করা এবং খাওয়া উচিত নয়

একাদশী একটি চান্দ্র তিথি। চাঁদের শুক্ল ও কৃষ্ণপক্ষের একাদশী তিথি, হিন্দু ধর্মমতানুসারে পূণ্যতিথি হিসেবে বিবেচিত। হিন্দুধর্মমতে এ দিন বিধবাদের, বিশেষত উচ্চবর্ণীয় বিধবাদের নিরম্বু উপবাস বিহিত। অবশ্য বর্ণ ও লিঙ্গ নির্বিশেষে যে কেউ একাদশী পালন করতে পারেন।

পার্থপ্রতিম আচার্য
শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০১৯ ০০:০০
Share: Save:

একাদশী একটি চান্দ্র তিথি। চাঁদের শুক্ল ও কৃষ্ণপক্ষের একাদশী তিথি, হিন্দু ধর্মমতানুসারে পূণ্যতিথি হিসেবে বিবেচিত। হিন্দুধর্মমতে এ দিন বিধবাদের, বিশেষত উচ্চবর্ণীয় বিধবাদের নিরম্বু উপবাস বিহিত। অবশ্য বর্ণ ও লিঙ্গ নির্বিশেষে যে কেউ একাদশী পালন করতে পারেন। এই সময় সাধারণত ফলমূল ও বিভিন্ন সবজি এবং দুধ খাওয়া যায়। তবে একাদশীতে পঞ্চরবি শস্য বর্জন করা বাঞ্ছনীয়।

এখন দেখে নেওয়া যাক একাদশীতে কোন পাঁচ প্রকার রবিশস্য গ্রহণ নিষিদ্ধ:

১। ধান জাতীয় সকল প্রকার খাদ্য যেমন চাল, মুড়ি, চিড়া, সুজি, পায়েস, খিচুড়ি, চালের পিঠা, খই ইত্যাদি

২। গম জাতীয় সকল প্রকার খাদ্য যেমন আটা, ময়দা, সুজি, বেকারির রুটি, সব রকম বিস্কুট, হরলিকস ইত্যাদি।

৩। যব বা ভূট্টা জাতীয় সকল প্রকার খাদ্য যেমন ছাতু, খই, রুটি ইত্যাদি।

৪। ডাল জাতীয় সকল প্রকার খাদ্য যেমন মুগ, মাসকলাই, খেসারি, মুসুরী, ছোলা, অড়হর, মটরশুঁটি, বরবটি ও সিম ইত্যাদি।

আরও পড়ুন : খুব সাবধান পকেটে এই জিনিস গুলো কখনো রাখবেন না, নিজের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে

৫। সরষের তেল, সয়াবিন তেল, তিল তেল ইত্যাদি। উপরোক্ত পঞ্চ রবিশস্য যে কোনও একটি একাদশীতে গ্রহণ করলে ব্রত নষ্ট হয়।

উল্লেখ্য, যাঁরা সাত্ত্বিক আহারী নন এবং চা, বিড়ি/সিগারেট, পান, কফি ইত্যাদি নেশা জাতীয় গ্রহণ করেন, একাদশী ব্রত পালনের সময়ে এগুলি গ্রহণ না করাই ভাল।

একাদশী করলে যে কেবলমাত্র নিজের জীবনের সদ্‌গতি হবে তা নয়, পিতা/মাতা নিজ কর্মদোষে যদি নরকবাসী হন, তবে সেই পুত্রই (একাদশী ব্রতী) পিতামাতাকে নরক থেকে উদ্ধার করতে পারে। একাদশীতে অন্ন ভোজন করলে যেমন নরকবাসী হতে হয়, অন্যকে ভোজন করালেও নরকবাসী হবে। কাজেই একাদশী পালন করা আমাদের সকলেরই কর্তব্য।

একাদশী পারণ: (একাদশী তিথির পরদিন উপবাস ব্রত ভাঙার পর নিয়ম) পঞ্জিকাতে একাদশী পারণের (উপবাসের পরদিন সকালে) যে নির্দিষ্ট সময় দেওয়া থাকে, সেই সময়ের মধ্যে পঞ্চ রবিশস্য ভগবানকে নিবেদন করে, প্রসাদ গ্রহণ করে পারণ করা একান্ত দরকার।নতুবা একাদশীর কোনও ফল লাভ হবে না। একাদশী ব্রত পালনের প্রকৃত উদ্দেশ্য কেবল উপবাস করা নয়, নিরন্তর শ্রীভগবানের নাম স্মরণ, মনন, ও শ্রবণ কীর্তনের মাধ্যমে একাদশীর দিন অতিবাহিত করতে হয়। একাদশী পালনে পরনিন্দা, পরচর্চা, মিথ্যা ভাষণ, ক্রোধ দূরাচারী, সহবাস সম্পূর্ণ রূপে নিষিদ্ধ।

একাদশী ব্রতের আগের দিন রাত ১২টার আগেই অন্ন ভোজন সম্পন্ন করে নিলে সবচেয়ে ভাল। ঘুমনোর আগে ব্রাশ করে দাঁত ও মুখ গহ্বরে লেগে থাকা সব অন্ন পরিষ্কার করে নেওয়া সর্বোত্তম। সকালে উঠে শুধু মুখ কুলি ও স্নান করতে হয়।

একাদশীতে সবজি কাটার সময় সতর্ক থাকতে হবে যেন কোথাও কেটে না যায়। একাদশীতে রক্তক্ষরণ বর্জনীয়। ব্রাশ করার সময় অনেকের রক্ত ক্ষরণ হয়ে থাকে। তাই একাদশীর আগের দিন রাতেই দাঁত ভাল ভাবে ব্রাশ করে নেওয়া উচিত।

একাদশীতে চলমান একাদশীর মাহাত্ম্য ভগবদ্ভক্তের শ্রীমুখ হতে শ্রবণ অথবা সম্ভব না হলে নিজেই ভক্তি সহকারে পাঠ করতে হয়।

যাঁরা একাদশীতে একাদশীর প্রসাদ রান্না করেন, তাঁদের পাঁচ ফোড়ন ব্যবহারে সতর্ক থাকা উচিত। কারণ পাঁচ ফোড়নে সরিষার তেল ও তিল থাকতে পারে, যা বর্জনীয়।

একাদশীতে শরীরে প্রসাধনী ব্যবহার নিষিদ্ধ। তেল (শরীরে ও মাথায় ) সাবান ও শ্যাম্পু ইত্যাদি বর্জনীয়।

সকল প্রকার ক্ষৌরকর্ম ও নখ কাটা নিষিদ্ধ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ekadashi Rashi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE