Advertisement
২৮ মার্চ ২০২৩

চেন্নাইয়ে শুরু বিধায়ক-বন্দি খেলা

এক জনের অস্ত্র ‘আম্মার আত্মা’। অন্য জনের দাবি, প্রায় সব বিধায়কই তাঁর দিকে। চেন্নাইয়ের কুর্সি নিয়ে দু’জনের লড়াইয়ে বল কিন্তু রাজ্যপালের কোর্টে!

শশিকলা বনাম পনীরসেলভম। নজরে তামিলনাড়ুর কুর্সি। বুধবার চেন্নাইয়ে।ছবি:পিটিআই

শশিকলা বনাম পনীরসেলভম। নজরে তামিলনাড়ুর কুর্সি। বুধবার চেন্নাইয়ে।ছবি:পিটিআই

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৩:৫৫
Share: Save:

এক জনের অস্ত্র ‘আম্মার আত্মা’। অন্য জনের দাবি, প্রায় সব বিধায়কই তাঁর দিকে। চেন্নাইয়ের কুর্সি নিয়ে দু’জনের লড়াইয়ে বল কিন্তু রাজ্যপালের কোর্টে!

Advertisement

ইস্তফা দেওয়ার পরে তদারকি মুখ্যমন্ত্রী পনীরসেলভম এখন দাবি করে যাচ্ছেন, বিধানসভায় গরিষ্ঠতার প্রমাণ দেবেন তিনি। কিন্তু দলের ১৩৪ জন বিধায়কের মধ্যে ১৩০ জনই কার্যত শশিকলা নটরাজনের ‘কব্জায়’। তিনটি বাসে করে তাঁদের চেন্নাইয়ের একটি বিলাসবহুল হোটেলে নিয়ে গিয়েছে শশিকলা শিবির। এই ব্যবস্থা, কারণ তাঁরা যাতে পনীরসেলভমের শিবিরে যোগ দিতে না পারেন। এডিএমকে-র শীর্ষনেত্রী যখন বিধায়ক গোছাতে ব্যস্ত, তখন পনীরসেলভমের বাড়ির সামনে জড়ো হয়ে তাঁকে সমর্থন জানিয়েছেন হাজার হাজার কর্মী-সমর্থক ও রাজ্যের বহু বিশিষ্ট জন। দিনভর, এমনকী রাতেও।

এই পরিস্থিতিতে আরও সময় নিতে চাইছেন রাজ্যপাল বিদ্যাসাগর রাও। মহারাষ্ট্র ও তামিলনাড়ু, দুই রাজ্যেরই দায়িত্ব রয়েছে তাঁর হাতে। আপাতত মুম্বইয়ে রয়েছেন তিনি। রাজভবন সূত্রে খবর, রাজ্যপাল আগামিকাল তামিলনাড়ু এসে দুই শিবিরের সঙ্গে কথা বলবেন। বিজেপির একটি সূত্রের খবর, শশিকলার বিরুদ্ধে দুর্নীতি-মামলায় এক সপ্তাহের মধ্যে রায় ঘোষণা হবে বলে গত সোমবার জানিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। ওই রায় না ‌আসা পর্যন্ত রাজ্যপালকে অপেক্ষা করারই পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নায়ডু অবশ্য আজও দাবি করেছেন, কেন্দ্র তামিলনাড়ুর রাজনীতি বা রাজ্যের সরকার নিয়ে কোনও রকম নাক গলাচ্ছে না।

বুধবার সকালে সাংবাদিকদের মুখোমুখি পনীরসেলভম।

Advertisement

রীতিমাফিক রাজ্যপালের কাছে সরকার গড়ার দাবি না জানিয়েই শশিকলা ঘোষণা করে দিয়েছিলেন মঙ্গলবার শপথ নেবেন তিনি। পনীরসেলভম এর পরে নাটকীয় ভাবে বিদ্রোহ করায় তাঁকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ আখ্যা দিয়ে দল থেকে বহিষ্কার করেন শশিকলা। আজ তিনি দলের গোটা তথ্যপ্রযুক্তি সেলকে বহিষ্কার করেছেন পনীরসেলভমের বক্তব্য প্রচারের জন্য। সেই সঙ্গে আঙুল তুলেছেন ডিএমকে-র দিকে। শশিকলার দাবি, ‘‘পনীরসেলভমের বিদ্রোহের পিছনে রয়েছে ডিএমকে-র উস্কানি। সম্প্রতি বিধানসভায় পনীরসেলভম এবং ডিএমকে নেতা এম কে স্ট্যালিনকে হাসিমুখে কথা বলতে দেখেছেন সকলেই।’’ এই তোপের জবাব দিয়ে স্ট্যালিন বলেন, ‘‘আমরা রাজনৈতিক সৌজন্য বজায় রাখি। পনীরসেলভম কেন, আমি জয়ললিতার সঙ্গেও কথা বলতাম। তা নিয়ে কি শশিকলা এমন কথা বলতে পারতেন?’’ স্ট্যালিনের পরামর্শ, অন্য দলকে না দুষে শশিকলা বরং পনীরসেলভমের অভিযোগের জবাব দিন।

আরও পড়ুন: বিধানসভায় তুলকালাম, বিল ঘিরে ধস্তাধস্তি, অসুস্থ মান্নান

কিন্তু সরকারে কে আসবে? পনীরসেলভম মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ায় রাজ্যপাল এ বার দুই শিবিরের বক্তব্য শুনবেন। সমর্থনের ছবিটা বুঝে নিয়ে দু’জনের কাউকে ডাকবেন সরকার গড়তে। বিধানসভায় তিনিই গরিষ্ঠতার প্রমাণ দেওয়ার সুযোগ পাবেন। শশিকলা শিবিরের আশঙ্কা, চিন্নাম্মার বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলার রায় বেরনোর আগে রাজপাল সরকার গড়তে না-ও ডাকতে পারেন কাউকে। তাই রাজ্যপাল যাতে বিলম্ব না করেন সেই জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে দরবার করতে দিল্লি যাচ্ছেন এডিএমকের সাংসদরা।

আরও পড়ুন: প্রেমিকের দিকে আঙুল তুললেন অভিনেত্রীর মা

সরকারের দখল নিয়ে এই চরম নাটকের মাঝে এডিএমকের নিচুতলার সমর্থকদের একটাই খেদোক্তি উঠে আসছে, আম্মা কেন বলে গেলেন না, কে পাবে তাঁর কুর্সি!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.