Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

উত্তপ্ত ত্রিপুরায় চলল লাঠি-গুলি, জখম ১০

গত দু’দিন ধরে হামলার শিকার অ-জনজাতি মানুষ আজ পাল্টা রুখে দাঁড়ানোয় কিছু এলাকায় পরিস্থিতি হিংসাত্মক চেহারা নেয়।

নাগরিকত্ব বিলের প্রতিবাদে আগরতলায় বিক্ষোভ। ছবি: পিটিআই।

নাগরিকত্ব বিলের প্রতিবাদে আগরতলায় বিক্ষোভ। ছবি: পিটিআই।

বাপি রায়চৌধুরী
আগরতলা শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৩:৫৬
Share: Save:

নাগরিকত্ব বিলকে কেন্দ্র করে আজ তৃতীয় দিনেও ত্রিপুরার জনজাতি অধ্যুষিত বিভিন্ন এলাকায় সংঘর্ষ, অবরোধ, দোকান-বাজারে আগুন, গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা অব্যাহত রইল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ও ত্রিপুরা স্টেট রাইফেলসের পাশাপাশি আসাম রাইফেলস, সিআরপিএফ ও সীমা সুরক্ষা বলকে নামানো হয়েছে। আজ জনজাতি বনাম অ-জনজাতি সংঘর্ষে ১০ জন জখম হয়েছেন।

গত দু’দিন ধরে হামলার শিকার অ-জনজাতি মানুষ আজ পাল্টা রুখে দাঁড়ানোয় কিছু এলাকায় পরিস্থিতি হিংসাত্মক চেহারা নেয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশকে লাঠি, কাঁদানে গ্যাস, এমনকি শূন্যে গুলিও ছুড়তে হয়েছে। একাধিক জায়গায় প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করেছে। মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব রাজ্যের সমস্ত রাজনৈতিক দল এবং শুভবুদ্ধি সম্পন্ন অংশের মানুষের কাছে শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছেন। দল-মত নির্বিশেষে শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারও। সিপিএমের জনজাতি সংগঠনের প্রস্তাবিত ১৪ ডিসেম্বরের মিছিলও স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।

ধলাই জেলার কমলপুরে সকাল থেকে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়। নাকাশিপাড়ায় বিল-বিরোধীরা পথ অবরোধে বসে। তাদের হাতে নিগৃহিত হন এক বাইক-আরোহী অ-জনজাতি যুবক। খবর রটে যেতেই পার্শ্ববর্তী হালহালি বাজারে অ-জনজাতি মানুষ প্রতিরোধের জন্য তৈরি হয়। তারা অবরোধস্থলে যাওয়ার চেষ্টা করে। পুলিশ ও টিএসআর তাদের হঠাতে লাঠি চালায়, কাঁদানে গ্যাসের সেল ছোড়ে। পরে পুলিশকে শূন্যে ১২ রাউন্ড গুলি চালাতে হয় বলে এসডিএম সুশান্ত সরকার জানান। সন্ধ্যায় শান্তি বৈঠক হয়েছে।

ধলাইয়ের আমবাসাতেও বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে স্থানীয় অ-জনজাতি ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষ বাদে। তাতে ৬ জন জখম হয়েছেন। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, বিক্ষোভকারীরা আমবাসা বাজারে দোকানপাট বন্ধ করতে হুমকি দেয়। এর পরেই আমবাসা বাজারের সহস্রাধিক ব্যবসায়ী মিলে বিক্ষোভ মিছিল করে।

পুলিশ জানিয়েছে, আমবাসা রেল স্টেশন সংলগ্ন আনন্দবাজারে বন্‌ধ সমর্থকরা তিনটি দোকানে লুটপাট চালায়। একটি দোকানে আগুন লাগিয়ে দেয়। উত্তেজিত ব্যবসায়ীরা দুই বিক্ষোভকারীকে মারধর করেন। তাতেই পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। দু’পক্ষই পরস্পরের দিকে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। জখম হন ৪ জন। পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রচুর পুলিশ ও টিএসআর বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বলে জানান আমবাসার এসডিএম।

খোয়াই জেলার অম্পি চৌমুহনিতে জনতা ও বিক্ষোভকারীরা মুখোমুখি চলে আসায় এলাকা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পুলিশ লাঠি চালিয়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে। তেলিয়ামুরার এসডিএম ভাস্বর ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, কিছু এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। আজ সকালে বিক্ষোভকারীদের হাত থেকে রেহাই পায়নি বিয়ে বাড়ির গাড়িও। তিনটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। এই ঘটনাকে ঘিরে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সংশ্লিষ্ট এডিসি এলাকায় ৪৮ ঘন্টার জন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। গোমতি জেলার অমরপুর, উত্তর ত্রিপুরা জেলার কাঞ্চনপুরেও উত্তেজনা রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE