দিল্লি-সহ দেশের নানা প্রান্তে ধারাবাহিক বিস্ফোরণের জন্য যে বিস্ফোরক ব্যবহার করার পরিকল্পনা করেছিলেন চিকিৎসক উমর-উন-নবি, মুজ়াম্মিল আহমেদেরা, সেগুলি কয়েক মাস ধরে সংগ্রহ করা হয়েছিল। আর বিস্ফোরক তৈরি সেই মশলা সংগ্রহ করা হয় হরিয়ানার নুহ্, ফরিদাবাদ, গুরুগ্রাম এবং উত্তরপ্রদেশের সহারনপুর থেকে। হিন্দুস্তান টাইম্স-এ প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, তদন্তকারীদের এক সূত্রের খবর, বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক তৈরির মশলা সংগ্রহে অনেকেই সাহায্য করেছিলেন। বেশ কয়েক মাস ধরে সেই মশলা এবং রাসায়নিক সংগ্রহ করা হয়েছিল।
দিল্লি বিস্ফোরণকাণ্ডের তদন্তের সঙ্গে জড়িত এক সূত্রের দাবি, সাত মাস ধরে ফরিদাবাদ মডিউল চালাচ্ছিলেন চিকিৎসক উমর। গত তিন-চার মাস ধরে নুহ্তে বিভিন্ন রাসায়নিকের দোকান, সারের দোকানে কৃষক এবং খনিকর্মীর পরিচয় দিয়ে অল্প অল্প পরিমাণে নাইট্রোজেন, ফসফরাস, পটাশিয়াম (যেগুলিকে একত্রে এনপিকে বলা হয়) কেনা হয়। তিন-চার মাসে ২৬ কুইন্টাল এনপিকে সংগ্রহ করেন উমরেরা। শুধু তা-ই নয়, ১০০০ কেজি অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটও কেনা হয়। তদন্তকারীদের ওই সূত্র বলছে, যে পরিমাণ বিস্ফোরক তৈরির মশলা উদ্ধার হয়েছে, তাতে মনে করা হচ্ছে, বিপুল সংখ্যায় বোমা তৈরির পরিকল্পনা ছিল উমরদের।
তদন্তকারীদের অন্য একটি সূত্রের দাবি, এই বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক তৈরির মশলা কেনার জন্য ২০ লক্ষ টাকা তোলা হয়েছিল। শুধু বিস্ফোরকের মশলাই নয়, ওই টাকা দিয়ে স্বয়ংক্রিয় রাইফেল, কার্তুজ কেনা হয় শ্রীনগর থেকে। আর এ কাজে সহযোগিতা করেছিলেন ‘উকাসা’ নামে এক হ্যান্ডলার এবং আরও কয়েক জন সন্দেহভাজন। ফরিদাবাদে কৃষিসারের তিন ডিলারকে চিহ্নিত করা হয়েছে। সন্দেহ করা হচ্ছে, তাঁরাই বিস্ফোরকের মশলা সরবরাহ করেছিলেন। সন্দেহভাজন ডিলারদের এক জন তদন্তকারীদের কাছে দাবি করেছেন, কৃষক পরিচয় দিয়ে কয়েক জন তাঁর কাছ থেকে সার কিনে নিয়ে গিয়েছিলেন। অনলাইনে টাকাও মেটানো হয় তাঁকে।
তদন্তকারীদের একটি সূত্রের দাবি, সন্দেহ করা হচ্ছে নুহ্ থেকেই বিস্ফোরক বানানোর বেশির ভাগ মশলা সরবরাহ হয়েছে। ওই সূত্র আরও জানিয়েছে, ধৃত চিকিৎসক মুজ়াম্মিল গনাই বেশ কয়েক বার কৃষিসারের দোকানে গিয়েছিলেন। পরে উমরকেও নিয়ে যান। কেউ যাতে সন্দেহ করতে না পারেন, তাই একবারে মশলা কেনা হয়নি। তিন-চার মাস ধরে সেগুলি সংগ্রহ করা হয়েছিল।