Advertisement
E-Paper

মোদীর সফরের আগেই উদ্ধার বিস্ফোরক

বছর দেড়েক আগে পটনার গাঁধী ময়দানে তাঁর সভাস্থল কেঁপে উঠেছিল ধারাবাহিক বিস্ফোরণে। এই মাসের ২৫ জুলাই ফের বিহারে আসছেন তিনি। তার ঠিক দু’সপ্তাহ আগে পটনা শহরের রামকৃষ্ণনগর থেকে উদ্ধার হল ক্যানবন্দি প্রায় একশো কেজি বিস্ফোরক।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০১৫ ০৩:০৯

বছর দেড়েক আগে পটনার গাঁধী ময়দানে তাঁর সভাস্থল কেঁপে উঠেছিল ধারাবাহিক বিস্ফোরণে। এই মাসের ২৫ জুলাই ফের বিহারে আসছেন তিনি। তার ঠিক দু’সপ্তাহ আগে পটনা শহরের রামকৃষ্ণনগর থেকে উদ্ধার হল ক্যানবন্দি প্রায় একশো কেজি বিস্ফোরক।

সেই সঙ্গে আলাদা পাঁচ কেজি অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট।

পার্থক্য একটাই। ২০১৩ সালের ২৭ অক্টোবর গাঁধী ময়দানের সেই সভা করতে আসার সময়ে নরেন্দ্র মোদী ছিলেন বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী। আজ তিনি ৭ রেসকোর্সের বাসিন্দা।

প্রধানমন্ত্রীর সফরের আগে এই বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক উদ্ধার হওয়ায় ঘুম উড়ে গিয়েছে পটনা পুলিশ ও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের। ১১টি দুধের ক্যানে ভরা ওই ১০০ কেজি গুঁড়ো বিস্ফোরক ঠিক কোন গোত্রের, তা এখনও স্পষ্ট নয়। বিস্ফোরকের নমুনা পরীক্ষা করে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের মতো শক্তিশালী বিস্ফোরক যে পাঁচ কেজি উদ্ধার হয়েছে, তা স্পষ্টই জানিয়ে দিচ্ছেন পুলিশকর্তারা। সেই সঙ্গে উদ্ধার হয়েছে ৭৫টি ডিটোনেটর, ৫৩টি টাইমার, ৭টি রিমোট কন্ট্রোল, বেশ কিছু সাউন্ড সেন্সর, লাইট সেন্সর ও ইউনিক সেন্সর। পটনা পুলিশই মেনে নিচ্ছে, এর আগে এত বেশি বিস্ফোরক এই শহরে কখনও উদ্ধার হয়নি। তাদের মতে, এই বিস্ফোরক ব্যবহার করে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ধ্বংসলীলা চালানো যেত। হতাহত, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ হতো ব্যাপক।

প্রধানমন্ত্রীর সফর ঘিরেই কি ছক কষা হচ্ছিল কোনও নাশকতার? এই বিষয়ে কিছু বলতে চাননি পুলিশকর্তারা। বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করতে আজ দিল্লি থেকে পটনা আসে ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ডস (এনএসজি)-এর একটি দল। গোটা বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর করা শুরু করেছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)-ও। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, গাঁধী ময়দানের মতো এই বিস্ফোরক মজুতের পিছনেও কাজ করেছে ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন (আইএম)-এর কোনও মডিউল।

কী ভাবে উদ্ধার হল এই বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক?

পুলিশ জানিয়েছে, সম্প্রতি রাঁচি পুলিশের হাতে এক সন্দেহভাজন জঙ্গি গ্রেফতার হওয়ার পরেই পটনায় বিস্ফোরক মজুত হওয়ার খবর পায় পুলিশ। পটনার এসএসপি বিকাশ বৈভবের নেতৃত্বে শুরু হয় তল্লাশি অভিযান। গত রাতে তল্লাশি চলছিল পটনা শহরের রামকৃষ্ণনগরের খেমনি চক এলাকায়। শেষ পর্যন্ত শিবনগর রোড নম্বর-৩ এলাকার একটি লজে ওই বিস্ফোরক মজুত রয়েছে বলে নিশ্চিত হয় পুলিশ।

সঙ্গে সঙ্গে খালি করে দেওয়া হয় গোটা এলাকা। ঘটনাস্থল থেকেই আটক করা হয় ৯ জনকে। বিস্ফোরকের সন্ধান মেলার পরেই গোটা বিষয়টি জানানো হয় দিল্লিতে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশ পেয়ে দিল্লি থেকে আসা এনএসজি-র বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞদের দলটি বিমানবন্দর থেকে সোজা ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। উদ্ধার হওয়া বিস্ফোরক ও যন্ত্রপাতি পরীক্ষা করে দেখছে তারা।

২০১৩-র ২৭ অক্টোবরের বিস্ফোরণের সময়ে গাঁধী ময়দানে মোদীর সভা-সহ পটনার বিভিন্ন এলাকায় আটটি বিস্ফোরণ হয়েছিল। মারা গিয়েছিলেন ছ’জন। আহত হয়েছিলেন অন্তত ৮০ জন। তখন বিহার পুলিশের বিরুদ্ধে ‘ঢিলেঢালা’ নিরাপত্তা ব্যবস্থার অভিযোগ উঠেছিল। প্রশ্ন উঠেছিল বিহার পুলিশের বম্ব স্কোয়াডের দক্ষতা নিয়েও। ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্তারাও। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই বিহার পুলিশের কর্তাদের একাংশ গত রাতে বিস্ফোরক উদ্ধারে নিজেদের তৎপরতার কথা তুলে ধরছেন। গোটা বিষয়টি নিয়ে শীর্ষ পুলিশকর্তাদের সঙ্গে আজ জরুরি বৈঠক করেছেন বিহার পুলিশের ডিজি।

Patna Narenddra Modi BJP Bihar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy