Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

স্ট্রেচার নেই, মৃত ছেলে কাঁধে নিয়ে দৌড়লেন বাবা

একটা স্ট্রেচারও মেলেনি। অগত্যা অসুস্থ ছেলেকে কাঁধে চাপিয়েই আধ ঘণ্টা ধরে হাসপাতালের এ ওয়ার্ড সে ওয়ার্ডে ছুটে বেড়িয়েছেন বাবা। তবু শেষ রক্ষা হয়নি। কার্যত বিনা চিকিৎসায় মারা গিয়েছে কানপুরের বাসিন্দা, বছর বারোর অংশ।সম্প্রতি ওড়িশার কালাহান্ডিতে শববাহীযানের অভাবে এ ভাবেই স্ত্রীর মৃতদেহ কাঁধে চাপিয়ে দীর্ঘ ১২ কিলোমিটার হেঁটেছিলেন এক দুঃস্থ ব্যক্তি। সংবাদমাধ্যমের দৌলতে ভাইরাল হয়েছিল সেই ছবি।

অংশের দেহ কাঁধে হাসপাতালে বাবা। ছবি: টুইটারের সৌজন্যে

অংশের দেহ কাঁধে হাসপাতালে বাবা। ছবি: টুইটারের সৌজন্যে

সংবাদ সংস্থা
কানপুর শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০১৬ ০৩:২৭
Share: Save:

একটা স্ট্রেচারও মেলেনি। অগত্যা অসুস্থ ছেলেকে কাঁধে চাপিয়েই আধ ঘণ্টা ধরে হাসপাতালের এ ওয়ার্ড সে ওয়ার্ডে ছুটে বেড়িয়েছেন বাবা। তবু শেষ রক্ষা হয়নি। কার্যত বিনা চিকিৎসায় মারা গিয়েছে কানপুরের বাসিন্দা, বছর বারোর অংশ।

সম্প্রতি ওড়িশার কালাহান্ডিতে শববাহীযানের অভাবে এ ভাবেই স্ত্রীর মৃতদেহ কাঁধে চাপিয়ে দীর্ঘ ১২ কিলোমিটার হেঁটেছিলেন এক দুঃস্থ ব্যক্তি। সংবাদমাধ্যমের দৌলতে ভাইরাল হয়েছিল সেই ছবি। ছেলের নিথর দেহ কাঁধে বাবার দৌড়ানোর ভিডিও এ বার ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। অভিযোগের তির উত্তরপ্রদেশের এক সরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি শুক্রবার ঘটলেও সামনে এসেছে সম্প্রতি।

‘‘ডাক্তারবাবু বলছিলেন, কিছু ক্ষণ আগে এলেও বাঁচানো যেত ছেলেটাকে’’ — ফোঁপাতে ফোঁপাতে বলছিলেন উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা সুশীল কুমার। যন্ত্রপাতি সারাইয়ের কাজ করেন তিনি। অভিযোগ, অসুস্থ ছেলেকে নিয়ে ‘কিছু ক্ষণ আগে’ই কানপুরের লালা লাজপত রাই হাসপাতলে পৌঁছন তিনি। জরুরিবিভাগে অন্তত আধ ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর তাঁকে শিশু বিভাগে যেতে বলা হয়। সুশীলবাবু জানান, ছেলে ক’দিন ধরে জ্বরে ভুগছিল। স্থানীয় চিকিৎসাকেন্দ্রে দু’দিন চিকিৎসার পর অবস্থা আরও খারাপ হলে সেখান থেকেই এই হাসপাতালে রেফার করা হয়। আর দেরি করেননি সুশীলবাবু। ছেলেকে নিয়ে কানপুরের সবচেয়ে বড় সরকারি হাসপাতালে পৌঁছন। তিনি বলেন, ‘‘জরুরি বিভাগের সামনে আধ ঘণ্টা অপেক্ষা করেছি। প্রায় অচেতন ছেলেকে কেউ ভাল করে ছুঁয়েও দেখেনি।’’ তবে দুর্ভোগ আরও বাকি ছিল। জরুরি বিভাগ থেকে শিশু বিভাগের দূরত্ব বড় জোর ২০০ মিটার। পায়ে হেঁটে আসতে সময় লাগে মাত্র ন’মিনিট। কিন্তু তখন একটা স্ট্রেচারও পাওয়া যায়নি হাসপাতালে! শেষে ছেলেকে কাঁধে নিয়ে বাবা যখন শিশু বিভাগে পৌঁছন তখন এলিয়ে পড়েছে অংশ। ডাক্তারবাবু জানালেন, ‘‘আর কিছু ক্ষণ আগে এলেই বাঁচানো যেত।’’

অবাক বাবার প্রশ্ন, জরুরি বিভাগ থেকে শিশু বিভাগে আসার ওই কটা মিনিটের মধ্যেই ছেলেটা মরে গেল? ছেলের এত গুরুতর অবস্থা দেখেও শুধু অন্য বিভাগে রেফার করেই দায়িত্ব ঝেড়ে ফেললেন চিকিৎসকেরা?

যদিও সমস্ত অভিযোগই অস্বীকার করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের প্রধান স্বাস্থ্য আধিকারিকের দাবি, সেখানে আনার অন্তত দুই, তিন ঘণ্টা আগেই ছেলেটির মৃত্যু হয়েছিল। উত্তরপ্রদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রবিদাস মেহরোত্রা অবশ্য বলেন, হাসপাতালের গাফিলতি থাকলে দোষী ছাড় পাবে না।

এই ঘটনায় আবার এক বার বেআব্রু হল সরকারি হাসপাতালের বেহাল দশা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Doctor Uttar Pradesh Kanpur Medical College
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE