নগদকাণ্ডে অভিযুক্ত বিচারপতি যশবন্ত বর্মার বিরুদ্ধে তদন্তের জন্য তিন সদস্যের দল গঠন করা হল সংসদের নিম্নকক্ষে। মঙ্গলবার, বাদল অধিবেশনের শেষ দিনে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার অনুমোদনে তিন সদস্যের প্যানেল গঠন করা হয়েছে। প্যানেলে রয়েছেন দুই বরিষ্ঠ বিচারপতি এবং এক আইনজীবী।
বাদল অধিবেশনের শেষ দিনে স্পিকার ঘোষণা করেছেন, নগদকাণ্ডের তদন্তে তিন সদস্যের দল গড়া হচ্ছে। প্যানেলে রয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অরবিন্দ কুমার, মাদ্রাজ হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি মণীন্দ্র মোহন এবং বর্ষীয়ান আইনজীবী বিভি আচার্য। লোকসভা কর্তৃক গঠিত কমিটি তদন্তের পর স্পিকারের কাছে এ বিষয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দেবে। স্পিকার পরে সংসদে তা উপস্থাপন করবেন। নগদকাণ্ডের যাবতীয় প্রমাণ খতিয়ে দেখার পাশাপাশি সাক্ষীদের জেরাও করতে পারবে ওই কমিটি। তদন্তে বিচারপতি দোষী সাব্যস্ত হলে প্যানেলের রিপোর্টটি সংসদের সংশ্লিষ্ট কক্ষে গৃহীত হবে। সব শেষে একটি প্রস্তাব ভোটাভুটির জন্য রাখা হবে। সংসদের অন্য কক্ষেও একই প্রক্রিয়ার পুনরাবৃত্তি হবে। তবে যেহেতু বিচারপতি বর্মার ইমপিচমেন্টের বিষয়ে শাসক এবং বিরোধী জোটের অবস্থান একই, তাই গোটা প্রক্রিয়াটি মসৃণ হবে বলেই আশা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:
উল্লেখ্য, এর আগে নগদকাণ্ডের তদন্তে আর একটি তিন সদস্যের দল গড়ে দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। গত মে মাসে ওই কমিটি মুখবন্ধ খামে রিপোর্টও জমা দেয়। ওই রিপোর্টকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন বিচারপতি বর্মা। কিন্তু গত সপ্তাহে বিচারপতির সেই আর্জি খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত এবং বিচারপতি এজি মসীহর বেঞ্চ জানিয়েছে, নিয়ম মেনেই তদন্ত কমিটি গড়া হয়েছিল। তার পর যে ভাবে তদন্তপ্রক্রিয়া চলেছিল, তাতে অবৈধ কিছুই ধরা পড়েনি। ফলে বিচারপতির আর্জি গ্রহণযোগ্য নয়।
চলতি বছরের দোলের দিন দিল্লি হাই কোর্টের তৎকালীন বিচারপতি বর্মার বাসভবন থেকে রাশি রাশি নোট উদ্ধার হয়েছিল। তা নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক। সম্প্রতি ওই বিচারপতিকে অপসারণ (ইমপিচমেন্ট)-এর তোড়জোড় শুরু হয়। বর্তমানে ইলাহাবাদ হাই কোর্টের বিচারপতির ইমপিচমেন্ট নিয়ে রাজ্যসভায় বিরোধী সাংসদদের আনা প্রস্তাবে সম্মতিও দেন উপরাষ্ট্রপতি তথা রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়। কিন্তু এর মাঝে আচমকা ধনখড় ইস্তফা দেওয়ায় সেই প্রক্রিয়া বাতিল হতে চলেছে। রাজ্যসভার নতুন চেয়ারম্যান দায়িত্ব না-নেওয়া পর্যন্ত ইমপিচমেন্ট প্রক্রিয়া শুরু করা যাবে না। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে লোকসভায় এই প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে।