মহারাষ্ট্রের নান্দেড়ের সরকারি হাসপাতাল। ছবি: সংগৃহীত।
২৪ ঘণ্টাও কাটেনি, তার মধ্যেই আবার মহারাষ্ট্রের নান্দেড়ের সেই সরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হল আরও সাত জনের। মৃতদের মধ্যে আবার চার জন নবজাতকও রয়েছে। রবিবার গভীর রাত থেকে সোমবার সকালের মধ্যে মৃত্যু হয়েছিল ২৪ জনের। সোমবার রাতেই আবার সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। এই নিয়ে গত ৪৮ ঘণ্টায় নান্দেড়ের এই সরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হল ৩১ জনের। যাদের মধ্যে বেশির ভাগই শিশু।
সোমবার নান্দেড়ের সরকারি হাসপাতালে ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল। যাদের মধ্যে ১২ জন শিশু ছিল। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এক সঙ্গে এত জনের মৃত্যুর ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই হুলস্থুল পড়ে গিয়েছে গোটা রাজ্যে। সেই মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা পরই মঙ্গলবার নতুন করে আরও সাত জনের মৃত্যু হওয়ায় হাসপাতালের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ আরও জোরদার হয়েছে।
যদিও হাসপাতালের ডিন চিকিৎসক শ্যামরাও ওয়াকোড়ে চিকিৎসার গাফিলতির বিষয়টি নস্যাৎ করেছেন। পাল্টা তাঁর দাবি, হাসপাতালে চিকিৎসক, ওষুধ এবং পরিষেবায় কোনও খামতি নেই। যাঁদের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের ঠিক মতোই চিকিৎসা করা হয়েছিল। কিন্তু তার পরেও সেই চিকিৎসায় সাড়া দেননি। ডিনের আরও দাবি, মৃতদের মধ্যে ১২ জন ছিলেন পূর্ণবয়স্ক। তাঁদের নানা রকম শারীরিক সমস্যা ছিল। তা ছাড়া তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগ রোগীই সাপে কাটার কারণে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।
সরকারের এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, কী ভাবে এত মৃত্যু হল তা খতিয়ে দেখার জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে মেডিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ-এর অধিকর্তা চিকিৎসক দিলীপ মাহিশেকর বলেন, “তিন সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হয়েছে। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার জন্য আমি নিজে হাসপাতালে গিয়েছি।”
ঘটনাচক্রে, ২৪ ঘণ্টায় ২৪ জনের মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসতেই হাসপাতালের নান্দেড় হাসপাতালের ডিনই দাবি করেছিলেন যে, অনেক কর্মীকে বদলি করা হয়েছে, ফলে হাসপাতালের কর্মী সংখ্যা কম। মাঝে মাঝে হাসপাতাল এত বেশি সংখ্যক রোগীর ভিড় হয় যে, তা সামলাতে হিমশিম খেতে হয়। তা ছাড়া, ওষুধের অভাবও রয়েছে হাসপাতালে। যদিও ডিনের সেই দাবি কয়েক ঘণ্টার মধ্যে হাসপাতালের তরফে একটি বিবৃতি জারি করে পাল্টা জানানো হয়, ওষুধ এবং তহবিলে অর্থের কোনও খামতি নেই। হাসপাতালে সমস্ত রকম জরুরি ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে। তা ছাড়া হাসপাতালের তহবিলে ১২ কোটি টাকাও রয়েছে। পূর্ণবয়স্ক যাঁদের মৃত্যু হয়েছে তাঁদের মধ্যে পাঁচ জন মহিলা এবং সাত জন পুরুষ। এ ছাড়াও ১২ সদ্যোজাতের মৃত্যু হয়েছে। যে পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তিদের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের মধ্যে চার জনের হার্টের অসুখ ছিল, এক জন বিষ খেয়েছিলেন, এক জন গ্যাসট্রিকে ভুগছিলেন, দু’জনের কিডনির সমস্যা ছিল, তিন জন দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ভর্তি হয়েছিলেন।
এই ঘটনাকে অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিণ্ডে। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, কেন এই ঘটনা ঘটল তার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত হবে। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি তুলেছেন। তিনি বলেন, “নান্দেড়ের ঘটনা অত্যন্ত বেদনাদায়ক এবং উদ্বেগজনক।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy