অনেকটা যেন সিনেমার চিত্রনাট্য। রক্ষীদের চোখে ধুলো দিয়ে হাফলং উপ-কারাগারের ৪ বন্দি পালিয়েছিল। টের পেয়েই তল্লাশি শুরু করেছিল পুলিশ। আজ সকালে দিহাঙ্গি এলাকায় ধরা পড়ল সকলেই।
এটা অবশ্য নতুন কোনও ঘটনা নয়। এর আগেও হাফলং উপ-কারাগার থেকে পালিয়েছিল ডিএইচডি জঙ্গিগোষ্ঠীর দুই নেতা। গ্রেনেড, গুলি ছুড়তে ছুড়তে তারা পালায়। সেটা ছিল ২০০৯ সালের ঘটনা। ২০১৪ সালে একই ভাবে ডিএইচডি (অ্যাকশন) জঙ্গিগোষ্ঠীর চেয়ারম্যান অ্যাকশন ডিমাসা ও বঙ্গিরচন খেলমা হাফলং উপ-কারাগারের ছাদ ভেঙে পালায়।
জেল সূত্রে খবর, গত রাতে পৌনে ২টো নাগাদ নাগাদ কমল হাসামসা, কৃষ্ণ মালাকার, কানাইয়া চৌধুরী ও সনাতন মুন্ডা নামের চার বন্দি উপ-কারাগারের শৌচালয়ের দেওয়াল ভেঙে পালিয়ে যায়। ভোর ৪টে নাগাদ জেল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি টের পান। খবর পেয়ে পুলিশ সুপার ধনজয় পরমেশ্বর ঘনাবত ও অতিরিক্ত জেলাশাসক ভাস্কর দত্ত দাস সেখানে পৌঁছন। ডিমা হাসাও জেলার সমস্ত পুলিশ চৌকিকে সতর্ক করা হয়। পুলিশ তাদের খোঁজ শুরু করে। পুলিশ জানায়, এ দিন সকাল ৮টা নাগাদ দিহাঙ্গি এলাকার থাইজোয়ারিতে ওই বন্দিদের হদিস মেলে। তাদের গ্রেফতার করে হাফলংয়ে নিয়ে আসা হয়। জেল থেকে কী ভাবে বন্দিরা পালাল, তা নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে অনুমান, উপ-কারাগারে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মীদের গাফিলতিতেই ওই কাণ্ড ঘটেছে। পুলিশ সূত্রে খবর, কমল হাসামসার বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগ ছিল। বাকিদের বিরুদ্ধে ডাকাতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
প্রশাসনিক সূত্রে খবর, হাফলং উপ-কারাগারে ৩৯ জন বন্দিকে রাখার পরিকাঠামো রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে সেখানে রয়েছে ৮৯ জন। অব্যবস্থার অভিযোগে গত কাল সেখানে সাজাপ্রাপ্ত কয়েদিরা অনশন করেছিল। সেই সুযোগেই ওই ৪ বন্দি পালায়। অতিরিক্ত জেলাশাসক ভাস্কর দত্ত দাস বলেন, ‘‘হাফলং উপ-কারাগারের পরিকাঠামো দুর্বল। নিরাপত্তার অনেক ফাঁক সেখানে রয়েছে।’’ এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি জানান, গত রাতে জেলের নিরাপত্তায় মোতায়েন রক্ষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হাফলং উপ-কারাগারের নিরাপত্তার দায়িত্ব রয়েছে অসম পুলিশ ব্যাটেলিয়ানের হাতে।
পুলিশ সুপার ধনঞ্জয় পরশুরাম ঘনাবত জানান, ওই ৪ বন্দি জেলের ১ নম্বর ঘরে ছিল। ৫-৬ দিন ধরে তারা জেল থেকে পালানোর ছক কষে। অন্য দিকে, ওই ঘটনার তদন্ত করতে এডিজিপি জ্যোতির্ময় চক্রবর্তী ও আইজিপি অনুরাগ অগ্রবাল হাফলং উপ-কারাগার পরিদর্শন করেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy