ছত্তীসগঢ়ের বস্তার ডিভিশনে সরকারের আহ্বানে সাড়া দিয়ে আবার আত্মসমর্পণের পালা কোণঠাসা মাওবাদী জঙ্গিদের। এ বার বিজাপুর জেলায়। পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার ১২ মহিলা-সহ আত্মসমর্পণকারী ৪১ জন মাওবাদীর মধ্যে ৩২ জনের মাথার মোট দাম ছিল ১ কোটি ১৯ লক্ষ টাকা।
বিজাপুরের পুলিশ সুপার জিতেন্দ্রকুমার যাদব জানিয়েছেন, আত্মসমর্পণকারীদের মধ্যে পান্ড্রু হাপকা ওরফে মোহন, বান্দি হাপকা, লক্কু কোরসা, বদরু পুনেম, সুখরাম হেমলা, মঞ্জুলা হেমলা, মঙ্গলি মাডভী ওরফে শান্তি, জয়রাম কাদিয়াম এবং চাঁদোয়ালির প্রত্যেকের মাথার উপর ৮ লক্ষ টাকা করে পুরস্কার ঘোষিত ছিল। এঁরা প্রত্যেকেই নিষিদ্ধ সংগঠন সিপিআই (মাওবাদী)-র সশস্ত্র শাখা পিএলজিএ (পিপলস লিবারেশন গেরিলা আর্মি)-র বিভিন্ন ব্যাটালিয়ন, কোম্পানি এবং মিলিশিয়া দলমের সদস্য।
আরও পড়ুন:
এ ছাড়া আত্মসমর্পণকারী তিন জন মাওবাদীর উপর ৫ লক্ষ করে, ১২ জনের উপর ২ লক্ষ করে এবং ৮ জন ক্যাডারের মাথার উপর ১ লক্ষ টাকা করে পুরস্কার ঘোষণা করা ছিল। আত্মসমর্পণকারী প্রত্যেককেই এককালীন ৫০ হাজার টাকা করে অর্থসাহায্য দেওয়া হয়েছে। মাওবাদী নেতা-কর্মীদের মূল স্রোতে ফেরাতে গত বছর ছত্তীসগঢ় পুলিশ ‘নিয়া নার নিয়া পুলিশ’ (আমাদের গ্রাম, আমাদের পুলিশ) প্রচার কর্মসূচি শুরু করেছিল। তার আগে ২০২০ সালের জুনে শুরু হয়েছিল ‘লোন ভারাতু’ (গোন্ড ভাষায় যার অর্থ ‘তোমার বাড়ি ফিরে যাও’) পুনর্বাসন কর্মসূচি।
ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী বিষ্ণু দেও সাই গত মার্চে ‘নকশাল আত্মসমর্পণ এবং আক্রান্তদের পুনর্বাসন নীতি ২০২৫’ ঘোষণা করেছিলেন। আত্মসমর্পণকারী মাওবাদীদের পুনর্বাসন, চাকরি, আর্থিক সহায়তা এবং আইনি সুরক্ষা প্রদান করার মতো নানা বিষয় রয়েছে ওই প্রকল্পে। পাশাপাশি রয়েছে, মাওবাদীদের সমাজের মূল স্রোতে ফেরাতে বস্তার পুলিশ রেঞ্জের ‘পুনা মারঘাম’ (সামাজিক পুনঃএকত্রীকরণ অভিযান)। জিতেন্দ্রকুমারের দাবি, যৌথবাহিনীর ধারাবাহিক অভিযানের পাশাপাশি আত্মসমর্পণের এই হিড়িকের অন্যতম কারণ হল পুনর্বাসন কর্মসূচি।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরে মাওবাদী সাধারণ সম্পাদক নাম্বালা কেশব রাও ওরফে বাসবরাজু ওরফে গগন্না, পলিটব্যুরো সদস্য রামচন্দ্র রেড্ডি ওরফে চলপতি, তাঁর স্ত্রী রবি ভেঙ্কাটা লক্ষ্মী চৈতন্য ওরফে অরুণা, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নরসিংহচলম ওরফে সুধাকর, পিএলজিএ-র শীর্ষ কমান্ডার মাধভী হিডমার মতো শীর্ষ নেতা-নেত্রীরা বস্তারের জঙ্গলে নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন। জীবিত নেতাদের মধ্যে এখনও সক্রিয় রয়েছেন নতুন মাওবাদী সাধারণ সম্পাদক ‘দলিত মুখ’ হিসাবে পরিচিত দেবুজি।