চারধাম যাত্রার শুরুর প্রথম মাসেই ৮৩ জন পুণ্যার্থীর মৃত্যু হয়েছে। যাঁদের মধ্যে বেশির ভাগই হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। আবার কারও কারও মৃত্যু হয়েছে ‘হাই অলটিটিউড সিকনেস’-এর কারণে। স্থানীয় সূত্রে খবর, কেদারনাথে যাওয়ার পথে পুণ্যার্থীর মৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। ৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে এই যাত্রাপথে। বদরীনাথে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয়েছে ১৭ জনের, গঙ্গোত্রীতে ১৫ এবং যমুনোত্রীতে ১৩ জন পুণ্যার্থীর মৃত্যু হয়েছে।
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, অতিরিক্ত উচ্চতার কারণে কম অক্সিজেন, দীর্ঘ পাহাড়ি পথ চলার কারণে আচমকা হৃদ্যন্ত্রে সমস্যা ইত্যাদি কারণে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। কারও কারও সে ক্ষেত্রে মৃত্যুও হচ্ছে। উত্তরাখণ্ড প্রশাসন সূত্রে খবর, ৫ জুন পর্যন্ত ২২ লক্ষের বেশি পুণ্যার্থী চারধাম দর্শন করেছেন। শুধু ৫ জুনেই ৭৮ হাজার পুণ্যার্থী চারধাম দর্শন করেছেন। ওই দিন কেদারনাথ দর্শন করেন ২৪ হাজার ৮৭১ জন। বদরীনাথে ২৩ হাজার ৭২৯ জন, গঙ্গোত্রীতে ১৩ হাজার ১১৭, যমুনোত্রীতে ৯ হাজার ৮৮০ এবং হেমকুণ্ড সাহিবে ৭ হাজার ১৮৯ জন পুণ্যার্থী গিয়েছেন।
প্রশাসন সূত্রে খবর, এ বছর চারধাম যাত্রায় এখনও পর্যন্ত যত পুণ্যার্থী প্রয়াত হয়েছেন, বেশির ভাগেরই মৃত্যু স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কারণে। আবার অনেকে দুর্ঘটনাতেও মারা গিয়েছেন। রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব আর রাজেশ কুমার বলেন, ‘‘বড় সংখ্যক পুণ্যার্থীকে চিকিৎসা শিবিরগুলিতে মৃত অবস্থাতেই নিয়ে আসা হয়েছে। তবে গত বছরে এই সময়ের মধ্যে যত মৃত্যু হয়েছিল, তার তুলনায় এ বছর সেই সংখ্যাটা কম।’’ স্বাস্থ্যসচিব আরও জানিয়েছেন, যাত্রা শুরুর প্রথম মাসে ৪ লক্ষ ৩০ হাজার পুণ্যার্থীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছিল। গোটা যাত্রাপথে চিকিৎসার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করা হয়েছে। ৬৯ জন মেডিক্যাল অফিসার, ১২১ জন নার্স, ২৬ ফার্মাসিস্ট, ৩০৯টি অক্সিজেন-সজ্জিত শয্যা, ৬টি আইসিইউ শয্যা, অ্যাম্বুল্যান্স, ব্লাডব্যাঙ্কেরও ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
গত ৩০ এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে চারধাম যাত্রা। ওই দিন গঙ্গোত্রী এবং যমুনোত্রী খুলে দেওয়া হয় পুণ্যার্থীদের জন্য। গত ২ মে কেদারনাথের দরজা খোলা হয় এবং বদরীনাথ ধাম খুলে দেওয়া হয় ৪ মে। এপ্রিল থেকে জুনের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে ৮৩ জন পুণ্যার্থীর মৃত্যু হয়েছে।