এমন জায়গায় গায়েব করে দেওয়া হবে যে, কেউ আর খুঁজেই পাবে না। মধ্যপ্রদেশের ইনদওরের দম্পতি নিখোঁজ হওয়ার পরেই এ রকম হুমকিবার্তা পেয়েছিলেন তাঁদের এক আত্মীয়। আর এই হুমকিবার্তাকে কেন্দ্র করেই রহস্য ঘনাচ্ছে। মে মাসের শেষের দিকে স্ত্রী সোনমকে নিয়ে মেঘালয়ে মধুচন্দ্রিমায় গিয়েছিলেন ইনদওরের যুবক রাজা রঘুবংশী। তাঁরা পূর্ব খাসি জেলার নোংরিয়াত গ্রামে একটি হোমস্টেতে উঠেছিলেন।
গত ২৩ মে তাঁরা চেরাপুঞ্জি যান। সেখানে ওসারা পাহাড়ে গিয়েছিলেন। সেখান থেকেই নিখোঁজ হয়ে যান নবদম্পতি। নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার আগে শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেছিলেন সোনম। ফোনে তিনি জানিয়েছিলেন, পাহাড়ে উঠছেন। এখন বেশি কথা বলতে পারবেন না। শাশুড়ি সোনমকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, তাঁরা তখন কোথায়। তার উত্তরে সোনম জানিয়েছিলেন, তাঁরা তখন পাহাড়ের গভীর জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন। খাড়াই পাহাড়। রাজাকে (স্বামী) অনুরোধ করেছিলেন ফিরে যাওয়ার জন্য। কিন্তু শুনতে চাইছেন না। তার পরই সোমন বলেন, ‘‘খুব ক্লান্ত লাগছে। শ্বাসকষ্ট হচ্ছে।’’
আরও পড়ুন:
পুলিশ সূত্রে খবর, রাজার সঙ্গেও তাঁরা মায়ের কথা হয়েছিল। তখন তিনি জানিয়েছিলেন, পাহাড়ের চূড়ায় পৌঁছে গিয়েছেন। ফল খাচ্ছেন। তাঁর মা তখন জিজ্ঞাসা করেন, কেন ভিডিয়ো কল করছেন না! রাজা তখন উত্তর দেন, ইন্টারনেট সংযোগ না থাকায় সমস্যা হচ্ছে। পরিবারের সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজা এবং তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে ওটাই ছিল শেষ কথা। তার পর থেকে আর যোগাযোগ করা যায়নি। ২৩ মে থেকেই নিখোঁজ হয়ে যান রাজা এবং সোনম। গত ২ মে রাজার দেহ হোমস্টে থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে একটি গভীর খাদ থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। সেখান থেকে কিছুটা দূরেই তাঁদের ভাড়া করা স্কুটারটিও মেলে। রাজার দেহ উদ্ধার হলেও, সোনমের এখনও কোনও হদিস মেলেনি। মেঘালয় পুলিশের পাশাপাশি জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীও সোনমের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে। সন্দেহ করা হচ্ছে, সোনমকে অপহরণ করা হয়েছে।
রাজার ভাইয়ের দাবি, স্থানীয়দের একাংশ তাঁদের জানিয়েছেন, যে এলাকা থেকে রাজা এবং সোনম নিখোঁজ হয়ে যান, সেখানে আগেও এ রকম যুগল এবং নবদম্পতির গায়েব হয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তবে সোনমের ভাইয়ের দাবি এই ঘটনার রহস্য আরও বাড়িয়েছে। তাঁর দাবি, দিন কয়েক আগেই হুমকি ফোন পেয়েছিলেন। তাঁদের বলা হয়, ‘‘মেঘালয়ের বদনাম করছ তোমরা। এমন ভাবে গায়েব করব যে, প্রশাসনও খুঁজে পাবে না।’’ রাজার ভাই সিবিআই তদন্তের দাবি করেছেন। পাশাপাশি, সোনমের খবর দিতে পারলে ৫ লক্ষ টাকা পুরস্কারেরও ঘোষণা করেছে রাজার পরিবার।