ফুটপাথে মায়ের পাশে শুয়ে থাকা শিশুকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল উত্তরপ্রদেশের লখনউয়ে। সেই ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পুলিশের সঙ্গে ‘এনকাউন্টারে’ মৃত্যু হল অভিযুক্তের।
পুলিশ সূত্রে খবর, বুধবার রাতে আলমবাগ মেট্রো স্টেশনের কাছে একটি সেতুর নীচে ফুটপাথে মায়ের সঙ্গে শুয়ে ছিল এক শিশু। গভীর রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় শিশুটিকে তুলে নিয়ে যায় এক দুষ্কৃতী। সন্তানকে পাশে দেখতে না পেয়ে টহলরত পুলিশদের বিষয়টি জানান শিশুটির মা। এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে পুলিশ। তখন তারা দেখে, এক দুষ্কৃতী স্কুটারে করে শিশুটিকে তুলে নিয়ে পালাচ্ছে।
তার পরই অভিযুক্তের খোঁজে শুরু হয় তল্লাশি। ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (সেন্ট্রাল জ়োন) আশিস শ্রীবাস্তবের নেতৃত্বে পুলিশের কয়েকটি দল গঠন করে অভিযুক্তের তল্লাশি শুরু হয়। অভিযুক্তের খবর দিলে বা তাঁকে ধরিয়ে দিতে পারলে ১ লক্ষ টাকা পুরস্কারও ঘোষণা করা হয় পুলিশের তরফে। স্কুটারে রেজিস্ট্রেশন নম্বর পরীক্ষা করে ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে শুক্রবার ভোরে দেবী খেড়া এলাকায় অভিযুক্তের খোঁজ পায় পুলিশ।
ডিসিপি শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, অভিযুক্তকে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়। কিন্তু অভিযোগ, তাঁর কাছে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালাতে থাকেন অভিযুক্ত। পাল্টা গুলি চালায় পুলিশও। সেই সময় গুলিবিদ্ধ হন অভিযুক্ত। তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। পুলিশ জানিয়েছে, অপহৃত শিশুটির যৌনাঙ্গে আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। তার অবস্থা সঙ্কটজনক। হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, শিশুটির অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়েছে। তার প্লাস্টিক সার্জারি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ডিসিপি জানিয়েছেন, পকসো আইনে একটি মামলা রুজু করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, নির্যাতিতার পরিবার তাদের জানিয়েছে, বুধবার রাতে কাজ থেকে ফিরে খাওয়াদাওয়া সেরে তারা ফুটপাতে শুয়ে ছিল। গভীর রাতে এক ব্যক্তি এসে শিশুটিকে তুলে নিয়ে যান। ঘটনাটি নজরে পড়েছিল কয়েক মিটার দূরে শুয়ে থাকা এক প্রতিবন্ধী ব্যক্তির। তিনিই বিষয়টি জানান। তার পরই টহলরত পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। তল্লাশিতে নেমে আলমবাগ সেতু থেকে কয়েকশো মিটার দূরে শিশুটিকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকেরা জানান, শিশুটিকে ধর্ষণ করা হয়েছে। তার পরই পুলিশের কয়েকটি দল অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি শুরু করে। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে এবং স্কুটারের নম্বরপ্লেটের সূত্র ধরে শুক্রবার ভোরে দেবী খেড়া এলাকায় অভিযুক্তের খোঁজ পায় পুলিশ। সেখানেই পুলিশের সঙ্গে ‘এনকাউন্টারে’ মৃত্যু হয় ‘ধর্ষকের’।
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত ওই এলাকার এক দুষ্কৃতী। তার নামে শহরের বিভিন্ন থানায় অপরাধের মামলা রয়েছে।
গত ২৮ মে লখনউয়ের মাদেগঞ্জে এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। সেই ঘটনায় অভিযুক্তকে ধরতে গেলে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালান। পাল্টা গুলি চালায় পুলিশও। শনিবারের সেই ঘটনার এক সপ্তাহের মধ্যেই আবার ‘এনকাউন্টার’ লখনউয়ে।