Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

কাশ্মীর শুনানি হতে পারে পাঁচ সদস্যের বেঞ্চে

৩৫এ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাজ্যে কে ‘স্থায়ী বাসিন্দা’ হবেন, তা স্থির করতে পারে জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভা। স্থায়ী বাসিন্দা ছাড়া অন্য কেউ জম্মু-কাশ্মীরে জমি কেনা, রাজ্য সরকারে চাকরি বা রাজ্য সরকার পরিচালিত কোনও পেশাদারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যোগ দিতে পারেন না। জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা সংক্রান্ত ৩৭০ অনুচ্ছেদের মতো এই বিষয়টির বিরুদ্ধেও বহু দিন ধরে সরব সঙ্ঘ পরিবার।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি ও শ্রীনগর শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

জম্মু-কাশ্মীরের বাসিন্দাদের বিশেষ অধিকার সংক্রান্ত সংবিধানের ৩৫এ অনুচ্ছেদ নিয়ে সাংবিধানিক বেঞ্চে শুনানি হতে পারে বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। নরেন্দ্র মোদী সরকার এই বিষয়ে স্পষ্ট অবস্থান না নেওয়ায় ক্ষোভ বাড়ছে কাশ্মীরের রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে।

৩৫এ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাজ্যে কে ‘স্থায়ী বাসিন্দা’ হবেন, তা স্থির করতে পারে জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভা। স্থায়ী বাসিন্দা ছাড়া অন্য কেউ জম্মু-কাশ্মীরে জমি কেনা, রাজ্য সরকারে চাকরি বা রাজ্য সরকার পরিচালিত কোনও পেশাদারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যোগ দিতে পারেন না। জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা সংক্রান্ত ৩৭০ অনুচ্ছেদের মতো এই বিষয়টির বিরুদ্ধেও বহু দিন ধরে সরব সঙ্ঘ পরিবার। এই অনুচ্ছেদ খারিজ হলে কাশ্মীরের বাসিন্দাদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক ভারসাম্য বদলানো সম্ভব বলে মনে করে সঙ্ঘের একাংশ। এই দাবির প্রবল বিরোধী বিচ্ছিন্নতাবাদী-সহ কাশ্মীরের সব ধারার রাজনীতিকেরাই।

সম্প্রতি এই ৩৫এ অনুচ্ছেদের বিরুদ্ধে দু’টি আর্জির শুনানি হচ্ছে সুপ্রিম কোর্টে। শুনানির সময়ে ৩৫এ ধারার পক্ষে কোনও পাল্টা হলফনামা দেয়নি মোদী সরকার। উল্টে অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল জানান, এ নিয়ে দেশে ‘বৃহত্তর বিতর্ক’ চাইছে কেন্দ্র। এর পরেই যারপরনাই চটেছে শ্রীনগরে বিজেপির জোটসঙ্গী পিডিপি ও বিরোধী ন্যাশনাল কনফারেন্স। বিচ্ছিন্নতাবাদীরাও ৩৫এ ধারা জারি রাখার দাবিতে হরতাল ডেকেছিল। যা দেখে বিজেপির এক নেতা মন্তব্য করেছেন, ‘‘যাক অন্তত এক বার ভারতীয় সংবিধানের একটি ধারা নিয়ে হরতাল ডেকেছে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা।’’

ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আবদুল্লার মতে, বিচ্ছিন্নতাবাদীদের আন্দোলনের অর্থ হয় না। কারণ, তারা ভারতীয় সংবিধান মানে না। কিন্তু তাঁর বক্তব্য, ‘‘জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা ওই রাজ্যের ভারতভুক্তির সময়েই স্থির হয়েছিল। ফলে তা নিয়ে বিতর্ক হলে জম্মু-কাশ্মীরের ভারতভুক্তিই বিতর্কের মুখে পড়বে।’’

প্রায় একই সুর মুখ্যমন্ত্রী ও পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতিরও। তাঁর মতে, ‘‘৩৫এ অনুচ্ছেদ নিয়ে কারা কেন বিতর্ক চাইছে আমি জানি না। তবে এর ফলে যাঁরা শত ঝুঁকি নিয়েও কাশ্মীরে ভারতের জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে ঘোরেন তাঁদের পক্ষে পরিস্থিতি আরও কঠিন হবে।’’ স্বাধীনতা দিবসের আগে রাজ্যবাসীর প্রতি বার্তাতেও রাজ্যের বিশেষ সাংবিধানিক মর্যাদার উপরে জোর দিয়েছেন মেহবুবা। জানিয়েছেন, এই বিশেষ মর্যাদার উপরেই বাকি দেশের সঙ্গে কাশ্মীরের সম্পর্ক নির্ভরশীল। এই সম্পর্ককে রক্ষা করা ‘সকলের’ দায়িত্ব। এ ভাবে তিনি মোদী সরকারকেই বার্তা দিতে চেয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

সুপ্রিম কোর্টে জম্মু-কাশ্মীর সরকারের আইনজীবী জানান, ৩৫এ অনুচ্ছেদের বৈধতা নিয়ে হাইকোর্ট ২০০২ সালে রায় দিয়েছে। বিচারপতি দীপক মিশ্র ও বিচারপতি এ এম খানউইলকরের বেঞ্চ জানিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে চলতি মাসেই তিন বিচারপতির বেঞ্চে শুনানি হবে। প্রয়োজনে সেই বেঞ্চ মামলাটি পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চে পাঠাতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE