Advertisement
E-Paper

‘এই বুঝি ডাকবে!’ মালিকের মৃত্যুর পরেও মর্গের বাইরে চার মাস অপেক্ষা পোষ্য কুকুরের

হাসপাতালের এত জায়গা থাকতে কুকুরটি কেন ওই মর্গের সামনের অংশটিকেই বেছে নিয়েছে? এর নেপথ্যে এক করুণ কাহিনি শুনিয়েছেন হাসপাতালেরই এক কর্মী।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২৩ ১৩:৫১
কেরলের কান্নুরের হাসপাতালের মর্গের সামনে দাঁড়িয়ে সেই কুকুর। ছবি: সংগৃহীত।

কেরলের কান্নুরের হাসপাতালের মর্গের সামনে দাঁড়িয়ে সেই কুকুর। ছবি: সংগৃহীত।

হাসপাতালের মর্গের সামনে বসে রয়েছে একটি কুকুর। দৃষ্টি মর্গের সেই ঘরের দিকে। মাঝেমধ্যেই উঠছে, এক বার মর্গের দরজার সামনে যাচ্ছে, আবার ফিরে এসে কয়েক হাত দূরে বসছে। কিন্তু নজর সেই মর্গের দিকেই। গত চার মাস ধরে সেই কুকুরটির ‘ঘরবাড়ি’ যেন ওই হাসপাতাল। নিত্য দিন একটি কুকুর মর্গের সামনে কেন যায়, কেনই বা ওই মর্গের দরজার দিকে তাকিয়ে থাকে তা নিয়ে হাসপাতালে আসা লোকজনের মধ্যে কৌতূহলও কম নয়।

হাসপাতালের এত জায়গা থাকতে কুকুরটি কেন ওই মর্গের সামনের অংশটিকেই বেছে নিয়েছে? এর নেপথ্যে এক করুণ কাহিনি শুনিয়েছেন হাসপাতালেরই এক কর্মী। ঘটনাটি কেরলের কান্নুরের জেলা হাসপাতালের। ওই হাসপাতালের কর্মী রাজেশ কুমার এক সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তিনিই প্রথম বিষয়টি লক্ষ করেছিলেন মাস চারেক আগে। মর্গের সামনে কুকুরটি কেন বসে থাকে রোজ, কৌতূহল হয়েছিল তা জানার জন্য।

তাঁর কথায়, “হাসপাতাল চত্বরে মাঝেমধ্যেই এমন দু’একটা কুকুর দেখা যায়। তাই প্রথম প্রথম বিষয়টি নিয়ে অত মাথা ঘামাইনি। কিন্তু বিষয়টি নজরে পড়তে শুরু করে যখন দেখি কুকুরটি রোজই ওই মর্গের সামনে বসে থাকছে। কৌতূহল হওয়ায় হাসপাতালে নিত্য যাতায়াত করে এমন বেশ কয়েক জনের কাছ থেকে খোঁজ নিলাম। তার পর যা শুনলাম, তা শুনে মন ভারাক্রান্ত হয়ে গিয়েছিল।”

রাজেশ জানিয়েছেন, খোঁজ নিয়ে তিনি জানতে পারেন যে, মাস চারেক আগে এক ব্যক্তি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তাঁর সঙ্গেই হাসপাতালে এসেছিল কুকুরটি। সেটি তাঁর পোষ্য। যত দিন ভর্তি ছিলেন ওই ব্যক্তি, তত দিন হাসপাতালেই ঘোরাঘুরি করেছে কুকুরটি। কিন্তু ভর্তি হওয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই মৃত্যু হয়েছিল ওই ব্যক্তির। তাঁর দেহ মর্গে রাখা হয়েছিল। সেখানে নিয়ে যাওয়ার সময় কুকুরটিও সঙ্গে সঙ্গে গিয়েছিল। মালিক ওই ঘর থেকে কখন বেরোবে, তাঁর অপেক্ষায় ঠায় বসে থাকত মর্গের দরজার সামনে। এ ভাবে বেশ কয়েক দিন কেটে গিয়েছিল। হাসপাতালে আসা লোকজন কুকুরটিকে বিস্কুট-সহ নানা খাবার দিত, কিন্তু কিছুতেই সেগুলি সে খেত না।

রাজেশ আরও জানিয়েছেন, তবে ধীরে ধীরে লোকজনের দেওয়া খাবার খাওয়া শুরু করে কুকুরটি। কিন্তু মর্গের সামনে থেকে সে কিছুতেই সরতে চাইত না। ওই ব্যক্তির দেহ মর্গের অন্য দরজা দিয়ে নিয়ে চলে গিয়েছে তাঁর আত্মীয়রা। ‘মালিক আসবে’ এই অপেক্ষায় দিনের পর দিন অপেক্ষা করে চলেছে। এখন দিনের বেলায় এ দিক-ও দিক ঘুরে এসে রাতে ওই মর্গের সামনেই শুয়ে থাকে কুকুরটি। হাসপাতালের এক চিকিৎসক মায়া গোপালকৃষ্ণণ আবার কুকুরটির নাম রেখেছেন রামু। কান্নুরের রামুর এই ঘটনা ‘হাচিকো’র স্মৃতিকে উস্কে দিয়েছে। মালিকের মৃত্যুর পরেও যে পোষ্য কুকুর তাঁর আসার অপেক্ষায় জাপানের টোকিয়োর শিবুয়া স্টেশনে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকত।

Kerala Kannur Dog Morgue
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy