সবেগে: গাড়ির উইন্ডস্ক্রিন ভেদ করে সোজা চালকের পাশের আসনে ঢুকে পড়ে ঘোড়াটি। ছবি: টুইটারের সৌজন্যে
পাগলা ঘোড়া খেপেছে...।
ছড়ার সেই পঙ্ক্তি বাস্তবে মিলে যায়, তবে কী হাল হতে পারে, তার সাক্ষী রইল জয়পুর। মরুভূমির দেশে গরম এখনও পুরোপুরি থাবা বসায়নি। তবে জুনের প্রথম সপ্তাহেই তেতেপুড়ে ওঠা রাজস্থানে সুস্থ ভাবে টিকে থাকা দায়। গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা সকলেরই। এসি, কুলার, লস্যি আর হাজারো ঠান্ডা পানীয়ের আয়োজনে চাপ সামলানোর জোর চেষ্টা চলছে। পশুদের জীবনে সেই সুযোগ নেই। তাই প্রখর তাপ সহ্য না করতে পেরে তারা যে কী করতে পারে, তা দেখলেন জয়পুরের মানুষ।
রবিবার পারদ চড়েছিল ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। আর সেই গরমে পাগল হয়ে ছুটতে শুরু করেছিল একটা ঘোড়া। শেষ পর্যন্ত চলন্ত গাড়ির সামনের কাচ ভেঙে দিয়ে একেবারে গাড়ির ভিতরে ঢুকে পড়ে সে। চলন্ত গাড়িতে এ ভাবে আস্ত একটা ঘোড়া ঢুকে পড়ায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। পরে বন দফতরের সহায়তায় কোনও ক্রমে আহত ঘোড়া ও গাড়ির চালককে উদ্ধার করা হয়েছে।
ঘোড়াটি এক টাঙ্গাওয়ালার। রবিবার দুপুরে শহরের হাসানপুরা এলাকায় রাস্তার পাশে টাঙ্গা দাঁড় করিয়ে জিরিয়ে নিচ্ছিলেন তিনি। ঘোড়াটিকে বেঁধে রেখেছিলেন পাশে। আর ঘোড়ার মুখে বেঁধে দিয়েছিলেন খাবারের থলে। ভেবেছিলেন, বিশ্রাম নিতে নিতেই খাওয়ার পর্ব চুকিয়ে নিতে পারবে তাঁর ঘোড়াটি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, খাবারের থলে কোনও ভাবে পশুটির চোখ বন্ধ করে দিয়েছিল। সম্ভবত তার চোখেও ঢুকে গিয়েছিল খাবারের কণা। একে প্রবল গরম তার উপরে এমন অবস্থায় লাফাতে থাকে ঘোড়াটি। পাগলের মতো ছুটে বেরিয়ে যেতে চায়। এক সময় সফলও হয়। দড়ি ছিঁড়ে ছিটকে বেরিয়ে গিয়ে প্রবল বেগে ঘোড়াটি পৌঁছে যায় রাস্তার মাঝখানে।
চারপাশে তখন শোরগোল পড়ে গিয়েছে। তীব্র বেগে ছুটে আসা ঘোড়ার ধাক্কা থেকে বাঁচতে প্রাণভয়ে ছুটতে থাকে পথচারীরা। থামানোর উপায় না দেখে পশুটির উপর জল ঢেলে দেন কেউ। কিন্তু সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়। কোনও কিছু তোয়াক্কা না করে এক রাস্তা থেকে অন্য রাস্তায় ছুটতে থাকে ঘোড়াটি। সিভিল লাইন্সের জেকব রোডে এসে পর পর দু’টো স্কুটারকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় পাগলা ঘোড়া। ছুটতে থাকে আবার। আচমকাই সামনে এসে পড়ে একটা গাড়ি। মুখোমুখি ধাক্কা। কেউ কিছু বোঝার আগেই গাড়ির সামনে উইন্ডস্ক্রিন ভেদ করে চালকের পাশের আসনে ঢুকে পড়ে ঘোড়াটি।
আরও পড়ুন: বিয়ের সন্ধ্যায় নাচতে নাচতে মালাবদলের আগেই মারা গেলেন বর!
গাড়ির মালিক পঙ্কজ জোশী ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থার কর্মী। নিজেই গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছিলেন রেল স্টেশনে। সে দিন হয়তো এমন ঘটনা তাঁর সঙ্গে ঘটতোও না। কারণ আত্মীয়কে নিয়ে আসতে অনেক আগেই স্টেশনে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়ে আবিষ্কার করেন, মানিব্যাগ আনতে ভুলে গিয়েছেন। ফের বাড়ি ঘুরে পথে বের হতেই বিপত্তি।
তবে শেষ পর্যন্ত প্রাণে বেঁচেছেন— সে কথা ভেবেই খুশি পঙ্কজ। আর ঘোড়াটি? গাড়ির দরজা খুলে কোনও ক্রমে বের করা হয়েছে তাকে। গাড়ি থেকে বের করার পরে একেবারে শান্ত ছিল সে। তবে আহত ঘোড়াটির আঘাত ততটা গুরুতর নয়। তাকে সুস্থ করতে এখন লড়ছেন চিকিৎসকরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy