Advertisement
০৭ মে ২০২৪
Crime against Woman

ক্যামেরার সামনে বিবস্ত্র করা হল! লুট হল টাকাও, সিবিআই সাজা প্রতারকের ভিডিয়ো কল চলল ৩৬ ঘণ্টা!

গত কয়েক বছর ধরে বহু মানুষকে ফেড এক্সের কর্মী এবং পুলিশ কর্তা সেজে প্রতারণা করেছেন কিছু প্রতারক। তবে আগে ভয় দেখিয়ে টাকা নিতেন তাঁরা। এ বার ভয় দেখিয়ে যৌন হেনস্থাও হল।

গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২৪ ১৯:৩০
Share: Save:

টানা দেড় দিন ধরে চলছিল অত্যাচার। প্রথমে ফোন। তার পরে ‘গুরুতর’ দোষে দোষী ঠাওরানো। শেষে অসহায় হয়ে পড়া আতঙ্কিত মহিলাকে ব্ল্যাকমেল করে সর্বস্ব লুট! গত বুধবার (৩ এপ্রিল) দুপুর সওয়া ২টো থেকে শুক্রবার (৫ এপ্রিল) রাত সওয়া ১টা পর্যন্ত সময়টা মনে পড়লেই শিউরে উঠছেন ২৯ বছর বয়সি বেঙ্গালুরুর এক মহিলা আইনজীবী। গোটা ব্যাপারটা তাঁর কাছে এখনও দুঃস্বপ্নের মতো।

ফোনটা তাঁর কাছে এসেছিল নিপাট সাধারণ আর পাঁচটা ক্যুরিয়ার সংক্রান্ত ফোনের মতোই। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, আপনি কি অনলাইনে কিছু অর্ডার করেছেন? হ্যাঁ সূচক জবাব পেতেই বদলে যেতে শুরু করে ফোনের অপর প্রান্তের গলার স্বর। ওই মহিলা আইনজীবীকে বলা হয়, আপনার নামে ওই প্যাকেটে মাদক পাওয়া গিয়েছে। নিজেকে ক্যুরিয়ার সংস্থা ফেডএক্সের কর্মী বলে পরিচয় দিয়ে কণ্ঠস্বর ঘোষণা করে, আপনার সঙ্গে কথা এক জন সিবিআই কর্তা কথা বলতে চান। এর পরেই শুরু হয় প্রতারকদের ‘খেলা’।

ওই মহিলা আইনজীবী পুলিশকে তাঁর অভিযোগে জানিয়েছেন, তাঁকে নিজের পরিচয় দিয়ে ওই সিবিআই অফিসার সাজা প্রতারক বলেন, তাঁর নাম অভিষেক চৌহান। তিনি এই মামলার তদন্ত করছেন। ওই মহিলার বিরুদ্ধে মাদক পাচারের পাশাপাশি মানব পাচারের মামলাও দায়ের হয়েছে। অভিযোগ শুনে যখন মহিলা হতবাক এবং প্রাণপণে বোঝানোর চেষ্টা করছেন, তিনি এমন কিছু করেননি, তখন তাঁকে অনলাইনে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ভিডিয়ো কলিং অ্যাপ স্কাইপ ডাউনলোড করতে বলা হয়। তার পরে যা যা ঘটেছে তার সব কিছুই হয়েছে ভিডিয়ো কলেই ক্যামেরা খোলা রেখে।

পুলিশকে ওই মহিলা জানিয়েছেন, ক্যামেরা অন করে প্রথমেই তাঁকে দিয়ে গোপনীয়তার শপথ নেওয়ানো হয়। তার পরে বলা হয় নারকোটিক্স টেস্ট বা মাদক গ্রহণের পরীক্ষা দিতে। এ সংক্রান্ত শারীরিক পরীক্ষার অঙ্গ হিসাবে ক্যামেরার সামনে পোশাকও খুলতে বলা হয় তাঁকে। এ নিয়ে মহিলা আপত্তি জানালে, তাঁর পরিবারের সদস্যদের গ্রেফতারি এমনকি, খুনের হুমকি দেওয়া হয়।

অভিযোগে ওই আইনজীবী লিখেছেন, ‘‘এই ঘটনার পরে আমাকে বলা হয় ১০ লক্ষ টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দিতে। কেন পাঠাতে হবে? প্রশ্ন করলে বলা হয়, আমার পোশাক খোলার ভিডিয়ো ওঁদের কাছে রেকর্ড করা আছে। আপত্তি করলে সেই ভিডিয়ো ডার্ক ওয়েবে প্রকাশ করে দেবেন তাঁরা।’’

প্রায় দেড় দিনের মানসিক অত্যাচারে যখন ওই মহিলা প্রায় বিধ্বস্ত, তখন ফোন রাখতে পারেন তিনি। কিন্তু তত ক্ষণে ১৫ লক্ষ টাকা বেহাত হয়ে গিয়েছে তাঁর। বেআব্রুও হয়েছেন তিনি। কিছুটা ধাতস্থ হয়েই পুলিশে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

প্রসঙ্গত ফেডএক্স ক্যুরিয়ার পরিষেবা সংস্থার নামে এই ধরনের প্রতারণা চক্র নতুন নয়। গত কয়েক বছর ধরে ঠিক এ ভাবেই বহু মানুষকে ফেড এক্সের কর্মী এবং পুলিশকর্তা সেজে প্রতারণা করেছেন কিছু প্রতারক। তবে এর আগে ভয় দেখিয়ে টাকা নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ বার ভয় দেখিয়ে যৌন হেনস্থাও করলেন প্রতারক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime against Woman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE