—প্রতীকী ছবি।
কেউ বলছেন, উলটপুরাণ। কেউ আদৌ আশ্চর্য নন। তবে কলকাতা থেকে ভেলোরে টিউমারের চিকিৎসা করাতে গিয়ে চরম হেনস্থার শিকার হয়েছেন বলে শিয়ালদহের বাসিন্দা আশিস গিরি অভিযোগ জানিয়েছেন। শনিবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রককে ইমেল করে তাঁর অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন তিনি। ইতিমধ্যে কলকাতায় চিকিৎসা করিয়ে তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ বলেও দাবি ওই ব্যক্তির।
ঘটনার সূত্রপাত ২০১৯ সালে। তখন মলের সঙ্গে রক্ত পড়ছিল আশিসের। তাই কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ এবং এসএসকেএম হাসপাতালে দেখান আশিস। সব পরীক্ষার পরে দুই হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন, তাঁর কোলনে একটি টিউমার হয়েছে। আশিস জানান, টিউমারটির বায়োপসি রিপোর্টে জানা যায় তাঁর ‘ক্রনিক আলসার’ হয়েছে। ডাক্তাররা জানিয়েছিলেন, টিউমারটি অস্ত্রোপচার করতে হবে।
এর পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ৪৬ বছর বয়সী আশিস ভেলোরে যান। সেটা ২০২১ সাল। তাঁর দাবি, সেখানে ফের তাঁকে সমস্ত পরীক্ষা করিয়ে চিকিৎসক জানান, আশিসের ক্যানসার হয়েছে। অস্ত্রোপচার করাতে হবে। ‘‘কিন্তু একই ডাক্তার দু’বার আমাকে অস্ত্রোপচারের খরচ দু’রকম বলেন’’, অভিযোগ আশিসের।
পরে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেই তাঁর অস্ত্রোপচার হয়। তাঁর ক্যানসার হয়নি। এখন পুরোপুরি সুস্থ আশিস বলেন, ‘‘ভাল চিকিৎসার আশায় ভেলোরে গিয়েছিলাম। ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা হল!”
আশিসের দাবি, ভেলোরের ডাক্তারেরা কলকাতার থেকে ঢের বেশি খরচে তাঁকে যাবতীয় ডাক্তারি পরীক্ষা করাতে বাধ্য করেন। বলা হয়েছিল, ১৫ দিন বাদে সব রিপোর্ট চলে আসবে। আশিসের অভিযোগ, "১৫ দিন বায়োপসির রিপোর্ট ছাড়াই সেই ডাক্তার লিখে দেন, আমার ক্যানসার হয়েছে। অস্ত্রোপচার করাতে হবে। খরচ পড়বে পাঁচ লাখ টাকা।’’
ওই চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে পাঁচ দিন বাদে গেলে আশিসের দাবি, "ডাক্তারবাবু ফের লেখেন, আমার ক্যানসার হয়েছে। অস্ত্রোপচার প্রয়োজন। খরচ দু’লক্ষ টাকা।’’ এ বার আশিসের সন্দেহ হয়, একই চিকিৎসক অস্ত্রোপচারের খরচ কেন এক বার পাঁচ লাখ, আর এক বার লিখছেন দু’লাখ টাকা লিখছেন! আশিসের অভিযোগ, এর পরে তিনি তাঁর সমস্ত রিপোর্ট চাইলেও তা দেওয়া হয়নি। তাঁর দাবি, "আমি রিপোর্ট চাইলে হাসপাতালের তরফে বলা হয়, এটা বাংলা নয়। ভেলোর! অনেক পীড়াপীড়ির পরে আমাকে একটি অন্তর্বর্তী রিপোর্ট ধরিয়ে দেওয়া হয়।"
এর পরে ভেলোরের ওই হাসপাতালে আর দেখাননি আশিস। সেই বছরেই কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে তাঁর টিউমারটির অস্ত্রোপচার হয়। আশিস বলেন, "অস্ত্রোপচারের পরে বায়োপসির রিপোর্টে দেখা যায়, আমার ক্যানসার হয়নি।’’
নিজের অভিজ্ঞতার কথা সমাজমাধ্যমেও লিখেছেন আশিস। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের জেনারেল সার্জারি বিভাগের প্রধান শিবজ্যোতি ঘোষ ঘটনাটি প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘এ রাজ্যের শল্য চিকিৎসকদের দক্ষতাও প্রশ্নাতীত। রাজ্যে আনুষঙ্গিক আধুনিক পরীক্ষারও ঠিকঠাক ব্যবস্থা আছে। স্বাস্থ্য পরিষেবায় বাংলা ভেলোর, দিল্লি বা মুম্বইয়ের থেকে পিছিয়ে নেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy