আমেরিকা-নিবাসী স্বামীর বিরুদ্ধে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ তুলে বিদেশমন্ত্রকের দ্বারস্থ হলেন ভারতীয় যুবতী। সম্প্রতি হায়দরাবাদের ওই যুবতী ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে চিঠি লিখে গোটা ঘটনাটি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপের আর্জিও জানিয়েছেন তিনি।
সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি-র একটি প্রতিবেদন সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর দুয়েক আগে আমেরিকা-নিবাসী মহম্মদ জ়ৈন উদ্দিনের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল হায়দরাবাদের বাসিন্দা ২৫ বছর বয়সি হানা আহমদ খানের। শুরুতে সব ঠিকঠাকই চলছিল। কিন্তু হানাকে বিয়ের কিছু দিন পরেই আমেরিকার শিকাগোয় ফিরে যান তাঁর স্বামী। অভিযোগ, এর পর দু’বছর কেটে গেলেও তাঁকে আমেরিকায় নিয়ে যাওয়ার কথা মুখেও আনেননি জ়ৈন।
বহু চেষ্টার পর গত বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি ভিসা জোগাড় করে আমেরিকায় যান হানা। স্বামীর সঙ্গে দেখা করে তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতে চিঁড়ে ভেজেনি। উল্টে শুরু হয় শারীরিক নির্যাতন। অভিযোগ, হানার আপত্তি সত্ত্বেও তাঁর স্বামী তাঁকে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা শুরু করতে বাধ্য করেন। হানার দাবি, এক পর্যায়ে স্বামীর বিরুদ্ধে শিকাগোর পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান তিনি। কিন্তু লাভ হয়নি তাতেও। লিখিত অভিযোগ নেওয়ার বদলে জ়ৈনকে শুধুমাত্র সতর্ক করে ছেড়ে দেয় পুলিশ।
আরও পড়ুন:
কয়েক মাস আগে সামাজিক নিরাপত্তা (সোশ্যাল সিকিউরিটি) সংক্রান্ত কার্ড এবং গ্রিন কার্ড হাতে পান হানা। তখন পরিস্থিতি খানিক পাল্টায়। জ়ৈন স্ত্রীকে বোঝান, দু’জনে মিলে ভারতে ঘুরতে যাবেন। তার পর সেখান থেকে সৌদি আরবে যাবেন তীর্থযাত্রা করতে। সেই মতো ভারতে এসে একটি হোটেলে ওঠেন দম্পতি। এক দিন হোটেল থেকেই পরিজনদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন হানা। তখন হঠাৎ হোটেল কর্তৃপক্ষের থেকে ফোন পান ওই মহিলা। জানতে পারেন, হোটেলের ঘর থেকে তাঁর মালপত্র নিয়ে গিয়েছেন তাঁর স্বামী। শুধু তা-ই নয়, হোটেলের ঘরে চেক আউট করে বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন তিনি! সঙ্গে সঙ্গে হোটেলে ফিরে হানা দেখেন, তাঁর সব জিনিসপত্র নিয়ে উধাও হয়ে গিয়েছেন জ়ৈন। শুধু গয়না, পোশাকই নয়, তাঁর পাসপোর্ট, গ্রিন কার্ড-সহ সমস্ত জরুরি নথিও নিয়ে গিয়েছেন তিনি।
শেষমেশ গত ২২ অগস্ট বিদেশমন্ত্রকের দ্বারস্থ হয়েছেন হানা। জয়শঙ্করকে লেখা চিঠিতে ক্রমাগত শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ তুলেছেন ওই যুবতী। তবে এ বিষয়ে মহিলার স্বামী কিংবা তাঁর আইনজীবীর বক্তব্য এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি। ভারত কিংবা মার্কিন কর্তৃপক্ষ— কারও তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও মন্তব্যও প্রকাশ্যে আসেনি।