E-Paper

‘যোগ্য-অযোগ্য জট ছাড়াননি মমতাই’

স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে অভিজিৎই প্রথম সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন। কলকাতা হাই কোর্টের তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এখন তমলুক লোকসভা কেন্দ্র থেকে বিজেপির সাংসদ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২৫ ০৮:৫৩
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

যোগ্য-অযোগ্য বাছাই করা সম্ভব ছিল। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই জট ছাড়াতে চাননি বলেই সুপ্রিম কোর্ট যোগ্য-অযোগ্য বাছাই না করে প্রায় ২৬ হাজার স্কুল শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল করে দিয়েছে, অভিযোগ তুললেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।

স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে অভিজিৎই প্রথম সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন। কলকাতা হাই কোর্টের তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এখন তমলুক লোকসভা কেন্দ্র থেকে বিজেপির সাংসদ। তাঁর দাবি, ২০১৬ সালে এসএসসি-র নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নিযুক্তদের মধ্যে কারা যোগ্য, কারা অযোগ্য, তা বাছাই করা সম্ভব ছিল। আজ সংসদ চত্বরে দাঁড়িয়ে অভিজিৎ বলেন, ‘‘যে সাড়ে পাঁচ বা ছ’হাজার চাকরিপ্রার্থী ঘুষ দিয়ে চাকরি পেয়েছিলেন, তাঁদের আলাদা করা যেত। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীকে কিছু সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী, প্রাক্তন বিচারপতি পরামর্শ দিয়েছিলেন, এই জট ছাড়াবেন না। তা হলে সুপ্রিম কোর্ট বাধ্য হবে সকলের চাকরি বহাল রাখতে। এই জন্যই আজ এত ছেলেমেয়ের সর্বনাশ হয়ে গেল।’’

২০২১ সালের জুনে অভিজিতের এজলাসেই নিয়োগ দুর্নীতির মামলা শুরু। আজ অভিজিৎ বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর দুর্নীতি ধরা পড়ে গিয়েছে। ওঁর এখনই পদ থেকে ইস্তফা দেওয়া উচিত। আমার উপরে ওঁর এত রাগ, কারণ আমি জোচ্চুরি ধরেছিলাম।’’

অভিজিৎ মনে করছেন, সুপ্রিম কোর্ট রাজ্য মন্ত্রিসভার অতিরিক্ত পদ তৈরির সিদ্ধান্তে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ নিয়ে ৮ এপ্রিল যে শুনানি করবে, তাতেও রাজ্যকে বিপাকে পড়তে হবে। গত এপ্রিলে বেআইনি ভাবে নিযুক্তদের জন্য অতিরিক্ত পদ তৈরির সিদ্ধান্তেও সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট। ফলে গোটা মন্ত্রিসভা সিবিআই তদন্তের আওতায় চলে আসবে বলে রাজ্যের আপত্তিতে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ তাতে স্থগিতাদেশ দেয়। অভিজিৎ বলেন, ‘‘মন্ত্রিসভা সিবিআই তদন্তের আওতায় চলে আসবে তো আসবে। আশ্চর্য হয়ে গিয়েছিলাম সুপ্রিম কোর্টের ওই সিদ্ধান্তে।’’

বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য অবশ্য গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করার পক্ষেই সওয়াল করেছিলেন। আজ সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে সিপিএম সাংসদ বিকাশরঞ্জন বলেন, ‘‘গোটা ব্যবস্থাটাই দুর্নীতিগ্রস্ত। কেউ সরাসরি টাকা দিয়েছিলেন। বাকিরা ব্যবস্থার শিকার।’’ অতিরিক্ত পদ তৈরি নিয়ে রাজ্য মন্ত্রিসভার উপরে দায় আসবে দাবি করে বিকাশ বলেন, ‘‘জনগণের পয়সা কি খোলামকুচি না কি যে, তা দিয়ে বেআইনি ভাবে চাকরি পাওয়াদের পদ তৈরি করে বেতন দেওয়া হবে? এর জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জেলে যেতে হবে। ৮ এপ্রিলের শুনানি হলে তা ঠিক হবে।’’

তৃণমূল সাংসদ দোলা সেনের পাল্টা বক্তব্য, ‘‘এর আগে কলকাতা হাই কোর্টের অনেক রায় সুপ্রিম কোর্ট খারিজ করে দিয়েছে। এ বার তা হয়নি। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপরে আমাদের আস্থা রয়েছে। যাঁরা চাকরি হারিয়েছেন, তাঁদের আশাহত হওয়ার কারণ নেই। মমতা অবশ্যই তাঁদের জন্য কিছু করবেন।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Abhijit Ganguly Mamata Banerjee SSC

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy