E-Paper

ট্রাম্পের শুল্কনীতি খারিজ না-ও হতে পারে কোর্টে: অভিজিৎ

ট্রাম্পের শুল্কচাপের ফলে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে ভূরাজনৈতিক সমীকরণে। রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনার ফলেও শুল্কের মাধ্যমে ভারতের উপরে অর্থদণ্ড চাপিয়েছেন ট্রাম্প।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৮:৪৩
অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়।

অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্কনীতির ক্ষেত্রে আমেরিকান সুপ্রিম কোর্ট তেমন কোনও পদক্ষেপ না-ও করতে পারে বলে মনে করেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়।

ট্রাম্পের শুল্কচাপের ফলে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে ভূরাজনৈতিক সমীকরণে। রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনার ফলেও শুল্কের মাধ্যমে ভারতের উপরে অর্থদণ্ড চাপিয়েছেন ট্রাম্প। ভারতকে বেশ কয়েক বার আক্রমণ করেছেন তাঁর সহযোগীরা। সম্প্রতি চিনে শাংহাই গোষ্ঠীর বৈঠকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঘনিষ্ঠতার চিত্র সামনে আসার পরে ট্রাম্প দাবি করেন, চিনের ছায়ায় ভারত ও রাশিয়াকে হারিয়েছেন তিনি। পরে অবশ্য সুর কিছুটা নরম করে ভারতকে সবসময়ের বন্ধু বলে উল্লেখ করেছেন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট। সেই বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছেন মোদীও। কিন্তু তাতে শুল্কচাপের বাস্তব চিত্র বদলায়নি।

ট্রাম্পের ঘোষণা করা শুল্কের অধিকাংশই খারিজ করেছে আমেরিকার একটি নিম্ন আদালত। সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ট্রাম্প। এক সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যেপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমার মনে হয় সুপ্রিম কোর্ট খুব বড় পদক্ষেপ করবে না। তারা শুল্ক সিদ্ধান্ত খারিজ করবে বলেও মনে হয় না। কারণ, আমেরিকার সুপ্রিম কোর্ট সে দেশের প্রশাসনের সিদ্ধান্ত রক্ষা করতেই বেশি তৎপর হয়। দ্বিতীয়ত, বিভিন্ন পরিস্থিতিতে নানা উপায়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাঁর কাজ হাসিল করেছেন। ফলে তিনি নীতি বদল না করলে নীতির পরিবর্তনের বিষয়ে আমি আশাবাদী নই।’’

চিনের ছায়ায় ভারতকে হারিয়ে ফেলার কথা বলেছেন ট্রাম্প। কিন্তু অভিজিতের মতে, ‘‘এর খুব প্রত্যক্ষ প্রভাব বাণিজ্যের উপরে পড়বে বলে আমি মনে করি না। কারণ, আমাদের আমেরিকা ও চিনের সঙ্গে বাণিজ্যের প্রকৃতি ভিন্ন। অবস্থান পরিবর্তন করাও সহজ নয়।’’ অভিজিতের মতে, ‘রিজিয়নাল কম্প্রিহেনসিভ ইকনমিক পার্টনারশিপ’-এর মতো বাণিজ্য গোষ্ঠীতে যোগ দেওয়ার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করতে পারে দিল্লি। ওই গোষ্ঠীতে চিন ছাড়াও জাপান, অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশ রয়েছে। ফলে চিনের উপরে ভারতেরনির্ভরতা কমবে।

কিন্তু ভারত ও আমেরিকার মধ্যে বর্তমান অচলাবস্থা কাটানোর পথ কী? অভিজিতের বক্তব্য, ‘‘এই প্রশ্নের জবাব আমার কাছে নেই। সংবাদমাধ্যম দেখে মনে হয় ভারত-পাকিস্তান সংঘাত বন্ধ করার যে দাবি ট্রাম্প করেছিলেন আমরা তা স্বীকার না করায় ট্রাম্প ক্ষুব্ধ হয়েছেন। সেটা সত্য হলে আমি জানি না আমরা কীকরতে পারব।’’

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও প্রধানমন্ত্রী মোদীর মধ্যে ফোনে কথোপকথনের সম্ভাবনা নিয়ে চর্চা রয়েছে সংবাদমাধ্যমে। অভিজিতের মতে, ‘‘কথোপকথনের পথ সব সময়েই খোলা রাখা উচিত। ফোনে কথা না বলার কারণ আমি দেখতে পাচ্ছি না। তবে তার ফলে পরিস্থিতি আরও ভাল হবে না খারাপ হবে সেটা হচ্ছে প্রশ্ন। সে ক্ষেত্রে কি ট্রাম্প ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে শান্তি ফেরানোর বিষয়টিতে আরও জোর দিয়ে ভারতকে আরও অস্বস্তিতে ফেলবেন? আমার মনে হয় সে জন্যই ভারত সরকার কথোপকথন নিয়ে দ্বিধায় রয়েছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Abhijit Vinayak Banerjee India-US Relationship India US Tariff Row Donald Trump

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy