এয়ার কন্ডিশনার (এসি)-র তাপমাত্রা ২৪ ডিগ্রিতে থাকলে বিদ্যুতের অপচয় ১৮ শতাংশ কমানো যায়। কারণ, প্রয়োজনীয় বিদ্যুতের পরিমাণ কমে। তাতে যে শুধুই সরকারের লাভ হয়, তাই নয়; বিদ্যুতের খরচ বাঁচে আমার, আপনারও। ইলেকট্রিক বিলের পরিমাণ অনেকটাই কমে বলে মাসের শেষে উদ্বেগটাও কমে যায়।
কেন সরকার এয়ারকন্ডিশনারের তাপমাত্রা ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে রাখতে বলেছে, তার এই ব্যাখ্যা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎমন্ত্রী আর কে সিংহ, টুইটারে।
আর কী কারণ?
মন্ত্রী বলেছেন, ভারতে যেহেতু বিদ্যুৎ উৎপাদনের অনেকটাই হয় তেল, কয়লা পুড়িয়ে, তাই এয়ার কন্ডিশনার চালাতে বিদ্যুতের খরচ কম হলে তেল আর কয়লা বাঁচে। আর তেল, কয়লা পোড়ালে যেহেতু পরিবেশ, প্রকৃতি ভরে ওঠে বিষাক্ত গ্রিনহাউস গ্যাসে, তাই বিদ্যুৎ কম খরচ করে এসি চালালে দূষণের মাত্রাও অনেকটা কমে যায়।
কেন্দ্রীয় সরকার ওই নির্দেশ দেওয়ার পরেই টুইটারে সমালোচনার ঝড় বয়ে গিয়েছে। কেউ কেউ বলেছেন, এর পর কতটা চাল খেতে হবে, তারও সীমা বেঁধে দেবে কেন্দ্র?
ওই সমালোচনার জবাব দিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎমন্ত্রী তাঁর টুইটে লিখেছেন, ‘‘এয়ার কন্ডিশনারের তাপমাত্রা প্রতি এক ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়ালে প্রয়োজনীয় বিদ্যুতের পরিমাণ কমে অন্তত ৬ শতাংশ।’’
2. Every degree by which you increase the temperature setting saves 6% of energy. A minimum temperature setting of 24 Degrees will result in a saving of 18% of energy as compared to a minimum setting of 21 Degrees at the present level of the population of Air Conditioners (1/2)
— Office of R.K. Singh (@OfficeOfRKSingh) June 25, 2018
কিন্তু ১৮ নয়, ১৯ নয়, শুধুই ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস?
টুইটে তারও জবাব দিয়েছেন কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎমন্ত্রী। লিখেছেন, আমাদের শরীরের তাপমাত্রা থাকে সাধারণত ৩৬ থেকে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। কিন্তু বহু সরকারি, বেসরকারি অফিস, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, হোটেলে এসির তাপমাত্রা রাখা থাকে ১৮ থেকে ২১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে।
আরও পড়ুন- বাসে বিকল এসি, যাত্রীরা ঘেমে একসা
আরও পড়ুন- এসি কিনছেন? এই বিষয়গুলো অবশ্যই মাথায় রাখুন
টুইটে কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎমন্ত্রী লিখেছেন, ‘‘অথচ, এসি চালু করলেই তার তাপমাত্রা থাকে ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। তার মানে, আমরাই আরও ঠান্ডা হতে এসির তাপমাত্রা আরও কমিয়ে ১৮ থেকে ২১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে করে রাখি। কিন্তু তাতে আমাদের অস্বস্তি বাড়ে বই কমে না। গায়ে চাদর, কম্বল জড়িয়ে বসে থাকতে হয়। যা অস্বাস্থ্যকরও বটে।’’
কী বলছেন চিকিৎসকরা?
কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বক্তব্যের একাংশ মেনে নিয়েছেন কলকাতার চিকিৎসকদের একাংশ। ডাক্তার বুদ্ধদেব সাহা বলেছেন, ‘‘এসির কম তাপমাত্রার ফলে শ্বাসকষ্টের রোগেও ভুগতে হতে পারে। তা ছাড়া, সর্দিকাশির সম্ভাবনা তো আছেই।’’
এসি চালিয়ে বাতাসে কি ভরে দিচ্ছি আরও বিষ?
Some facts you need to know:
— Office of R.K. Singh (@OfficeOfRKSingh) June 25, 2018
1. India has made a commitment under its Nationally Determined Contributions (NDCs) under the Paris Agreement to reduce the emission intensity of its economy by 33-35% by 2030 as compared to 2005 levels. (1/2)
মন্ত্রীর বক্তব্য, শুধু তাই নয়, এসির তাপমাত্রা আরও কম করতে গিয়ে বেশি বিদ্যুৎও খরচ করছি আমরা। বিদ্যুতের অপচয় হচ্ছে। তাতে সরকারের বিদ্যুৎ খরচ বাড়ছে। বাড়ছে আমার, আপনার ইলেকট্রিক বিল, খরচও। আর সেই বাড়তি বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে গিয়ে তেল আর কয়লা পোড়াতে হচ্ছে বেশি। ফলে, বাতাস আরও বেশি করে ভরে যাচ্ছে বিষে। প্যারিস জলবায়ু চুক্তির সর্বশেষ বৈঠকে ভারত কথা দিয়ে এসেছে তেল, কয়লা পুড়িয়ে বাতাসে বিষ ঢেলে দেওয়ার পরিমাণ ২০৩০ সালের মধ্যে ২০০৫-এর চেয়ে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ কমাবে। তার জন্য বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে বিদ্যুতের ব্যবহার কমানো দরকার। এসি তার অন্যতম।