Advertisement
০৯ মে ২০২৪
Seema Haider

ভারতে প্রবেশের আগে চেহারা এবং পোশাক নিয়ে পরিকল্পনা করেন সীমা! জানাচ্ছে গোয়েন্দা সূত্র

বিভিন্ন ভাষার উপর সীমার দক্ষতা নিয়েও সন্দেহ জাগছে তদন্তকারী সংস্থাগুলির মধ্যে। নেপালে এসে গুপ্তচরবৃত্তির জন্য পাকিস্তানে এই ধরনের ভাষার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় বলে মনে করছেন তদন্তকারী আধিকারিকেরা।

According to intelligence source Seema Haider looked was skillfully planned by experts before entering India

ভারতে অনুপ্রবেশকারী পাকিস্তানি বধূ সীমা হায়দার। —ফাইল চিত্র ।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
নয়ডা শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০২৩ ১৬:৩৭
Share: Save:

ভারতের প্রান্তিক মহিলাদের মতো সাজতে পেশাদার রূপটান এবং পোশাকশিল্পীদের সাহায্য নিয়েছিলেন ভারতে আসা পাক বধূ সীমা হায়দার! এমনটাই জানা গিয়েছে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে। ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা সূত্র সংবাদমাধ্যম ‘ইন্ডিয়া টুডে’-কে জানিয়েছে, ভারতীয় প্রান্তিক মহিলাদের পোশাক, চেহারা এবং হাবভাব নিয়ে ওয়াকিবহাল ছিলেন না সীমা। আর সেই কারণেই ভারতে এসে প্রান্তিক ভিড়ে মিশে যেতে তিনি গ্রামীণ মহিলাদের মতো বেশভূষায় ভারতে প্রবেশ করেছিলেন। তার জন্য নাকি তিনি পেশাদার রূপটান এবং পোশাকশিল্পীদের সাহায্য নিয়েছিলেন। এমনকি, নিরাপত্তারক্ষীদের নজর এড়াতে সন্তানদেরও মানানসই পোশাক পরিয়েছিলেন তিনি।

গোয়েন্দা সূত্র ‘ইন্ডিয়া টুডে’কে জানিয়েছে, নেপালসীমান্তে মানব পাচার এবং যৌনপেশার সঙ্গে যুক্ত অনেক মহিলাই এক বিশেষ পদ্ধতিতে পোশাক পরেন। তা নিয়েও সীমা খোঁজখবর নিয়েছিলেন বলে তদন্তকারীদের সন্দেহ।

বিভিন্ন ভাষার উপর সীমার দক্ষতা নিয়েও সন্দেহ জাগছে তদন্তকারী সংস্থাগুলির মনে। নেপালে এসে গুপ্তচরবৃত্তির জন্য পাকিস্তানে এই ধরনের ভাষা প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় বলে মনে করছেন তদন্তকারী আধিকারিকেরা।

পাকিস্তান থেকে সীমান্ত পেরিয়ে অবৈধ ভাবে ভারতে প্রবেশ করে সন্দেহের দায়রায় ‘পাক বধূ’ সীমা। তাঁর দাবি, তিনি ভারতীয় প্রেমিক সচিন মিনার টানেই পাকিস্তান ছেড়ে ভারতে এসেছেন। যদিও তাঁর পরিচয় এবং ভারতে আসার উদ্দেশ্য সন্দেহ জাগাচ্ছে উত্তরপ্রদেশ এটিএসের মনে। পাকিস্তানের সেনাবাহিনী এবং পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর সঙ্গে সীমার যোগ থাকতে পারে বলে অনুমান করছে এটিএস এবং আইবি।

প্রসঙ্গত, অনলাইন গেম পাবজি খেলার সময় ২০১৯ সালে সচিনের সঙ্গে পরিচয় হয় সীমার। সেখান থেকে প্রেম। ২২ বছরের যুবকের প্রেমে পড়ে প্রায় ১,৩০০ কিলোমিটার দূর থেকে ছুটে আসেন ৩০ বছরের সীমা। শুধু একা নন। সঙ্গে ছিল তাঁর চার সন্তান, যাদের সবার বয়সই সাত বছরের কম। ভিসা ছাড়া নেপালের মাধ্যমে বেআইনি ভাবে ভারতে প্রবেশ করার অভিযোগে ৪ জুলাই গ্রেফতার হন সীমা। তাঁকে আশ্রয় দিয়ে গ্রেফতার হন সচিন এবং তাঁর বাবা নেত্রপাল। পরে জামিনে ছাড়াও পান তাঁরা।

জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর সীমা দাবি করেন, তিনি হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করেছেন। তিনি আর তাঁর পদবি ব্যবহার করবেন না বলেও জানান। তাঁর কথায়, ‘‘সীমা নামটি হিন্দু এবং মুসলমান যে কোনও ধর্মের মেয়েরই হয়। তাই আমি এখন থেকে শুধুই সীমা। অথবা, নিজেকে সীমা সচিন বলে পরিচয় দেব। আমার সন্তানদেরও নাম পরিবর্তন করে রাজ, প্রিয়ঙ্কা, পরি এবং মুন্নি রেখেছি।’’ তিনি এখন প্রতি দিন ঈশ্বরের পুজো করার পর হাত জোড় করে সকলকে নমস্কার করেন এবং বড়দের পা ছুঁয়ে প্রণাম করেন বলেও দাবি করেন তিনি। তাঁর দাবি, হিন্দু ধর্ম গ্রহণের জন্য তিনি নিরামিষ খাবার খাওয়া শুরু করেছেন।

উল্লেখযোগ্য যে, মঙ্গলবার রাতে সীমা, তাঁর প্রেমিক সচিন, সচিনের বাবা এবং সীমার সন্তানদের নিয়ে নয়ডা অফিস থেকে বার হয় এটিএসের দল। রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে দলটি সবাইকে রাবুপুরা থানায় নিয়ে যায়। সীমার ভারতে প্রবেশের খবর প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই তাঁকে নিয়ে তদন্ত চালাচ্ছিলেন এটিএস আধিকারিকেরা। সেই তদন্ত চলাকালীন একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে বলে এটিএস সূত্রে খবর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Seema Haider Pakistan Pakistani Woman ATS
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE