ত্রিপুরার যুবককে কোপানোর পরে দৃশ্যত নির্লিপ্তই ছিলেন অভিযুক্তেরা। যা যা কাজ করার কথা ছিল, সবই করেছেন। মদ কেনেন। তার পরে চায়ের দোকানে গিয়ে আড্ডা মারেন। বন্ধুর সন্তানের জন্মদিনও উদ্যাপন করেন। যেন অস্বাভাবিক কিছুই ঘটেনি।
উত্তরাখণ্ডের ওই হত্যাকাণ্ডে ইতিমধ্যে প্রশ্নের মুখে পড়েছে সে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা। পুলিশ সূত্রে খবর, গত ৯ ডিসেম্বর এক অভিযুক্তের সন্তানের জন্মদিন ছিল। ২১ বছর বয়সি ওই অভিযুক্ত নিজের সন্তানের জন্মদিন উপলক্ষে পাঁচ বন্ধুকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। বন্ধুদের সঙ্গে মদ্যপানের পরিকল্পনা ছিল তাঁর। অভিযুক্তেরা ঠিক করেছিলেন, মদ কেনার পরে একটি চায়ের দোকানে গিয়ে বসবেন। সেখানেই উদ্যাপন হবে।
সেই পরিকল্পনা মতো দেহরাদূনের সেলাকি বাজার এলাকায় মদ কিনতে যান তাঁরা। ওই বাজারেই ত্রিপুরার যুবক অ্যাঞ্জেল চাকমা এবং তাঁর ভাই মাইকেলের সঙ্গে ঝামেলা শুরু হয় অভিযুক্তদের। নিমেষে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। যেখানে ঝামেলা হচ্ছিল তার পাশেই একটি ঠেলাগাড়িতে করে ফল বিক্রি করছিলেন এক ব্যক্তি। ফল কাটার জন্য একটি ছুরি রাখা ছিল সেখানে। পুলিশ সূত্রে খবর, নিমেষের মধ্যে এক অভিযুক্ত ওই ঠেলাগাড়ি থেকে ছুরি নিয়ে অ্যাঞ্জেলকে আঘাত করেন। যদিও সেই ছুরি এখনও খুঁজে পাননি তদন্তকারীরা।
ছুরিকাঘাতের পরে অ্যাঞ্জেল রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে যান। তাঁর ভাই মাইকেল তখন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য ছোটাছুটি করছিলেন। অথচ অভিযুক্তেরা ছিলেন দৃশ্যতই নির্লিপ্ত। ছুরিকাঘাতের পরে আবার নিজ নিজ কাজে ফিরে যান তাঁরা। পুলিশ জানিয়েছে, ওই ঘটনার পরে দোকান থেকে মদ কেনেন অভিযুক্তেরা। তার পরে যে চায়ের দোকানে যাওয়ার কথা ছিল সেখানেও যান। বন্ধুর সন্তানের জন্মদিনও উদ্যাপন করেন তাঁরা।
আরও পড়ুন:
দু’সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে হাসপাতালে ভর্তি থাকার পরে গত ২৬ ডিসেম্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় অ্যাঞ্জেলের। তাঁর মাথায় এবং পিঠে গুরুতর জখম হয়েছিল। নিহতের ভাই মাইকেল পুলিশকে জানিয়েছেন, হামলার আগে তাঁদের বিরুদ্ধে বর্ণবিদ্বেষমূলক মন্তব্য করা হয়েছিল। ছুরি দিয়ে কোপানোর আগে অ্যাঞ্জেলকে ‘চিনা’ এবং ‘মোমো’ বলে উত্ত্যক্ত করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনায় অভিযুক্তদের মধ্যে কয়েক জন নাবালকও রয়েছেন। তবে সোমবার রাতে দেহরাদূনের সিনিয়র পুলিশ সুপার অজয় সিংহ জানিয়েছেন, প্রাথমিক তদন্তে বর্ণবিদ্বেষমূলক হিংসার কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।