সুস্থ বাতাসের দাবিতে রবিবার ইন্ডিয়া গেটের সামনে জড়ো হয়েছিলেন দিল্লির নাগরিকেরা। তার পর থেকেই দিল্লির দূষণ নিয়ে ফের রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। তার মধ্যেই সোমবার আবহাওয়া দফতর খানিক স্বস্তির খবর দিয়ে জানিয়েছে, বাতাসের গুণমান খানিক উন্নত হয়েছে দিল্লিতে। রবিবার দিল্লিতে বাতাসের গুণমান সূচক (একিউআই) ছিল ৩৯১। সোমবার সকালে তা খানিক কমে ৩৪৬ হয়েছে। তবে রাজধানীর বাতাস এখনও বিষাক্ত রয়েছে বলেই জানিয়েছে হাওয়া অফিস।
রবিবার দিল্লি ও সংলগ্ন এলাকার ৩৯টি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের মধ্যে ২৯টিতেই বাতাসের গুণমান সূচক ৪০০-র উপরে ছিল—যাকে ‘মারাত্মক’ শ্রেণিতে ফেলা যায়। সোমবার সকালে অবশ্য অনেকগুলি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে বাতাসের গুণমাণ সূচক ৪০০-র নীচে নেমে এসেছে। বাতাসের গতি বৃদ্ধি পাওয়া এবং শস্যের গোড়া পোড়ানোর পরিমাণ হ্রাস পাওয়ার কারণেই এই সাময়িক উন্নতি বলে মনে করছেন আবহবিদেরা।
রবিবার সুস্থ ভাবে শ্বাস নেওয়ার দাবি জানিয়ে কোনও রাজনৈতিক দলের পতাকা বা ব্যানার ছাড়াই ইন্ডিয়া গেটের সামনে ভিড় করেন দিল্লির বেশ কয়েক জন বাসিন্দা। এক সময়ে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে ইন্ডিয়া গেট এলাকা। মুখে অক্সিজেন মাস্ক পরে, হাতে সংবিধান নিয়ে প্রতিবাদ জানান কেউ কেউ। প্রায় আধ ঘণ্টা বিক্ষোভের পরে বলপ্রয়োগ করে পুলিশ। বেশ কয়েক জনকে আটক করা হয়। ধাক্কাধাক্কিতে আহতও হন অনেকে। অনেক শিশু অসুস্থ হয়ে পড়ে।
আরও পড়ুন:
এই ঘটনা প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা তথা দিল্লির পরিবেশমন্ত্রী মনজিন্দর সিংহ সিরসার বক্তব্য, গত ১০ বছর ধরে আম আদমি পার্টি (আপ)-র সরকার দিল্লিতে দূষণ নিয়ন্ত্রণে কোনও পদক্ষেপ করেনি। তা সত্ত্বেও সাত মাসের বিজেপি সরকার দূষণ নিয়ন্ত্রণে জরুরি পদক্ষেপ করছে বলে জানান তিনি। দূষণ নিয়ন্ত্রণে দিল্লি সরকার কী কী কাজ করেছে, তার খতিয়ানও তুলে ধরেন মনজিন্দর। জানান, জল ছড়িয়ে ধুলো নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। বহুতলগুলিতে লাগানো ধোঁয়াশারোধী ‘অ্যান্টি-স্মগ গান’। তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ খারিজ করে দিল্লির প্রাক্তন মন্ত্রী তথা আপ নেতা সৌরভ ভরদ্বাজের পাল্টা দাবি, দূষণ নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ না-করে ভুল তথ্য দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে দিল্লির বিজেপি সরকার। সে কারণে মানুষ এই সরকারকে বিশ্বাস করছে না বলে দাবি তাঁর।
রবিবারের জমায়েত ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেছেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। তিনি লেখেন, “পরিষ্কার বাতাস ন্যূনতম অধিকারের মধ্যে পড়ে। শুদ্ধ বাতাসের দাবি জানিয়ে শান্তিপূর্ণ ভাবে প্রতিবাদ করলে পুলিশ কেন এই আচরণ করবে? তাঁরা তো অপরাধী নন।”