Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Congress

বিরোধী নেতা বদলে বাম পথে কংগ্রেসও

লকডাউন পর্ব মিটে গিয়ে কেরলে গিয়ে এআইসিসি নেতারা বিস্তারিত আলোচনায় বসবেন।

এআইসিসি সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) কে সি ভেনুগোপালার সঙ্গে কেরলের নতুন বিরোধি দলনেতা ভি ডি সতীশন

এআইসিসি সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) কে সি ভেনুগোপালার সঙ্গে কেরলের নতুন বিরোধি দলনেতা ভি ডি সতীশন

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০২১ ০৫:৫৪
Share: Save:

শাসক শিবিরে নীতি প্রভাব ফেলল বিরোধী শিবিরেও!

টানা দু’বার বা তার বেশি বিধায়ক থেকেছেন, এমন প্রার্থীদের এ বার বিধানসভা ভোটে প্রার্থী করেনি কেরলের সিপিএম। ভোটে সাফল্য পেয়ে নজিরবিহীন ভাবে টানা দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় ফিরে মুখ্যমন্ত্রী ছাড়া গোটা মন্ত্রিসভাই বদলে দিয়েছে তারা। এর পরে কংগ্রেসও এ বার বিরোধী দলনেতা হিসেবে বেছে নিল ভি ডি সতীশনকে। রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী উম্মেন চান্ডি এবং গত বারের বিধানসভার বিরোধী দলনেতা রমেশ চেন্নিতালা এ বার ভোটে জিতেছেন। চেন্নিতালাকেই ওই পদে রেখে দেওয়ার জন্য জোরালো দাবি ছিল কংগ্রেসের অন্দরে। কিন্তু এআইসিসি শেষ পর্যন্ত পরবর্তী প্রজন্মের নেতা সতীশনকে বিরোধী দলনেতা হিসেবে বেছে নিয়েছে।

ভোটের ফলপ্রকাশের পরে মল্লিকার্জুন খড়গে, ভি বৈতিলিঙ্গম এবং এআইসিসি-র পর্যবেক্ষক তারিক আনোয়ারকে কংগ্রেস হাইকম্যান্ড দায়িত্ব দিয়েছিল কেরলের দলীয় সাংসদ ও বিধায়কদের মতামত নেওয়ার জন্য। দফায় দফায় মত নেওয়া হলেও বিরোধী দলনেতার বিষয়ে মতৈক্য হচ্ছিল না। চেন্নিতালাকেই ওই পদে রেখে দেওয়ার দাবি ছিল দলের অন্দরে, চান্ডির মতো প্রবীণ ও গুরুত্বপূর্ণ নেতাও চেন্নিতালার পক্ষে মত দিয়েছিলেন। আবার অন্য একাংশের মত ছিল, রাজ্যে জয় তো আসেইনি, কংগ্রেসের বিধায়ক সংখ্যা নেমে এসেছে ২১-এ। ইউডিএফের মোট আসন ৩৯। পুরনো নেতৃত্বকেই বহাল রাখলে সামনের দিকে এগোনোর পথ আরও কঠিন হবে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে সময় নিলেও এআইসিসি শেষমেশ পরিষদীয় নেতৃত্ব বদলের পক্ষেই সিলমোহর দিয়েছে। সূত্রের খবর, লকডাউন পর্ব মিটে গিয়ে কেরলে গিয়ে এআইসিসি নেতারা বিস্তারিত আলোচনায় বসবেন। তার পরে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বদলের কথাও ভাবা হতে পারে।

নতুন মুখকে সামনে নিয়ে এসে কেরলের সিপিএম যে নির্দিষ্ট নীতি তৈরি করেছে এবং সেই পথেই এগিয়ে নজির গড়তে চাইছে, তার প্রভাব অস্বীকার করতে পারছেন না কংগ্রেস নেতাদের একাংশও। তাঁদের যুক্তি, জিতেও বামেরা যদি নতুনদের এনে পরীক্ষা চালাতে পারে, পরাজয়ের পরে ঝুঁকি নিতে কংগ্রেসের অসুবিধা হবে কেন? বিরোধী দলনেতার দায়িত্ব পাওয়ার জন্য দলের হাইকম্যান্ডকে ধন্যবাদ জানিয়ে পারাভুরের পাঁচ বারের বিধায়ক সতীশনও বলেছেন, ‘‘প্রজন্মের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে দলে এমন নেতৃত্ব চাই, যাঁরা সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারবেন। নতুন অংশের সঙ্গে সংযোগ ঘটিয়ে সংগঠনকে গতিশীল করতে পারবেন। তবে শুধু বয়সই নয়, সদিচ্ছা এখানে মূল কথা।’’

অন্য দিকে, সিপিএম তাদের নবীনের নীতিকে কার্যকর করছে অন্যত্রও। নতুন যে মন্ত্রীরা দায়িত্ব নিয়েছেন, তাঁদের ব্যক্তিগত অফিস সামলানোর জন্য ৫০-৫০ ভাগ করে সরকারি কর্মী ও দলের নিযুক্ত লোকজন থাকবেন। কোনও মন্ত্রীর ব্যক্তিগত সচিবের বয়স ৫১-র বেশি হবে না। পিনারাই বিজয়নের সরকারের বিগত পাঁচ বছরে কিছু কেলেঙ্কারির অভিযোগ এসেছিল, যেখানে অভিযুক্তেরা মন্ত্রীদের সঙ্গে পরিচয় বা তাঁদের নাম ব্যবহার করেছিলেন। তার মধ্যে সব চেয়ে বেশি হইচই হয়েছিল সোনা পাচার-কাণ্ডকে ঘিরে। সেই অভিজ্ঞতার পরে এ বার কেরল সিপিএমের নির্দেশ, মন্ত্রীদের সঙ্গে কারা ঘন ঘন দেখা করতে আসছেন, তার পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসেব রাখতে হবে। কোনও অনুষ্ঠানে যাওয়ার আগে দলকে জানিয়ে সম্মতিও নিতে হবে মন্ত্রীদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Congress kerala
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE