Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Narendra Modi

Narendra Modi: প্রতিষেধকের পরে এ বার গম-কূটনীতি প্রধানমন্ত্রীর

প্রতিষেধক-কূটনীতির পর এবার গম-কূটনীতিকে আন্তর্জাতিক মানচিত্রে প্রভাব বিস্তারের নতুন কৌশল হিসাবেই ভেবেছেন প্রধানমন্ত্রী।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ মে ২০২২ ০৭:৪১
Share: Save:

গোটা বিশ্ব যখন রুটি পাচ্ছে না, ভারতীয় কৃষকেরা এগিয়ে আসছে তাঁদের জন্য।

সম্প্রতি ইউরোপ সফরে গিয়ে জার্মানিতে এই মর্মে আশ্বাসবাণী দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে গোটা বিশ্বে গমের সঙ্কট তৈরি হয়েছে। ভবিষ্যতে তা আরও বাড়তে পারে। কারণ, লড়াই কতদিন চলবে এবং কবে ওই অঞ্চলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে তার কোন নিশ্চয়তা নেই। জার্মানিতে ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের একটি অনুষ্ঠানে মোদী বলেছিলেন, “বিশ্ব যখন গমের সঙ্কটে ভুগছে, তখন ভারতীয় কৃষকরা এগিয়ে এসেছে বিশ্বকে খাওয়ানোর জন্য। মানবিকতা যখন সঙ্কটের মুখে পড়ে, ভারত তার সমাধান নিয়ে আসে।”

রাজনৈতিক শিবিরের মতে, প্রতিষেধক-কূটনীতির পর এবার গম-কূটনীতিকে আন্তর্জাতিক মানচিত্রে প্রভাব বিস্তারের নতুন কৌশল হিসাবেই ভেবেছেন প্রধানমন্ত্রী। কৃষ্ণ সাগর অঞ্চল আন্তর্জাতিক গম বাণিজ্যের এক-চতুর্থাংশ দখল করে থাকে। কিন্তু ইউক্রেনে হামলার ফলে গোটা অঞ্চলে গম উৎপাদনে যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে, সেখানে ঢুকতে চাইছে ভারত। কিন্তু সেক্ষেত্রে কিছু প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।

রফতানি করার জন্য প্রয়োজন ঘরোয়া কৃষি উৎপাদন। এবারে গ্রীষ্ম দ্রুত এসে যাওয়ায় কিছুটা মার খেয়েছে গম উৎপাদন। এ বছরে মোট গম উৎপাদন ১১১০ লক্ষ টন হওয়ার আশা ছিল। কিন্তু কৃষি মন্ত্রক এবং খাদ্য মন্ত্রকের আশঙ্কা, উৎপাদন কমবে প্রায় ৬০ লক্ষ টন। পঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ মার্চ মাস থেকেই তাপপ্রবাহে জ্বলছে। ফলে মার খেয়েছে ফলন।

তবে তাতে ঘরোয়া ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নেই বলেই দাবি করছেন কেন্দ্রীয় খাদ্যসচিব সুধাংশু পাণ্ডে। তাঁর বক্তব্য, রেশন ব্যবস্থার মাধ্যমে যে গম দিতে হয় এবং মিড ডে মিল-এর জন্য যে পরিমাণ মজুদ রাখতে হয় সে সব রেখেও বাড়তি গম হাতে থাকবে। সে কারণে আপাতত অন্য দেশে রফতানির ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করার কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, পশ্চিম এশিয়ার পাশাপাশি এবার মিশর ও তুরস্কের মতো নতুন দেশ (ভারতের গম বাণিজ্যের প্রশ্নে) গম চেয়েছে। আর্জেন্টিনার গম জুলাই মাসে বাজারে বিপুল পরিমাণে আসতে চলেছে বলে খবর। ভারত তার আগেই বিভিন্ন রাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি সেরে নিতে চাইছে।

এই পর্যন্ত সব ঠিক আছে। কিন্তু রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, গম কূটনীতির মাধ্যমে ভারতের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি তৈরি হবে ঠিকই। কিন্তু মূল্য চোকাতে হবে দেশবাসীকে। যেহেতু দেশের উৎপাদিত গমের অর্ধেকটাই কিনছে বেসরকারি সংস্থা, তারা বিশ্ব বাজারে এই সঙ্কটের সময় শস্য ধরে রেখে পরে দাম চড়িয়ে মুনাফা করতে চাইবে। তৈরি হতে পারে কৃত্রিম সঙ্কট— অর্থাৎ গমজাত পণ্যের দাম একলাফে বেড়ে যেতে পারে দেশে। কৃষকদের বৃহৎ অংশেরই শস্য ধরে রাখার মতো পরিকাঠামো নেই। ফলে লাভের গুড় খাবে ফোড়ে এবং ধনী বেসরকারি সংস্থাগুলি। যেভাবে কোভিড প্রতিষেধক কূটনীতির ক্ষেত্রেও লাভের গুড় খেয়েছিল দেশের বেসরকারি সংস্থা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Narendra Modi BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE