Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Kerala

ভাতে মারছে কেন্দ্র, মমতার সুরেই সরব বিজয়নেরা

নতুন বিতর্কের সূত্রপাত কেরল সরকারের ঋণ নেওয়ার পরিমাণ কাটছাঁট করে দেওয়া ঘিরে। সে রাজ্যে ঋণ করার অনুমোদিত সীমা কমিয়ে প্রায় অর্ধেক দেওয়া হয়েছে।

Pinarayi Vijayan

কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। ফাইল চিত্র।

সন্দীপন চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০২৩ ০৭:৪৩
Share: Save:

এই রাজ্যের রাজনীতির সমীকরণে দু’দলের সম্পর্ক এখনও অসেতুসম্ভব! কিন্তু নরেন্দ্র মোদীর সরকারের বিরুদ্ধে আর্থিক অসহযোগিতার অভিযোগ একই বিন্দুতে এনে দাঁড় করাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস-শাসিত বাংলা এবং সিপিএম-শাসিত কেরলকে।

আবাস যোজনা, ১০০ দিনের কাজ-সহ নানা প্রকল্পে রাজ্যের পাওনা আটকে রেখে কেন্দ্রীয় সরকার ‘অর্থনৈতিক অবরোধ’ তৈরি করছে বলে সরব তৃণমূল। বারবার এই প্রশ্নে কেন্দ্রকে নিশানা করার পাশাপাশিই স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই অভিযোগে কলকাতায় ধর্নাতেও বসেছেন। এ বার পিনারাই বিজয়নের কেরল সরকারের অভিযোগ, দক্ষিণের ওই রাজ্যের উপরে ‘আর্থিক নিষেধাজ্ঞা’ চাপাতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার। ঘটনাচক্রে, শনিবার দিল্লিতে নীতি আয়োগের বৈঠকে যাননি বাংলার মমতা এবং কেরলের বিজয়নের কেউই।

নতুন বিতর্কের সূত্রপাত কেরল সরকারের ঋণ নেওয়ার পরিমাণ কাটছাঁট করে দেওয়া ঘিরে। সে রাজ্যে ঋণ করার অনুমোদিত সীমা ছিল ৩২ হাজার ৪৪২ কোটি টাকা। সেই পরিমাণ প্রায় অর্ধেক কমিয়ে দিয়ে ১৫ হাজার ৩৯০ কোটিতে নামিয়ে আনা হয়েছে। এই পদক্ষেপকেই ‘অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা’ হিসেবে দেখছে কেরলের বাম সরকার। কেন্দ্রের মনোভাবের বিরুদ্ধে নাগরিক সমাজকেও প্রতিবাদে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে সিপিএম।

কেরলের অর্থমন্ত্রী এবং সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কে এন বালাগোপালের বক্তব্য, ‘‘আর্থিক দায়-দায়িত্ব সংক্রান্ত আইন রয়েছে। সেই অনুযায়ীই কেরল ৩২ হাজার ৪৪২ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ পেতে পারে। কিন্তু আইন-কানুনের কোনও কিছুই কেন্দ্র মানছে না। ঋণের অনুমোদিত অঙ্ক অর্ধেক কমিয়ে দিয়ে ১৫ হাজার ৩৯০ কোটি করে দেওয়া হয়েছে। কেন এমন পদক্ষেপ, তার কোনও ব্যাখ্যাও কেন্দ্রের তকফে দেওয়া হয়নি।’’ সরকারের পাশাপাশিই শাসক সিপিএম নেতৃত্বের দাবি, কেন্দ্রের কোনও সহায়তা ছাড়াই রাজ্যের মানুষের উন্নয়ন ও সামাজিক সুরক্ষার জন্য বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে টাকা খরচ করা হচ্ছে। একে কেন্দ্রের নীতির জন্য আর্থিক সঙ্কট দেখা দিচ্ছে। তার পরে আবার রাজ্যের আর্থিক বিষয়ে কেন্দ্র ‘হস্তক্ষেপ’ও করছে। যে ধরনের অভিযোগ বাংলাতেও করে থাকেন তৃণমূলের নেতৃত্ব।

এমতাবস্থায় কেরলের মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন মন্তব্য করেছেন, ‘‘কেরলে বাম সরকার টানা ক্ষমতায় রয়েছে ২০১৬ সাল থেকে। আর এই ৭ বছর ধরেই কেন্দ্রের বিজেপি সরকার গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে, কী ভাবে নতুন নতুন পদ্ধতিতে কেরল সরকার এবং রাজ্যের মানুষকে হেনস্থা করা যায়! কেন্দ্রের এই সরকার সংবিধান বা গণতন্ত্রের কোনও কাঠামোই মানে না।’’ বিজেপির কেরল রাজ্য সভাপতি কে সুরেন্দ্রনের অবশ্য পাল্টা বক্তব্য, ‘‘রাজ্যের সরকার আর্থিক বিশৃঙ্খলা তৈরি করলে তার দায় কেন্দ্র নেবে কেন?’’ বাংলায় বিজেপি নেতৃত্ব যেমন তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় তহবিলের টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ তোলেন, সুরেন্দ্রনদের গলায় অবশ্য সেই সুর এখনও শোনা যায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kerala Pinarayi Vijayan Mamata Banerjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE