জেলা পরিষদের অনাস্থা ভোটের বিরুদ্ধে ভোট দিতে হুইপ জারি করল জেলা এআইইউডিএফ। জেলা সভাপতি আজিজুর রহমান তালুকদারের স্বাক্ষরিত দলীয় হুইপ আজই জেলা পরিষদের ৭ সদস্যের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। দলীয় হুইপ যাঁরা অমান্য করবেন তাঁদের দল থেকে বহিষ্কার করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
অন্য দিকে, করিমগঞ্জ জেলা কংগ্রেসের এক প্রতিনিধিদল প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি রিপুন বরার সঙ্গে জেলা পরিষদের উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন। প্রদেশ সভাপতি প্রতিনিধিদলকে সাফ জানান, জেলার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সংখ্যালঘু সভানেত্রীকে সরিয়ে সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের সভানেত্রী বসানো কংগ্রেসের জন্য লাভদায়ক নয়। তাই অনাস্থার বিপক্ষে থাকার যে সিদ্ধান্ত জেলা কংগ্রেস নিয়েছে তাতে প্রদেশ নেতৃত্ব একমত। একই সঙ্গে তিনি এ-ও জানান, কংগ্রেসের যে সব পরিষদীয় সদস্য এই সিদ্ধান্ত অগ্রাহ্য করবেন, দল তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।
এক কথায় এআইইউডিএফের দখলে থাকা করিমগঞ্জ জেলা পরিষদ কংগ্রেস সদস্যদের প্ররোচনায় কোনও ভাবেই ভাঙতে দেবে না জেলা কংগ্রেস। বিভিন্ন সময়ে জেলা পরিষদের ১১ সদস্যকে নিয়ে জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব বৈঠকও করেছে। কিন্তু অনাস্থা প্রস্তাবে স্বাক্ষর করা ১০ জন কংগ্রেস সদস্য এই মুহূর্তে পিছু হঠতে রাজি নন। তারা চাইছেন সভানেত্রী নজরানা বেগমের পরিবর্তন। গত কাল করিমগঞ্জ শহরের একটি হোটেলে নিজেদের মধ্যে একটি বৈঠক করেন কংগ্রেসের জেলা পরিষদ সদস্যরা। সেখানে এআইইউডিএফের দু’জন সদস্য, নির্দল সদস্য ছাড়াও বিজেপির একজন সদস্যও উপস্থিত ছিলেন।
আগামী মঙ্গলবার করিমগঞ্জ জেলা পরিষদে সভানেত্রী নজরানা বেগমের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে ভোটাভুটি হবে। অনাস্থা ভোটে জিততে প্রয়োজন পরিষদের দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের ভোট। অর্থাৎ ২০ আসনের জেলা পরিষদে অনাস্থা প্রস্তাবে জিততে ম্যাজিক নম্বর হল ১৪। বর্তমান সভাধিনেত্রী যদি সাতটি ভোট ধরে রাখতে পারেন, তা হলেই তিনি স্বপদে টিকে যাবেন। সে ক্ষেত্রেও সমস্যা রয়েছে। কারণ জেলা পরিষদের সহ-সভাধিনেত্রী নির্মলা দাস এআইইউডিএফ সদস্য হয়েও গত কাল কংগ্রেসের বৈঠকে হাজির ছিলেন। এ ছাড়া করিমগঞ্জ জেলায় দলের একমাত্র বিধায়ক আব্দুল আজিজ খানের ভাই তথা জেলা পরিষদ সদস্য টুনু খান সেই সভায় হাজির ছিলেন। ফলে বিষয়টি জটিল আকার ধারণ করেছে। সে ক্ষেত্রে সহ-সভাধিনেত্রীকে দিয়ে ৬ মাস জেলা পরিষদ চালানো খুব একটা কঠিন কাজ হবে না বলেই রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন। রাজ্যের শাসন ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি। সভাপতি পদে নির্বাচনের জন্য বিজেপি যদি কোনও নোটিফিকেশন না করায় তাহলে ৬ মাস পরিযদ প্রধানের পদে নির্মলা দাস থাকতে পারবেন। তা ছাড়া, সরকার ইচ্ছে করলে সেই মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়াতে পারবে। সে ক্ষেত্রে নির্মলা দাস শুধু একাই শাসক বিজেপিতে যোগ দিলে করিমগঞ্জ জেলা পরিষদ বিজেপির দখলে চলে যাবে। বিজেপির একজন পরিষদ সদস্য থাকার পরও বিজেপি দখল করতে পারবে জেলা পরিষদ।
তবে এআইইউডিএফের দখলে থাকা করিমগঞ্জ জেলা পরিষদ নিয়ে চিন্তার কোন কারণ নেই বলে জানিয়েছেন দলের সভাপতি আজিজুর রহমান তালুকদার। তাঁর কথায়, দলীয় বিধায়ক আব্দুল আজিজ খান নিজের ভাইকে শেষ পর্যন্ত বুঝিয়ে অনাস্থার বিপক্ষে রাখতে পারবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy