‘জঙ্গিদের ডেরা’, ‘দুর্নীতির আতুঁড়ঘর’— এমন নানা নামেই ডাকা হচ্ছে হরিয়ানার আল-ফালাহ্ বিশ্ববিদ্যালয়কে! প্রায় প্রতি দিনই কোনও না কোনও কারণে সংবাদের শিরোনামে উঠে আসছে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি। এ-ও জল্পনা শুরু হয়েছে যে, এ বার বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে তালা পড়বে! নানা প্রশ্ন, জল্পনা-কল্পনায় আতঙ্কিত পড়ুয়ারা। তাঁদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তায় অভিভাবকেরা। সকলেই চান বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে এ ব্যাপারে স্পষ্ট বার্তা। সেই আবহে এ বার কর্তৃপক্ষের পক্ষে জানানো হল, বন্ধ হবে না বিশ্ববিদ্যালয়।
আল-ফালাহ্ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে জুড়ে গিয়েছে দিল্লি বিস্ফোরণকাণ্ড এবং জঙ্গি মডিউল! তার পর থেকেই সম্ভাবনার কথা ভাসতে শুরু করেছে। অনেকেই ডাক্তারি প্রবেশিকা পরীক্ষায় (নিট) উত্তীর্ণ হয়ে ভর্তি হয়েছেন হরিয়ানার ফরিদাবাদের এই বিশ্ববিদ্যালয়ে। নতুন বর্ষের ক্লাসও শুরু হয়েছে। এই আবহে যদি বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যায় কিংবা সরকারি স্বীকৃতি বাতিল হয়ে যায়, তবে হাজার হাজার পড়ুয়ার ভবিষ্যৎ কী হবে? অনেক পড়ুয়ার প্রশ্ন, ‘‘আমরা তো পড়তে এসেছি। নিজেদের কেরিয়ার গড়তে এসেছি। আমাদের অপরাধটা কোথায়?’’
আরও পড়ুন:
শুধু পড়ুয়ারা নন, তাঁদের অভিভাবকদের মনেও একই প্রশ্ন। এ নিয়ে বেশ কয়েক জন অভিভাবক দেখা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে। উদ্বেগপ্রকাশ করে তাঁকে চিঠিও দিয়েছেন। উদ্বেগের কারণ, জাতীয় চিকিৎসা কমিশন কি স্বীকৃতি প্রত্যাহার করে নেবে? তা হলে তো পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে চলে যাবে! এই উদ্বেগের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হল, এমন কিছুই হবে না।
আল ফালাহ্ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা জাওয়াদ সিদ্দীকী ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছেন। জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ), দিল্লি, জম্মু-কাশ্মীর এবং হরিয়ানা পুলিশ এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে তদন্ত চলাচ্ছে। তার মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ে পঠন-পাঠন চলছে। কিন্তু যে ভাবে ক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা গোপন কীর্তি এবং দুর্নীতি প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে এবং যে ভাবে ক্রমাগত নানা আইনি জটিলতায় আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে পড়ছে আল ফালাহ্, তা পড়ুয়া এবং তাঁদের অভিভাবকদের রক্তচাপ বাড়িয়ে দিয়েছে। পড়ুয়াদের বেশির ভাগই এখন আতঙ্কে রয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যাবে না তো? সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এক অধ্যাপক বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হবে না।’’