প্রায় বছর চারেক ধরে একত্রবাসের পরে সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায় উত্তরপ্রদেশের এক যুগলের। এ অবস্থায় প্রেমিকের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে সহবাসের অভিযোগ তোলেন তরুণী। তরুণের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা দায়েরের আবেদন জানিয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন তরুণী। তবে তাঁর আবেদন খারিজ করে দিয়েছে ইলাহাবাদ হাই কোর্ট। আদালতের পর্যবেক্ষণ, পরস্পরের সম্মতিতে কয়েক বছর ধরে শারীরিক সম্পর্কের পরে কেউ বিয়েতে রাজি না-হলে, সেটিকে অপরাধ বলে গণ্য করা যায় না।
হাই কোর্টের বিচারপতি অরুণ কুমার সিংহ দেশওয়ালের বেঞ্চে মামলাটি চলছিল। সেখানে বিচারপতি জানান, দুই প্রাপ্তবয়স্ক দু’বছরের বেশি সময় ধরে একত্রবাস করছেন। এ ক্ষেত্রে ধরে নেওয়া যায়, তাঁরা স্বেচ্ছায় এই ধরনের সম্পর্কে একসঙ্গে থাকতে শুরু করেন। এর কী কী পরিণতি হতে পারে, তা-ও তাঁরা সম্পূর্ণ ভাবে জানতে বলেই ধরে নেওয়া যায়। ফলে বিয়ের মিথ্যা প্রতিশ্রুতির কারণে অভিযোগকারী এই সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন— এ ক্ষেত্রে এই যুক্তি গ্রহণযোগ্য নয় বলেই জানিয়েছে আদালত। বিয়ের প্রতিশ্রুতি না-থাকলে তাঁদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন হত না, এমন কোনও অভিযোগও এ ক্ষেত্রে নেই।
বস্তুত, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাসের অভিযোগে ধর্ষণের মামলা রুজু হওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি হওয়ায় অতীতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্টও। কয়েক মাস আগেই শীর্ষ আদালত জানিয়েছিল, কোনও প্রেম যদি সঠিক পরিণতি না-পায় এবং সম্পর্ক ভেঙে যায়, সে ক্ষেত্রে আদর্শগত ভাবে ধর্ষণের মামলা রুজু হওয়া উচিত নয়। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এমএম সুন্দরেশ এবং বিচারপতি রাজেশ বিন্দালের বেঞ্চ সেই সময় জানিয়েছিল, বর্তমান সমাজে যখন নৈতিক মূল্যবোধের পরিবর্তন হচ্ছে। ফলে এই বিষয়টিতে আরও গুরুত্ব দেওয়া উচিত।
আরও পড়ুন:
বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে সহবাসের ওই মামলায় সুপ্রিম কোর্ট মামলাকারীর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিল। অভিযোগকারী মহিলার উদ্দেশে শীর্ষ আদালত বলেছিল, “আপনি যদি এতই সরল হতেন, তা হলে আমাদের কাছে আসতেন না। (ঘটনার সময়ে) আপনি প্রাপ্তবয়স্ক ছিলেন। আপনাকে ঠকিয়ে বিশ্বাস করানো হয়েছে যে আপনার সঙ্গে বিয়ে হবে, এটি হতে পারে না। সবার প্রতি যথাযথ সম্মান রেখে আমরা বলতে পারি যে বর্তমানে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে নৈতিকতার ধারণা আলাদা।”