পর পর টানা ছ’রাত নিয়ন্ত্রণরেখায় সংঘর্ষবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে গুলি চালিয়েছে পাক সেনা। উত্তেজনার এই আবহে মঙ্গলবার রাতে ভারতীয় সেনার ডিজিএমও (ডিরেক্টর জেনারেল অফ মিলিটারি অপারেশনস) লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাজীব ঘাই পাক সেনার ডিজিএমও-র সঙ্গে হটলাইনে কথা বলেছেন বলে সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে। সূত্রের খবর, পাকিস্তানকে সতর্ক করে দিয়েছেন তিনি। যদিও ফোনালাপের পরও রাতে গুলিবর্ষণ অব্যাহত রাখে পাক সেনা। এমনকি, বুধবার রাতে নিয়ন্ত্রণরেখার পাশাপাশি জম্মু-কাশ্মীরের পরগওয়াল সেক্টরে আন্তর্জাতিক সীমানাতেও গোলাবর্ষণ করে পাকিস্তান সেনাবাহিনী।
প্রকাশিত খবরে দাবি, এলওসি-তে সংঘর্ষবিরতি চুক্তি ভেঙে পাক সেনার গুলি-গোলা বর্ষণ নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাজীব। প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার পর্যন্ত টানা পাঁচ রাত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করে গুলিবর্ষণ করেছে পাক সেনা। ভারতীয় সেনা জানিয়েছে, সোমবার রাতে কাশ্মীরের কুপওয়ারা এবং বারামুলা জেলার কাছে নিয়ন্ত্রণরেখার অপর প্রান্ত থেকে বিনা প্ররোচনায় গুলিবর্ষণ শুরু করেছে পাকিস্তানি সেনা। কাশ্মীরের আখনুর সেক্টরের বিপরীত প্রান্ত থেকেও গুলি চালিয়েছে পাক ফৌজ। মঙ্গলবার রাতেও তার পুনরাবৃত্তি হয়েছে। জবাব দিয়েছে ভারতীয় সেনাও।
আরও পড়ুন:
প্রসঙ্গত, এলওসি এলাকায় সংঘর্ষবিরতি কার্যকর করতে ২০০৩ সালে একমত হয়েছিল নয়াদিল্লি-ইসলামাবাদ। ২০২১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ভারত ও পাকিস্তান সংঘর্ষবিরতি চুক্তি পুনর্নবীকরণ করেছিল। খাতায়কলমে এই নিয়ম এখনও বহাল। কিন্তু, অতীতেও দু’দেশের সেনা পরস্পরের বিরুদ্ধে সংঘর্ষবিরতি ভঙ্গের অভিযোগ তুলেছে। সূত্রের খবর, সংঘর্ষবিরতি চুক্তির প্রাথমিক পর্যায়ে ভারত ও পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর ডিজিএমও-প্রতিনিধি স্তরে প্রত্যেক বৃহস্পতিবার একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হত। ওই ‘ফ্ল্যাগ মিটিং’-এ ব্রিগেডিয়ার স্তরের অফিসারেরা যোগ দিতেন। কিন্তু পরবর্তী সময় তা অনিয়মিত হয়ে পড়ে। শুধু এলওসিতে সংঘর্ষবিরতি ভঙ্গ নয়, পঞ্জাবের আন্তর্জাতিক সীমান্তেও প্রথা ভেঙে পাক রেঞ্জার্স বাহিনী রিষড়াবাসী বিএসএফ জওয়ান পূর্ণম কুমার সাউকে আটক করায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে। এই আবহে দুই ডিজিএমও-র হটলাইন-বার্তালাপ ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করা হচ্ছে।