দিল্লিতে অনিয়ন্ত্রণ বাজি পোড়ানোর পিছনে কি কাজ করছে বিজেপি এবং সঙ্ঘ পরিবারের প্রচ্ছন্ন মদত? কেউ কেউ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের দিকে আঙুল তুললেও বিজেপি নেতা-সমর্থকদের বাজি পোড়ানো নিয়ে প্রচার লক্ষ্যণীয় ভাবে চোখে পড়েছে।
নীতি আয়োগের প্রাক্তন সিইও অমিতাভ কান্ত আজ সকালে এক্স হ্যান্ডলে লিখলেন, ‘বেঁচে থাকা ও শ্বাস নেওয়ার অধিকারের চেয়ে বাজি ফাটানোর অধিকারকে অগ্রাধিকার দিয়েছে মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট। একমাত্র নির্দয় এবং দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপই দিল্লিকে স্বাস্থ্য ও পরিবেশগত বিপর্যয় থেকে বাঁচাতে পারে।’ কিন্তু সেই সদিচ্ছা কি আছে দেশের নাগরিকদেরই? বিরোধী শিবিরের অভিযোগ, ‘হিন্দুদের উৎসব দীপাবলি’-তে দেদার বাজি ফাটাতেই হবে বলে লাগাতার প্রচার চালিয়ে গিয়েছে বিজেপি ও সঙ্ঘ পরিবার। বাজির বিরোধিতা যাঁরা করেছেন, তাঁদেরই ‘হিন্দুবিরোধী’ বলে দাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে তারা। বিজেপির আইটি সেলের নেতা অমিত মালবীয় গত রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, ‘চার দিকে পটকার জোরালো আওয়াজ সঙ্গীতের মতো শোনাচ্ছে!’ কেউ আবার ‘উদারপন্থীদের’ কটাক্ষ করে মধ্যরাতে বাজি ফাটার ভিডিয়ো সগর্বে পোস্ট করেছেন। বাজি না কেনার অনুরোধ জানিয়ে আক্রমণের মুখে পড়েছেন ইউটিউবার ধ্রুব রাঠী।
পরিবেশ বিশ্লেষকদের একাংশের যদিও মত, দীপাবলির পরের সকালে তৈরি হওয়া ধোঁয়া ও বিষাক্ত কণার স্তর কেবল কয়েক দিনের উৎসবের ফল নয়। এটি দীর্ঘদিনের নগর পরিকল্পনার ব্যর্থতার প্রতিচ্ছবি। যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি, নির্মাণস্থলের ধুলো, শিল্পাঞ্চলের নির্গমন এবং খোলা জায়গায় আবর্জনা পোড়ানো— সব মিলিয়ে শহরের বাতাস ক্রমশ ভারী হয়ে উঠছে। দিল্লির বর্তমান বিজেপি সরকারের পরিবেশমন্ত্রী মনজিন্দর সিংহ সিরসার দাবি, রাস্তা থেকে ধুলো ঝাঁট দেওয়া হচ্ছে বলেই নাকি সেখানে একিউআই বেশি! দূষণ ও বাজি নিয়ে আপ প্রশ্ন তোলায় তাঁর পাল্টা অভিযোগ, দীপাবলিকে বদনাম করছে দিল্লির পূর্বতন শাসক দল। তারা দশ বছরেও যে দূষণ দূর করতে পারেনি, রাতারাতি তার সমাধান অসম্ভব।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)