করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা ঊর্ধ্বমুখী, তার মধ্যেই সীমান্তে উত্তাপ ছড়িয়েছে চিন। ঘরে-বাইরে চাপে পড়া মোদী সরকার আজ প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসকে আক্রমণ শানাতে ময়দানে নামাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে। উপলক্ষ, জরুরি অবস্থার ৪৫তম বর্ষপূর্তি। জরুরি অবস্থা জারি করার মানসিকতার সঙ্গে বর্তমান গাঁধী পরিবারের তুলনা টেনে অমিত শাহ বলেন, “এখনও দলে কেন স্বৈরাচারী মনোভাবের অবসান ঘটেনি, তা কংগ্রেস নেতাদের নিজেদের প্রশ্ন করা উচিত।”
৪৫ বছর আগে আজকের দিনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধীর নির্দেশে দেশে জরুরি অবস্থা জারি হয়েছিল। সেই ঘটনার উল্লেখ করে টুইটে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, ‘ওই সময়ে গণতন্ত্র রক্ষায় যাঁরা লড়াই করেছিলেন, অত্যাচার সহ্য করেছিলেন তাদের আমার শতকোটি প্রণাম। তাঁদের ত্যাগ ও বলিদান দেশ ভুলবে না।’ কৌশলগত ভাবে প্রধানমন্ত্রী আজ এখানেই থেমে গিয়েছেন। আক্রমণের রাশ তুলে দেওয়া হয় অমিত শাহের হাতে। নিশানা হিসেবে মূলত গাঁধী পরিবারকেই বছে নেন অমিত শাহ।
বিজেপি সূত্রে বলা হয়েছে, এটা পরিকল্পিত ভাবেই করা হয়েছে। শাহের আক্রমণের মূল লক্ষ্য ছিলেন রাহুল গাঁধী। প্রথমে করোনা মোকাবিলা ও লকডাউনের ব্যর্থতা ও তার পরে চিনা সেনার হামলা নিয়ে রাহুল যে ভাবে সরকারকে আক্রমণ শানাচ্ছেন, তাতে খানিক বেকায়দায় কেন্দ্র। পাল্টা হিসেবে অমিত বলেন, ‘আজ থেকে ৪৫ বছর আগে একটি পরিবার ক্ষমতার লোভে দেশে জরুরি অবস্থা চাপিয়েছিল।...শেষ পর্যন্ত অবশ্য লক্ষ লক্ষ মানুষের চেষ্টায় তা প্রত্যাহার করা হয়েছিল। গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়েছিল। আসলে সর্বদাই একটি পরিবারের কাছে দলীয় স্বার্থ জাতীয় স্বার্থের চেয়ে প্রাধান্য পেয়েছে।’
মাঝে কিছু দিন অন্তরালে ছিলেন অমিত শাহ। সে সময়ে তাঁর সঙ্গে শীর্ষ নেতৃত্বের মনোমালিন্য ছাড়া শারীরিক অসুস্থতার খবরও পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু বিজেপির মতে, শাহ দলের কট্টর ভাবমূর্তির প্রতীক। মাঝে করোনা সংক্রমণের সময় সব রাজ্যকে পাশে নিয়ে চলার দায়বদ্ধতা থাকায় সংহতির বার্তা দেওয়ার দায়িত্ব নেন প্রধানমন্ত্রী। এখন আবার রাজনীতির লড়াইয়ের সময়ে কংগ্রেসকে আক্রমণ শানাতে পুরোভাগে আনা হল অমিত শাহকে।
অমিতকে পাল্টা আক্রমণ করতে ছাড়েনি কংগ্রেস। দলের মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বলেন, ‘দেশের অধিকাংশ মানুষ বিশ্বাস করেন কেবল দু’জন ব্যক্তি সরকার চালাচ্ছেন। আর বাকিরা এলেবেলে! ঘোড়া কেনাবেচা করে অন্যের বিধায়ক ভাঙানো কেন বিজেপির একমাত্র অবদান হবে ? নেহরু-গাঁধী পরিবারকে এত ঘৃণা করার কারণটাই বা কী!’