সদ্য কয়েক দিন আগেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছিলেন, ভবিষ্যতে ইংরেজিতে কথা বলা লজ্জার হবে। এই নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। আজ কেন্দ্রীয় সরকারের রাষ্ট্রভাষা দফতরের সুবর্ণ জয়ন্তী উদ্যাপনে ইংরেজির সঙ্গে সরাসরি সংঘাতের অবস্থান থেকে সরে এসে শাহ বলেন, ‘‘কোনও বিদেশি ভাষার বিরোধিতা হওয়া উচিত নয়। তবে ভাষাজনিত কারণে মানসিক দাসত্বের মনোভাব থেকে বেরিয়ে আসার প্রয়োজন রয়েছে।’’ পাশাপাশি, হিন্দির সঙ্গে অন্য কোনও আঞ্চলিক ভাষার বিরোধ নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি। শাহ বলেন, ‘‘হিন্দি সমস্ত ভারতীয় ভাষার সখী। বিরোধের কোনও প্রশ্নই নেই।’’
নরেন্দ্র মোদী সরকার জাতীয় শিক্ষা নীতির মাধ্যমে পরিকল্পিত ভাবে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার কৌশল নিয়েছে বলে দীর্ঘ দিন ধরে সরব তামিলনাড়ু-কর্নাটকের মতো বিরোধী রাজ্যগুলি। আজ পাল্টা জবাবে শাহ বলেন, ‘‘স্বাধীনতার পরে ভাষাকে অস্ত্র করে দেশকে বিভাজনের একাধিক চেষ্টা করা হয়েছে। আমাদের সরকার তাই ভাষার মাধ্যমে দেশকে ঐক্যবদ্ধ করার লক্ষ্য নিয়েছে। সে কারণে সরকারি কাজে যথাসম্ভব আঞ্চলিক ভাষাব্যবহারের পরিকল্পনা নিক রাজ্যগুলি। এর জন্য প্রয়োজনে রাজ্য সরকারগুলির সঙ্গেও কথা বলবে কেন্দ্র।’’ তার পরেই তিনি যোগ করেন, ‘‘আমি আন্তরিক ভাবে বিশ্বাস করি যে, হিন্দি কোনও ভারতীয় ভাষার বিরোধী নয়।’’ তাঁর মতে, হিন্দি এবং অন্যান্য ভারতীয় ভাষা একসঙ্গে দেশের সংস্কৃতির আত্মমর্যাদাকে তার চূড়ান্ত গন্তব্যে নিয়ে যেতে পারে।
আজ ইংরেজি-সহ অন্য কোনও বিদেশি ভাষার সমালোচনা না করলেও, ইংরেজি ভাষা নিয়ে যে দাসত্বের মানসিকতা রয়ে গিয়েছে, সে কথা শোনা গিয়েছে শাহের মুখে। তা থেকে বেরিয়ে আসার উপরেও জোর দিয়েছেন তিনি। শাহ বলেন, ‘‘সকলেরই দাসত্বের মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসা উচিত। যত দিন না এক জন ব্যক্তি তাঁর নিজের ভাষাকে নিয়ে গর্ববোধ করবেন এবং নিজের ভাষায় মতপ্রকাশ করবেন, তত দিন পর্যন্ত সেই ব্যক্তি দাসত্বের মানসিকতা থেকে মুক্ত হতে পারবেন না।” তিনি আরও বেশি করে সরকারি কাজ ও উচ্চশিক্ষা মাতৃভাষায় দেওয়ার উপরে জোর দেন।
শাহ বলেন, ‘‘অতীতে পুলিশের কনস্টেবল পদে নিয়োগ পরীক্ষা কেবল হিন্দি ও ইংরেজিতে হত। এখন ৯৫ শতাংশ আবেদনকারী ওই পরীক্ষা নিজের মাতৃভাষায় দিয়ে থাকেন। একই ভাবে জয়েন্ট এন্ট্রান্স বা ডাক্তারির নিট-ও এখন ১৩টি আঞ্চলিক ভাষায় দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন পরীক্ষার্থীরা, দাবি করেন শাহ।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)