দেশে যাঁরা ইংরেজিতে কথা বলেন, তাঁদের লজ্জিত হতে হবে! বৃহস্পতিবার একটি বইপ্রকাশ অনুষ্ঠানে গিয়ে এমনটাই বললেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তাঁর এই মন্তব্যের ব্যাখ্যাও দিয়েছেন শাহ। জানিয়েছেন, ভারতের ভাষাতাত্ত্বিক ঐতিহ্যকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করার সময় এসেছে। সে ক্ষেত্রে এমন একটি সমাজ গড়ে উঠবে, যেখানে কেউ ইংরেজিতে কথা বলতে লজ্জা পাবেন।
মাতৃভাষার প্রচলন এবং প্রসারের উপর জোর দেওয়ার কথা বলেন শাহ। জানান, দেশের আঞ্চলিক ভাষাগুলি রত্নবিশেষ। সেই সূত্রেই তিনি বলেন, “এই দেশে যাঁরা ইংরেজিতে কথা বলেন, তাঁদের খুব শীঘ্রই লজ্জিত হতে হবে। অচিরেই এই ধরনের সমাজ গঠিত হবে। আমাদের ভাষাগুলি ছাড়া প্রকৃত ভারতবাসী হয়ে উঠতে পারব না।” একই সঙ্গে শাহের সংযোজন, “আমাদের দেশ, সংস্কৃতি, ইতিহাসকে বুঝতে কোনও বিদেশি ভাষা সহায়ক হতে পারে না। আমি জানি লড়াইটা কত কঠিন। কিন্তু আমি এটাও জানি, ভারতীয় সমাজ এটা জিতবে। আমরা আমাদের ভাষাতেই দেশ চালাব।”
ভাষার সূত্রেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘পঞ্চপ্রাণ’ বা পাঁচ শপথের কথা উল্লেখ করেন শাহ। তিনি বলেন, “অমৃতকালে মোদীজি ‘পঞ্চপ্রাণ’-এর শিলান্যাস করেছেন। উন্নত ভারত গড়ে তুলতে সব ধরনের দাসত্ব থেকে মুক্ত হতে হবে। নিজেদের ঐতিহ্য সম্পর্কে গর্বিত হতে হবে। একতা এবং সৌভ্রাতৃত্ব রক্ষায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ থাকতে হবে। কর্তব্যবোধ সম্পর্কে প্রতিটি নাগরিকের মধ্যে চেতনা জাগাতে হবে। ১৩০ কোটি ভারতীয় এই শপথ নেবে।” তার পরেই শাহ জানান, ২০৪৭ সালে উন্নত ভারত গড়ে তুলতে ভারতের ভাষাগুলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে।
প্রসঙ্গত, তামিলনাড়ু-সহ দক্ষিণের বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলি কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে। তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন অভিযোগ তুলেছেন যে, নয়া শিক্ষানীতি (এনইপি বা নেপ)-র মাধ্যমে হিন্দি চাপানোর চেষ্টা করছে কেন্দ্র। এই বিতর্কের মধ্যেই শাহ চলতি বছরের গোড়ায় জানিয়েছিলেন, তাঁর মন্ত্রক ডিসেম্বর মাস থেকে রাজ্যগুলির সঙ্গে আঞ্চলিক ভাষাতেই যোগাযোগ করবে।