Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

কার হাতে সিন্দুকের চাবি, রহস্য বিজেপিতে

গত সাড়ে চার বছর ধরে এটি রহস্য হয়েই থেকে গিয়েছে। আজ সেই রহস্যের পর্দা সরালেন খোদ বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। নিজেই ঘোষণা করলেন, ‘‘বিজেপির জাতীয় কোষাধ্যক্ষ রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়ালই।’’

দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:৪৯
Share: Save:

দেশের অন্যতম ধনী দল বিজেপি। কিন্তু এ দলের কোষাগার সামলান কে?

গত সাড়ে চার বছর ধরে এটি রহস্য হয়েই থেকে গিয়েছে। আজ সেই রহস্যের পর্দা সরালেন খোদ বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। নিজেই ঘোষণা করলেন, ‘‘বিজেপির জাতীয় কোষাধ্যক্ষ রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়ালই।’’

কিন্তু ঘোষণাটি নিছক মৌখিকই। খাতায়-কলমে এখনও তার কোনও প্রমাণ মেলেনি। অমিতের ঘোষণার পরেও বিজেপির ওয়েবসাইটেও দেখা যাচ্ছে না দলের ‘জাতীয় কোষাধ্যক্ষ’ পদে কে রয়েছেন। এমনকি নির্বাচন কমিশনে দেওয়া বিজেপির আয়ের হিসেবেও কোষাধ্যক্ষের নাম নেই।

এখানেই প্রশ্ন উঠছে, কেন এত হেঁয়ালি? বিজেপির এক সূত্রের অবশ্য দাবি, এর একটি যুৎসই উত্তর রয়েছে। অনেকদিন ধরেই বিজেপিতে একটি প্রথা চালু রয়েছে, ‘এক নেতা, এক পদ’। অর্থাৎ, কোনও নেতাকে দু’টি পদে রাখা যাবে না। বিজেপি ক্ষমতায় আসার পরে পীযূষকে কেন্দ্রে মন্ত্রী করা হয়েছে। ফলে আনুষ্ঠানিক ভাবে তাঁকে দলের কোনও পদে রাখা যায় না। সে কারণেই ২০১৪ সালে অমিত শাহ নিজের টিম ঘোষণার সময় কোষাধ্যক্ষের পদটি উহ্য রেখেছেন।

অতীতেও পীযূষকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছে, দলের কোষাধ্যক্ষ কী তিনিই? সে উত্তরও এড়িয়ে গিয়েছেন রেলমন্ত্রী। কিন্তু বিরোধীরা নানা সময়ে প্রশ্ন তুলেছে, এই বিজেপিই এখন দেশের সবচেয়ে ধনী দল। সব দলের মধ্যে সিংহভাগ আয় তাদেরই। এমনকি বন্ডের মাধ্যমে কর্পোরেট সংস্থা থেকে চাঁদা তোলার যে প্রথা কেন্দ্র চালু করেছে, তার ৯৫ শতাংশই এখন বিজেপির দখলে। বিরোধীদের প্রশ্ন, পীযূষই যদি বিজেপির কোষাধ্যক্ষ হন, তাঁর হাতেই তো দেশের অর্থ মন্ত্রকের ভার তুলে দেওয়া হয়েছিল তিন মাসের জন্য। যখন অরুণ জেটলি অসুস্থ ছিলেন। এটি কী ক্ষমতার সংঘাত নয়?

বিজেপির এক নেতার যুক্তি, ‘‘সরকারের সব মন্ত্রীই দলের সৈনিক। প্রধানমন্ত্রীও বিজেপিরই কর্মী। ফলে দল ও সরকারে ভেদ নেই।’’ কিন্তু সব দলই একটি নিজস্ব সংবিধান মেনে চলে। চার বছর ধরে রহস্য জিইয়ে রেখে যখন মৌখিক ঘোষণা হল, তার পরেও কোষাধ্যক্ষ পদ নিয়ে এত লুকোচুরি কেন?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE