Advertisement
E-Paper

বাংলাকে ‘বাংলাদেশি ভাষা’ বলে উল্লেখ দিল্লি পুলিশের! তৃণমূলের নিশানায় কেন্দ্র, কিন্তু ভুল দেখছে না বঙ্গের বিজেপি

সম্প্রতি নয়াদিল্লির লোদী কলোনি থানার পুলিশ অধিকারিক অমিত দত্ত একটি চিঠি পাঠান পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বঙ্গভবনের অফিসার-ইন-চার্জকে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ওই চিঠিতে বাংলা ভাষাকে বাংলাদেশিদের ভাষা বলেছে দিল্লি পুলিশ।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০২৫ ১৮:১৭
দিল্লি পুলিশ বাংলা ভাষাকে বাংলাদেশি ভাষা বলেছে, কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে তোপ তৃণমূলের।

দিল্লি পুলিশ বাংলা ভাষাকে বাংলাদেশি ভাষা বলেছে, কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে তোপ তৃণমূলের। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের অধীন দিল্লি পুলিশ বাংলা ভাষাকে বাংলাদেশিদের ভাষা বলে অভিহিত করেছে। রবিবার নিজেদের সমাজমাধ্যম অ্যাকাউন্টে এমনটাই অভিযোগ করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে, এই দাবিও তুললেন। পাশাপাশি অভিযুক্ত পুলিশ আধিকারিককে বরখাস্ত করার পক্ষেও সওয়াল করেছেন অভিষেক।

সম্প্রতি নয়াদিল্লির লোদী কলোনি থানার পুলিশ অধিকারিক অমিত দত্ত একটি চিঠি পাঠান পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বঙ্গভবনের অফিসার-ইন-চার্জকে। তৃণমূলের অভিযোগ, ওই চিঠিতে বাংলা ভাষাকে বাংলাদেশিদের ভাষা বলে অভিহিত করেছে দিল্লি পুলিশ। এমন চিঠি হাতে পাওয়ার পরেই ক্ষোভে ফুঁসে ওঠে তৃণমূল শিবির। তবে কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপিও পাল্টা জবাবে জানিয়েছে, বাংলা ভাষায় কথা বললেই কেউ ভারতীয় হয়ে যায় না। তাই তৃণমূল অভিযোগ করার আগে বিষয়টি যাচাই করে দেখুক।

নিজের এক্স হ্যান্ডলের পোস্টে অভিষেক লিখেছেন, “মাসের পর মাস ধরে বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলিতে বাংলাভাষীদের লক্ষ্য করে হেনস্থা, হয়রানি ও বেআইনি আটক চলছেই। এ বার সেই আক্রমণের এক চরম রূপ দেখা গেল— দিল্লি পুলিশের একটি সরকারি চিঠিতে বাংলা ভাষাকে ‘বাংলাদেশি ভাষা’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।” তিনি আরও লিখেছেন, “এটা শুধুমাত্র টাইপো বা লিপিকারের ভুল নয়— এটা বিজেপির এক পরিকল্পিত প্রচেষ্টা। এর উদ্দেশ্য বাংলাকে কলঙ্কিত করা, আমাদের সাংস্কৃতিক পরিচয়কে খাটো করা এবং রাজনৈতিক স্বার্থে পশ্চিমবঙ্গকে বাংলাদেশ বলে দেখানো।”

ডায়মন্ডহারবারের তিন বারের সাংসদ লিখেছেন, “এটি সরাসরি ভারতীয় সংবিধানের ৩৪৩ ধারা ও অষ্টম তফসিল-এর লঙ্ঘন। ‘বাংলাদেশি ভাষা’ বলে কোনও ভাষার অস্তিত্ব নেই। বাংলা ভাষাকে বিদেশি ভাষা বলা কেবল অপমান নয়, এটা আমাদের পরিচয়, সংস্কৃতি এবং অস্তিত্বের ওপর এক নির্মম আঘাত। বাঙালিরা নিজেদের মাতৃভূমিতে বহিরাগত নয়। এই কারণেই আমরা বিজেপিকে ‘বাংলা-বিরোধী’ ও ‘জমিদার’ বলি। ওরা ভারতের বৈচিত্র্যকে সম্মান করে না, বরং বিভাজনের রাজনীতি করে বাঁচে।”

সমাজমাধ্যমে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের সুরে তৃণমূলের তরফে লেখা হয়েছে, “বিজেপি বাংলা বিদ্বেষের সকল সীমা পার করে ফেলছে। বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলিতে একের পর এক বাংলাভাষী শ্রমিকের হেনস্থা ও গ্রেফতারের পর, এ বার অমিত শাহের দিল্লির পুলিশ সব সীমা অতিক্রম করে আমাদের মাতৃভাষা বাংলাকে আনুষ্ঠানিক ভাবে ‘বাংলাদেশি ভাষা’ বলে দাগিয়ে দিল।” পোস্টে আরও বলা হয়েছে, “কোনও ভুল নয় — এটি একটি ইচ্ছাকৃত অপমান, পরিকল্পিত চক্রান্ত, যেখানে সংবিধানে স্বীকৃত এবং ধ্রুপদী ভাষার মধ্যে অন্যতম একটি ভাষাকে পরিচয়হীন করে দেওয়া হচ্ছে এবং কোটি কোটি বাংলাভাষী ভারতবাসীকে নিজেদের দেশেই বহিরাগত হিসেবে তুলে ধরার অপচেষ্টা চলছে।”

তৃণমূলের তরফে আরও বলা হয়েছে, “বাংলা ভাষায় সারা বিশ্বে ২৫ কোটিরও বেশি মানুষ কথা বলেন। এটি ভারতের ২২টি সরকারি ভাষার মধ্যে একটি। সেই ভাষাকে ‘বাংলাদেশি’ বলা কেবলই একটি ঘৃণ্য অপমান নয়, ভাষাটির ভারতীয় পরিচয় মুছে দেওয়ার, তার বৈধতা খারিজ করার এবং বাংলাভাষী মানুষদের বহিরাগত প্রমাণ করার নির্লজ্জ চেষ্টা।”

তৃণমূলের এমন আক্রমণের জবাবে বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “একদম ঠিক ভাষাই ব‍্যবহার করা হয়েছে। আপনি বাংলাদেশের একটা বই এনে পড়ুন। আর পশ্চিমবঙ্গের একটা বই এনে পড়ুন। আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন, কোনটা সুবোধ সরকার লিখেছেন, আর কোনটা বাংলাদেশের সফিকুল ইসলাম লিখেছেন। ওই ভাষাটা পড়লেই বোঝা যায়। সুতরাং বাংলা ভাষায় কথা বললেই সে ভারতবাসী হয়ে যাবে, বাংলা ভাষায় কথা বললেই তার নামটা ভোটার লিস্টে রেখে দিতে হবে, এটা হতে পারে না। পরিকল্পিত ভাবে বিভিন্ন জায়গায় নকল আধার কার্ড নিয়ে এখন ওরা বঙ্গভবনের মধ্যেও ঢুকে পড়ছে।”

Bengali Amit Shah Abhishek Banerjee BJP AITC TMC BJP Bengal Delhi Police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy