আর তাঁকে দেখতে পাওয়া যাবে না ‘ইনক্রেডিবল ইন্ডিয়া’-র বিজ্ঞাপনে। গত কাল কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রকের এই ঘোষণার পর থেকেই আলোচনা শুরু হয়েছিল, তবে কি অসহিষ্ণুতা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেই ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডরের আসন খোয়াতে হল আমির খানকে! আজ জবাব মিলল দু’তরফেই।
কিছুটা ক্ষোভের সুরেই অভিনেতা জানালেন, সরকারি সিদ্ধান্ত শিরোধার্য। তবে তিনি থাকুন বা না-ই থাকুন, ভারত ‘ইনক্রেডিবল’-ই থাকবে। মন্ত্রকের অবশ্য দাবি, সবটাই হয়েছে চুক্তিমাফিক। তাদের কিছু করার নেই। এমনকী এ-ও শোনা যাচ্ছে, পর্যটন মন্ত্রকের পরবর্তী অ্যাম্বাসাডর হতে পারেন অমিতাভ বচ্চন। পছন্দের তালিকায় রয়েছে অক্ষয় কুমার, দীপিকা পাড়ুকোন, প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার নামও।
বুধবার কেন্দ্রীয় পর্যটনমন্ত্রী মহেশ মূর্তি জানান, বিজ্ঞাপন সংস্থার সঙ্গে চুক্তি শেষ হয়ে গিয়েছে। আমিরকে আর তাই বিজ্ঞাপনে দেখা যাবে না। এর পরই বিতর্ক দানা বাঁধে, তবে কি অসহিষ্ণুতা নিয়ে মন্তব্যের জেরেই সরকারের এই সিদ্ধান্ত? দু’মাস আগে এক অনুষ্ঠানে আমির বলেছিলেন, দেশ জুড়ে এই অসহিষ্ণু পরিবেশে সন্তানদের নিরাপত্তার কথা ভেবে আতঙ্কিত তাঁর স্ত্রী কিরণ রাও। তিনি আমিরকে জিজ্ঞাসাও করেছেন, দেশ ছেড়ে কি তাঁদের অন্য কোথাও চলে যেতে হবে। এর পরই ‘দেশদ্রোহী’ বলে বিজেপি-সরকারের আক্রমণের মুখে পড়েন অভিনেতা।
আমির আজ মুখ খুললেও অসহিষ্ণুতা প্রসঙ্গে কিছু বলেননি। স্রেফ বলেন, ‘‘এটা পুরোপুরি সরকারি সিদ্ধান্ত, তারা ব্র্যান্ড অ্যাম্বাস্যাডর নিয়োগ করবে কি না। এবং যদি নিয়োগ করা হয়, তা হলে অ্যাম্বাসাডর কে হবেন। সরকারের সিদ্ধান্তকে আমি সম্মান করি।’’ গত ১০ বছর ধরে ‘ইনক্রেডিবল ইন্ডিয়া’-র মুখ ছিলেন আমির। ‘‘এর জন্য আমি গর্বিত ও আনন্দিত,’’ বলেই থেমে যান তিনি। পরে ফের বলেন, ‘‘দেশের জন্য কিছু করতে পেরে আমি খুশি। ভবিষ্যতে সুযোগ পেলে আবারও করব। এ-ও স্পষ্ট করে জানিয়ে দিতে চাই, এখনও পর্যন্ত যে যে সরকারি প্রচারমূলক ছবিতে কাজ করেছি, কোথাও কোনও পয়সা নিইনি...।’’ আমিরের কথায়, ‘‘...আমি ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর থাকি, বা না থাকি, ভারত ‘ইনক্রেডিবল’ই থাকবে!’’
পর্যটনমন্ত্রী কিন্তু আমিরকে সরিয়ে দেওয়ার পিছনে কোনও বিতর্ক রয়েছে বলে মানতে নারাজ। তাঁর কথায়, ‘‘অতিথি দেব ভব-র জন্য একটি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল সরকারের। ওই সংস্থাই বেছে নিয়েছিল আমিরকে। সরকার বাছেনি। এখন ওই সংস্থার সঙ্গে সরকারের চুক্তি শেষ হয়ে গিয়েছে। অতএব আপনা থেকেই আমিরও বিজ্ঞাপনে থাকছেন না।’’
তবে মহেশ মূর্তি মানতে না চাইলেও, বিতর্কিত ভাবমূর্তি যে একটা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, তা স্পষ্ট হয়ে যায় পরের প্রশ্নে। পরবর্তী অ্যাম্বাসাডর কে হবেন? এ প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রকের এক কর্তা জানান, তাদের প্রথম পছন্দ অমিতাভ বচ্চন।
কেন? ‘‘প্রবীণ এই অভিনেতার হাত ধরে গুজরাত পর্যটন অনেকটাই এগিয়েছে। তা ছাড়া, ওঁর যে স্বচ্ছ ভাবমূর্তি রয়েছে!’’ বলেই ফেলেন ওই কর্তা।