বছরশেষে আবাসন ব্যবসায় মন্দা! দেশের সেরা ন’টি শহরে মারাত্মক ভাবে হ্রাস পেয়েছে ফ্ল্যাট বিক্রির পরিমাণ। চাহিদা কমে যাওয়ায় মাথায় হাত পড়েছে তাবড় রিয়্যাল এস্টেট সংস্থার। বড়দিনের আগে পরিসংখ্যান দিয়ে সে কথা জানাল ‘প্রপইক্যুইটি’। তাদের দাবি, এ বছরের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে দেশের শীর্ষ ন’টি শহরে আবাসন বিক্রির সূচক কমতে পারে ১৬ শতাংশ। সে ক্ষেত্রে এই তিন মাসে ফ্ল্যাট বিক্রির অঙ্ক ৯৮ হাজার ১৯-এ গিয়ে নেমে আসবে বলে জানিয়েছে তারা।
বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর গত তিন মাসের আবাসন বিক্রি সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে রিয়্যাল এস্টেট তথ্য বিশ্লেষণকারী সংস্থা ‘প্রপইক্যুইটি’। সেখানে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের পর আর কখনওই ফ্ল্যাট বিক্রিতে এতটা মন্দা দেখা যায়নি। এককথায় এ বছরের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে আবাসন কেনার হার সর্বনিম্ন স্তরে নেমে এসেছে, যা রেকর্ড।
গত বছরের (পড়ুন ২০২৪ সাল) চতুর্থ ত্রৈমাসিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) দেশের সেরা ন’টি শহরে আবাসন বিক্রির পরিমাণ ছিল ১ লক্ষ ১৬ হাজার ১৩৭। এ বছর সেখানে এখনও পর্যন্ত ৯৮ হাজার ১৯টি ফ্ল্যাট বিক্রি হয়েছে। কারণ, ২০২৫ সালে নভি মুম্বই এবং দিল্লি ‘ন্যাশনাল ক্যাপিটাল রিজিয়ন’ বা এনসিআর ছাড়া বাকি সেরা সাতটি শহরেই কমেছে আবাসনের চাহিদা।
বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমের কাছে মুখ খুলেছেন ‘প্রপইক্যুইটি’র প্রতিষ্ঠাতা ও চিফ এক্জ়িকিউটিভ অফিসার (সিইও) সমীর জ়াসুজা। তাঁর কথায়, ‘‘সাধারণত অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে উৎসবের মরসুম থাকার কারণে ফ্ল্যাট কেনার একটা প্রবণতা থাকে। ফলে রিয়্যাল এস্টেট সংস্থাগুলি এই সময় নতুন প্রকল্প শুরু করতে পছন্দ করে। কিন্তু, এ বছর সেই ছবি দেখা যায়নি।’’ ফ্ল্যাটের দাম বৃদ্ধি চাহিদা হ্রাসের অন্যতম কারণ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
এ ব্যাপারে উদাহরণ হিসাবে বেঙ্গালুরুর কথা বলেছে ‘প্রপইক্যুইটি’। সংস্থাটির দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছর (পড়ুন ২০২৪ সালে) অক্টোবর-ডিসেম্বরে কর্নাটকের রাজধানী শহরে ফ্ল্যাট বিক্রির পরিমাণ ছিল ১৫ হাজার ৭৮২। এ বছর সেটা এক শতাংশ কমে ১৫ হাজার ৬০৩-এ নেমে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। অন্য দিকে চেন্নাইয়ে আবাসন বিক্রির অঙ্ক পড়েছে তিন শতাংশ। গত বছর সেখানে ৪,৬৬৮টি ফ্ল্যাট বিক্রি হয়েছিল। এ বছর সেটা কমে দাঁড়িয়েছে ৪,৫৪২।
আরও পড়ুন:
২০২৫ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে হায়দরাবাদ, কলকাতা, মুম্বই এবং পুণেতে আবাসন বিক্রির পরিমাণ কমেছে যথাক্রমে ১৯, ১১, ২৫ এবং ৩১ শতাংশ। এই চার শহরে গত বছর একই সময়সীমায় ১৩ হাজার ৯০২, ৪ হাজার ৪৯৭, ১২ হাজার ২২৩ এবং ২২ হাজার ৯৪০টি ফ্ল্যাট বিক্রি হয়েছিল। এ বার সেটাই হ্রাস পেয়ে ১১ হাজার ৩২৩, ৩ হাজার ৯৯৫, ৯ হাজার ১৩৫ এবং ১৬ হাজার ৯৮৭তে নেমে এসেছে।
অন্য দিকে, আবাসনের চাহিদা নভি মুম্বইয়ে ১৩ শতাংশ এবং দিল্লি এনসিআরে চার শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত বছরের অক্টোবর-ডিসেম্বরে এই দুই শহরে ফ্ল্যাট বিক্রির পরিমাণ ছিল ৭ হাজার ৪৯৬ এবং ১১ হাজার ৭৯২। এ বার সেটা বেড়ে ৮ হাজার ৪৩৪ এবং ১২ হাজার ২১২ হয়েছে বলে জানিয়েছে ‘প্রপইক্যুইটি’।