Advertisement
E-Paper

পদে থেকে লাভ কী, দলে প্রশ্ন ইয়েচুরির

দলের রাজনৈতিক ও কৌশলগত লাইনের প্রশ্নে তাঁর মত পরাস্ত হওয়ায় পলিটব্যুরোর অন্দরে ইয়েচুরি জানিয়ে দিয়েছেন, বারবার মর্যাদা খুইয়ে তাঁর পক্ষে সাধারণ সম্পাদকের পদে থেকে যাওয়া সম্ভব নয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:১৪
সীতারাম ইয়েচুরি

সীতারাম ইয়েচুরি

পার্টি কংগ্রেসের আগেই কেন্দ্রীয় কমিটির ভোটে খারিজ হয়ে গেল সাধারণ সম্পাদকের মত! রাজ্যসভায় তৃতীয় বারের জন্য প্রার্থী হতে না দেওয়ার কয়েক মাসের মধ্যে ফের সীতারাম ইয়েচুরির ইচ্ছায় জল ঢেলে দিল তাঁর দল! এমন ঘটনায় অভূতপূর্ব সঙ্কট তৈরি হল সিপিএমের নেতৃত্বেই।

দলের রাজনৈতিক ও কৌশলগত লাইনের প্রশ্নে তাঁর মত পরাস্ত হওয়ায় পলিটব্যুরোর অন্দরে ইয়েচুরি জানিয়ে দিয়েছেন, বারবার মর্যাদা খুইয়ে তাঁর পক্ষে সাধারণ সম্পাদকের পদে থেকে যাওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু পলিটব্যুরো বলেছে, এখন সরে দাঁড়ালে বিজেপি-র বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সিপিএম কতটা বিভাজনের শিকার, সেই বার্তা প্রকট হয়ে যাবে। তাই পার্টি কংগ্রেসের আগে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না। প্রকাশ কারাটের নেতৃত্বে সিপিএমের যে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব পার্টি লাইনের খসড়া-বিতর্ক পার্টি কংগ্রেসে নিয়ে যেতে রাজি হননি, তাঁরাই আবার পার্টি কংগ্রেস পর্যন্ত সাধারণ সম্পাদককে কাজ চালিয়ে যেতে বলেছেন!

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, রবিবার বৈঠকের শেষে ইয়েচুরি নিজেও তাঁর অব্যাহতি নেওয়ার প্রশ্ন নস্যাৎ করেননি। এই সংক্রান্ত প্রশ্নে তাঁর জবাব, ‘‘দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বাইরে কিছু বলব না। পলিটব্যুরো ও কেন্দ্রীয় কমিটি আমাকে পার্টি কংগ্রেস পর্যন্ত সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করার ভার দিয়েছে।’’

আরও পড়ুন: সঙ্ঘকে ধরে দিল্লির কাছে পৌঁছতে চাইছেন খালেদা

তবে সেই সঙ্গে তিনি প্রকাশ্যে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন, এটা কারও ব্যক্তিগত জয়-পরাজয়ের প্রশ্ন নয়। দলের মধ্যে গণতন্ত্র আছে বলেই কোনও বিষয়ে খোলাখুলি মত যাচাই করা যাচ্ছে। যদিও রাজনৈতিক শিবিরে চর্চা শুরু হয়েছে, ভূ-ভারতে সিপিএমই একমাত্র দল যারা তাদের সাধারণ সম্পাদকের মত বারবার খারিজ করে এবং তাঁকে দিয়েই দলীয় গণতন্ত্রের জয়গান গাওয়ায়!

কেন্দ্রীয় কমিটির প্রথম দু’দিনে মোট ৬১ জন বক্তার মধ্যে ইয়েচুরির পক্ষে বলেছেন ২৪ জন। আর কারাটের পক্ষে ৩৭। শেষ দিনে রবিবার ভোটাভুটিতে ফল দাঁড়িয়েছে কারাট শিবিরের পক্ষে ৫৫-৩১। অর্থাৎ কংগ্রেসের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কোনও রকম সমঝোতা চলবে না— এই খসড়া নিয়েই পার্টি কংগ্রেসে যাচ্ছে সিপিএম।

দলীয় সূত্রের খবর, জম্মু ও কাশ্মীরের ইউসুফ তারিগামি, মহারাষ্ট্রের অশোক ধবলে, কেরলের টমাস আইজ্যাকের মতো ইয়েচুরি সমর্থক কিছু নেতা ভোটের আগেই বৈঠক ছেড়েছিলেন। খগেন দাসের মরদেহ নিয়ে চলে যেতে হয় ত্রিপুরার দুই নেতাকে। শেষমেশ বাংলা, গুজরাত, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, কর্নাটকের মতো রাজ্য ইয়েচুরির দলিলের পক্ষে হাত তুলেছে। তামিলনাড়ুর পাঁচ জনের মধ্যে ইয়েচুরির পক্ষে তিন, কারাটের দিকে দুই! আর কেরল, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলঙ্গানা, হরিয়ানা, দিল্লির মতো রাজ্য কারাটের দলিলের পক্ষে দাঁড়িয়েছে। দিনের শেষে উজ্জীবিত চিত্তে কলকাতা ছেড়েছেন কারাট, এস আর পিল্লাইয়েরা।

শেষ আশা হিসাবে ইয়েচুরি অবশ্য বলছেন, ‘‘এটা খসড়া দলিল। এখানে কংগ্রেসের সঙ্গে কোনও রকম সমঝোতায় যাওয়া যাবে না, এটাই বলা হয়েছে। কিন্তু চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে পার্টি কংগ্রেসে। আমরা বিজেপি-র মোকাবিলায় বৃহত্তর গণতান্ত্রিক শক্তির সমাবেশ চাইলে সে ভাবেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। নির্বাচনের কৌশলও নির্বাচনের আগে ঠিক করতে হবে।’’ কলকাতার সিদ্ধান্ত হায়দরাবাদে গিয়ে বদলে যাবে, এমন আশা অবশ্য করছে না সিপিএমের বড় অংশই!

Sitaram Yechury CPIM Politburo সীতারাম ইয়েচুরি সিপিএম crisis
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy