Advertisement
E-Paper

ভোট গণনার তারিখ নিয়ে ক্ষোভ বরাকে

নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হতেই ক্ষোভ ছড়াল বরাক উপত্যকায়। ৪ এপ্রিল প্রথম দফায় ভোট হবে উপত্যকার ১৫ আসনের সবকটিতে। ডিমা হাসাও জেলার একমাত্র আসনেও সে দিনই ভোটগ্রহণ। কিন্তু অসমে গণনার দিন ধার্য হয়েছে ১৯ মে। সে দিনই ১৯৬১ সালে বাংলাভাষার মর্যাদা রক্ষার লড়াইয়ে শিলচরে ১১ জন কিশোর-কিশোরী প্রাণ দিয়েছিলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৬ ০৩:৩৪

নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হতেই ক্ষোভ ছড়াল বরাক উপত্যকায়। ৪ এপ্রিল প্রথম দফায় ভোট হবে উপত্যকার ১৫ আসনের সবকটিতে। ডিমা হাসাও জেলার একমাত্র আসনেও সে দিনই ভোটগ্রহণ। কিন্তু অসমে গণনার দিন ধার্য হয়েছে ১৯ মে। সে দিনই ১৯৬১ সালে বাংলাভাষার মর্যাদা রক্ষার লড়াইয়ে শিলচরে ১১ জন কিশোর-কিশোরী প্রাণ দিয়েছিলেন।

ওই দিনটি উপত্যকা জুড়ে মর্যাদার সঙ্গে পালিত হয়। রাজ্যের অন্যান্য জেলার বাঙালি এলাকাগুলিতেও ১৯ মে ভাষাশহিদ দিবস পালিত হয়। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ আসেন বরাকের অনুষ্ঠানগুলিতে। থাকেন বাংলাদেশের অতিথিরাও।

বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের কাছাড় জেলা কমিটির সভাপতি তৈমুর রাজা চৌধুরী বলেন, ‘‘বিষয়টি বড় দুর্ভাগ্যজনক। সে দিন আমরা শহিদদের শ্রদ্ধা জানাই। এ বার তা বিঘ্নিত হবে। ওই দিনে ভোটগণনা মেনে নেওয়া যায় না।’’ তাঁরা আগামীকাল নির্বাচন কমিশনের কাছে গণনার তারিখ বদলের আর্জি জানিয়ে ফ্যাক্সবার্তা পাঠাবেন বলে তৈমুরবাবু জানান। তাঁর আক্ষেপ, ‘‘সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনার ভিত্তিতে কমিশন তারিখ চূড়ান্ত করেন। কিন্তু কোনও রাজনৈতিক দল ১৯ মে-র কথা জানাতে পারলেন না!’’

ভাষাশহিদ স্টেশন শহিদ স্মরণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাজীব কর বলেন, ‘‘এটা আমাদের আত্মমর্যাদাকে অপমান করা।’’ সবাই মিলে প্রতিবাদের আহ্বান জানান তিনি। নির্বাচনী সূচি ঘোষণার সামাজিক মাধ্যমগুলোতে ক্ষোভ ব্যক্ত করছেন সাধারণ মানুষও। সকলের প্রশ্ন, এমন দিনেই কেন গণনা?

তবে রাজনৈতিক দলগুলি গণনার তারিখ মৃদু আপত্তি করলেও, কমিশনের কাছে দাবি-আপত্তি জানানোর রাস্তায় যাচ্ছেন না। জেলা কংগ্রেসের সভাপতি, প্রাক্তন সাংসদ কর্ণেন্দু ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এমন দিনে গণনার তারিখ ঠিক করাটা উচিত হয়নি। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হবে।’’ বিজেপির রাজ্য কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাজদীপ রায় বরং জানান, ‘‘১৯ মে একটি পবিত্র দিন। একে আমরা স্মরণীয় করে রাখতে চাই। সে দিনই অসমে বিজেপি সরকার নিশ্চিত হবে।’’

আজ গুয়াহাটিতে সাংবাদিক সম্মেলন করে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন অফিসার বিজয়েন্দ্র বিস্তৃত সূচি প্রকাশ করেন। সেই অনুযায়ী প্রথম দফায় মনোনয়ন পত্র জমার শেষ দিন ১৮ মার্চ। ১৯ মার্চ সেগুলি পরীক্ষা করে দেখা হবে। ২১ মার্চ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করা যেতে পারে।

৪ এপ্রিল প্রথম দফায় ভোট নেওয়া হবে মোট ৬৫ আসনে। কাছাড়ের ৭, করিমগঞ্জের ৫, হাইলাকান্দির ৩ ও ডিমা হাসাও জেলার হাফলং ছাড়াও সে দিন ভোটগ্রহণ হবে বোকাজান, হাওড়ঘাট, ডিফু, বৈঠালাংশু, পানেরি, উদালগুড়ি, মাজবাট, ঢেকিয়াজুলি, বরচলা, তেজপুর, রাঙ্গাপাড়া, সদিয়া, বিশ্বনাথ, বেহালি, গহপুর, বোকাখাত, সরুপাথার, গোলাঘাট, খুমতাই, দেড়গাঁও, যোরহাট, মাজুলি, তিতাবর, মরিয়ানি, টিওক, আমগুড়ি, নাজিরা, মাছমারা, সোনারি, থৌরা, শিবসাগর, বিহপুরিয়া, নাওবৈচা, লখিমপুর, ঢকুয়াখানা, ধেমাজি, জোনাই, মরান, ডিব্রুগড়, লাহোয়াল, দুলিয়াজান, টিংখং, নাহারকাটিয়া, চাবুয়া, তিনসুকিয়া, ডিগবয়, মার্গেরিটা, ডুমডুমা ও চতিয়া।

মুখ্য নির্বাচন অফিসার বিজয়েন্দ্র আরও জানান, বাকি ৬১ আসনে দ্বিতীয় দফায় ১১ এপ্রিল ভোট নেওয়া হবে। এই পর্যায়ে মনোনয়ন পত্র জমার শেষদিন ২১ মার্চ। ২২ মার্চ সেগুলি পরীক্ষা করে দেখা হবে। ২৬ মার্চ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করা যেতে পারে।

তবে উভয় পর্যায়ের জন্যই আজ আদর্শ নির্বাচনী আচরণ বিধি চালু হয়ে গিয়েছে বলে তিনি জানিয়ে দেন।

poll result day barak valley anguish
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy