E-Paper

আবার পুলিশের ছদ্মবেশে হানার আশঙ্কা মণিপুরে

শনিবার রাতে প্রতিবাদী মানব শৃঙ্খল তৈরির কথা ঘোষণা করেছে মেইতেইদের যৌথ মঞ্চ কোকোমি। যাকে কেন্দ্র করে অশান্তি শুরু হতে পারে বলে আশঙ্কা।

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০২৩ ০৮:৪৬
Manipur Violence.

মণিপুরের পাহাড়ে, কুকি গ্রামে ফের ছদ্মবেশে হামলার আতঙ্কে কাঁটা হয়ে আছেন বাসিন্দারা। ছবি: পিটিআই।

রাজ্যে হাজার দেড়েক পুলিশকর্মী সরকারের নির্দেশ অগ্রাহ্য করে ছুটি নিয়েছেন। পুলিশের অস্ত্রাগার থেকে লুঠ হয়েছে অন্তত চার হাজার স্বয়ংক্রিয় রাইফেল, কার্বাইন, মেশিনগান, রকেট লঞ্চার, লাথোড গান। উধাও প্রায় পাঁচ লক্ষ গুলি, মর্টার ও শেল। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, মণিপুর পুলিশ কমান্ডোদের অন্তত ৫০০ ইউনিফর্ম তৈরির বরাত দেওয়া হয়েছে স্থানীয় দর্জিদের। এই অবস্থায় ১৭ ও ১৮ জুন মণিপুরের পাহাড়ে, কুকি গ্রামে ফের ছদ্মবেশে হামলার আতঙ্কে কাঁটা হয়ে আছেন বাসিন্দারা। অন্য দিকে মণিপুরে সঙ্কটের সময়ে প্রয়াত অটলবিহারী বাজপেয়ীর উদ্যোগের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদীর নৈঃশব্দের তুলনা করে এ দিন মোদী সরকারকে বিঁধেছেন বিরোধীরা।

এর আগে ৯ জুন কাংপোকপির খোকেন গ্রামেও এ ভাবেই পুলিশ ও আধাসেনার পোশাকে, জলপাই রঙা জিপে এসে হামলা চালিয়েছিল বন্দুকধারীরা। জনজাতি মঞ্চের দাবি, মেইতেইরা চূড়াচাঁদপুর, পূর্ব ও পশ্চিম ইম্ফলের দিক থেকে আক্রমণ শুরু করতে পারে। তাই নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। সতর্ক করা হয়েছে সেনাকেও। চলছে ফ্ল্যাগ মার্চ। তার মধ্যেই শুক্রবার গভীর রাতে ইম্ফলের পরমপতে শতাধিক যুবক বিজেপির রাজ্য সভাপতি সারদা দেবীর বাড়িতে আগুন লাগানোর চেষ্টা করল। সিআরপি কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে ও শূন্যে গুলি চালিয়ে কোনওমতে তা আটকায়। রাজ্যের প্রভাবশালী মন্ত্রী টি বিশ্বজিৎ সিংহের থংজু বিধানসভা কেন্দ্রের সদর দফতরও পুড়িয়ে দেওয়া হল। বিষ্ণুপুরের কোয়াকতা ও চূড়াচাঁদপুরের কাংভাইতে নিরাপত্তারক্ষী ও হামলাকারীদের মধ্যে দফায় দফায় গুলির লড়াই চলছে। গত রাতে ইম্ফল প্রাসাদ চত্বরের কাছেই দুটি বাড়ি পোড়ানোর চেষ্টা করে জনতা। র‌্যাফ কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে তা আটকেছে। ইম্ফলের ইরিংবাম থানা থেকে ফের অস্ত্র লুঠের চেষ্টা হয়েছিল। তা কোনওমতে রুখেছে নিরাপত্তা বাহিনী।

শনিবার রাতে প্রতিবাদী মানব শৃঙ্খল তৈরির কথা ঘোষণা করেছে মেইতেইদের যৌথ মঞ্চ কোকোমি। যাকে কেন্দ্র করে অশান্তি শুরু হতে পারে বলে আশঙ্কা।

এনপিপির জাতীয় সহ-সভাপতি ইয়ুমনাম জয়কুমার জানান, মণিপুরে এমন অবস্থা চলতে থাকলে জোট সরকার থেকে সমর্থন প্রত্যাহারের কথা ভাববে এনপিপি। তিনি বলেন, দল মণিপুরের অখণ্ডতার সঙ্গে কোনও রকম আপস করবে না। রাজ্যে শান্তি ফেরাতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি পাঠিয়েছে তারা।

আজ দিল্লিতে কংগ্রেস সদর দফতরে ১০টি বিরোধী দলের নেতা মণিপুর নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন। কংগ্রেস ছাড়া হাজির ছিলেন জেডিইউ, সিপিআই, সিপিএম, আপ, এনসিপির মতো দলের নেতারা। কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ বলেন, ‘‘বাইশ বছর আগে, ২০০১ সালের ২১ জুন মণিপুরে শান্তি ফেরাতে আবেদন করেছিলেন অটলবিহারী বাজপেয়ী। হিংসা শুরুর ৬ দিনের মধ্যে সেখানে সর্বদলীয় প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছিলেন তিনি।’’ বিরোধী নেতাদের মতে, অন্য দিকে মোদী মণিপুর নিয়ে এখনও কথা বলেননি। এমনকি সেখানকার বাসিন্দাদের পাশে থাকার বার্তাও দেননি। মণিপুরবাসী এখন ভাবছেন তাঁরা আদৌ ভারতের অং‌শ কি না।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Manipur Violence Manipur

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy