ভারতে আইফোনের উৎপাদন আরও বৃদ্ধি করতে চলেছে অ্যাপ্ল। আমেরিকার বাজারের জন্য আইফোন তৈরি হবে ভারতের কারখানায়। শুধু তা-ই নয়, অ্যাপলের নতুন মডেলও তৈরি হবে সেখানে। অনেকের মতে, শুল্কের প্রভাব কমাতে আমেরিকার বাজারের জন্য আইফোনের উৎপাদনে চিনের প্রভাব কমাতে এই পদক্ষেপ।
ভারতে অ্যাপ্লের পাঁচটি কারখানায় আইফোন তৈরি হয়, যার মধ্যে দু’টি কারখানা সম্প্রতি উদ্বোধন হয়েছে। এই সব কারখানায় আইফোন তৈরির উৎপাদনে জোর দিচ্ছে অ্যাপ্ল। সম্প্রতি অ্যাপ্লের সিইও টিম কুকের সঙ্গে মতপার্থক্য দেখা গিয়েছিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। তিনি স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ছিলেন, আইফোনের উৎপাদন ভারতে বেশি হোক, তা চান না। আমেরিকার বাজারের জন্য আমেরিকাতেই উৎপাদন বৃদ্ধির কথা বলেছিলেন। এমনকি শুল্ক-হুঁশিয়ারিও দেন। তবে সেই হুঁশিয়ারির পরেও পিছপা হননি কুক। তিনি জানিয়েছিলেন, আমেরিকার বাজারের যত আইফোন বিক্রি হয়, তার বেশির ভাগই তৈরি হবে ভারতে।
ব্লুমার্গের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, আইফোন উৎপাদনের ভৌগোলিক অবস্থান পরিবর্তন করায়, ভারত থেকে আইফোনের রফতানি উল্লেখযোগ্য ভাবে বৃদ্ধি হয়েছে। চলতি মাসের শুরুতে অ্যাপ্ল আশঙ্কা করেছিল, শুল্কের প্রভাবে প্রায় ৯৬ হাজার কোটি টাকা ক্ষতির মুখে পড়তে পারে। আগামী মাসেই আত্মপ্রকাশ করবে আইফোন ১৭-এর চারটি মডেল। সেই সব মডেলও ভারতের কারখানাতেই তৈরি হবে। তার পর তা ভারত থেকে পাঠানো হবে আমেরিকায়। শুধু আইফোন ১৭ নয়, আইফোন ১৮-এর উৎপাদনও ভারতে করার পরিকল্পনা করেছে অ্যাপ্ল।
চলতি মাসে কুক জানিয়েছিলেন, আগামী চার বছরের মধ্যে আমেরিকায় অ্যাপ্লের কার্যক্রম সম্প্রসারণের জন্য ৬০ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে। অনেকের মতে, ওই পদক্ষেপ ভারত থেকে নিয়ে যাওয়া আইফোন যাতে আমেরিকার বাজারে শুল্কমুক্ত থাকে, তা নিশ্চিত করার প্রচেষ্টা।
আরও পড়ুন:
চিনের উপর ট্রাম্পের ১৪৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণার পর থেকেই আইফোন উৎপাদন সরানোর কাজ শুরু করে অ্যাপ্ল। তারা আইফোন উৎপাদনে ভারতের উপর জোর দেয়। তবে চিন চাইছে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা যেন দেশ না ছাড়েন। সেই তালিকায় ছিল অ্যাপ্লও। সেই কারণে দেশীয় অনেক সংস্থাকে ভারত-সহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে প্রযুক্তি সরঞ্জাম রফতানি বন্ধ করার ব্যাপারে উৎসাহিত করে। তবে এ ব্যাপারে বেজিং কোনও নির্দেশিকা জারি করেনি। তার পরেই চর্চায় উঠে আসে ভারতে অ্যাপ্লের আইফোন তৈরির সংস্থা তাইওয়ানের বৈদ্যুতিন বহুজাতিক ফক্সকন। জানা যায়, ভারতে তাদের বিভিন্ন কারখানা থেকে ৩০০ জনেরও বেশি চিনা কর্মীকে বাড়ি ফিরে যেতে বলেছে তারা। অধিকাংশ ইঞ্জিনিয়ার এবং প্রযুক্তিবিদ।
তবে সম্প্রতি ভারত এবং চিনের মধ্যে সম্পর্কের সমীকরণ বদল ঘটছে। বদলাচ্ছে বাণিজ্যিক সমীকরণও। ফলে ভারতের বাজারে আইফোন প্রস্তুত নিয়েও নতুন পথ খুলতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।