মনীশ তিওয়ারি
চার বছর আগের সেই শীতের রাতের সামরিক অভ্যুত্থানের খবর ফের রক্তচাপ বাড়াল নয়াদিল্লির।
২০১২ সালে জানুয়ারির মধ্যরাতে তা হলে কি মনমোহন সিংহ সরকারের হাত থেকে ক্ষমতা দখল করতেই দিল্লির দিকে হানা দিয়েছিল সেনাবাহিনী? অন্তত এই প্রথম কোনও রাজনীতিক চার বছর আগের সেই ঘটনা ‘সত্য’ বলে বোমা ফাটালেন। তিনি আর কেউ নন, মনমোহন সিংহ সরকারেরই মন্ত্রিসভার সদস্য মণীশ তিওয়ারি। আর তাঁর এই দাবিতে একই সঙ্গে রক্তচাপ বাড়ল কংগ্রেস ও বিজেপি- উভয়ের। কারণ, কংগ্রেস আমলেই এই ঘটনা ঘটেছিল। সেই সময় এই ঘটনার সত্যতা অস্বীকার করেছিল সরকার। আর যাঁর নেতৃত্বে এই ‘সেনা অভিযান’ হয়েছিল, তৎকালীন সেনাপ্রধান ভি কে সিংহ এখন মোদী সরকারের মন্ত্রী। যে কারণে কংগ্রেস ও বিজেপি উভয়েই একই সঙ্গে এই ঘটনার সত্যতা খারিজ করতে আসরে নেমেছে।
তবে বিজেপির থেকেও মণীশ অস্বস্তি বাড়িয়েছেন তাঁর নিজের দলেই। এক বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে মণীশ দাবি করেন, ‘‘সেই সময় আমি প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলাম। ২০১২ সালের ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য।’’ ২০১২ সালের অগস্টে এই খবর সামনে আসার পরেই মনমোহন সিংহ সরকার নড়েচড়ে বসেছিল। সেনাপ্রধান ভি কে সিংহের বয়স বিবাদ নিয়ে সরকারের সঙ্গে সেই সময় সংঘাত চলছিল। আর ঠিক ওই সময়ই প্রতিরক্ষা মন্ত্রক ও সরকারকে না জানিয়ে মধ্যরাতে হরিয়ানার হিসার ও আগরা থেকে সেনার দুটি শক্তিশালী দিল্লির দিকে অভিযান শুরু করেছিল। খবর সামনে আসার পর তৎকালীন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী এ কে অ্যান্টনি সামরিক অভ্যুত্থানের চেষ্টার কথা উড়িয়ে দেন।
আরও পড়ুন...
মণীশের দাবি ঝেড়ে ফেলল কংগ্রেস, তোপ দাগলেন ভি কে সিংহ
ভি কে সিংহ অবশ্য অবসরের পর সেনা অভ্যুত্থানের কোনও সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছিলেন। জানিয়েছিলেন, এটি সাধারণ সেনা মহড়া। কুয়াশায় মহড়ার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল মাত্র। আজও ভি কে সিংহ মণীশ তিওয়ারির বিরুদ্ধে তোপ দেগে বলেন, ‘‘মণীশ তিওয়ারির কোনও কাজকর্ম নেই বোঝাই যাচ্ছে। আমি একটা বই লিখেছি। মণীশ সেটি পড়ুন। তাতেই সব পরিষ্কার হয়ে যাবে।’’ সরকারের আর এক মন্ত্রী মোখতার আব্বাস নকভি বলেন, ‘‘আমিও প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলাম। এ ধরণের আলোচনার কথা আমার মনে পড়ছে না।’’
কংগ্রেস নেতৃত্বের কাছে অস্বস্তির বিষয় হল, এই ঘটনার সত্যতা কোনও ভাবে স্বীকার করলে সেই সময় মনমোহন সিংহ সরকার ও দলের নেতৃত্বের উপরেই আঁচ পড়বে। তাই মণীশের বিরুদ্ধে তীক্ষ্ণ আক্রমণটি আজ এসেছে খোদ তাঁর দলের থেকেই। এ কে অ্যান্টনি ফের জানিয়েছেন, সেই সময়ের তাঁর দেওয়া বিবৃতিতেই তিনি কায়েম রয়েছেন। আর দলের মুখপাত্র অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি বলেন, ‘‘মণীশ দলের মুখপাত্র নন। তিনি সে সময় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের স্থায়ী কমিটিতেও ছিলেন না। এ দণের বিষয়ে তাঁর কোনও মন্তব্য করাই উচিত নয়।’’ তবে মণীশ হাল ছাড়েননি। তিনি বলেন, ‘‘আমি যা বলেছি, তাতে আর কিছু যোগ বা বিয়োগ করছি না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy