অজিত ডোভাল।
কাশ্মীরে সেনার বিরুদ্ধে ওঠা মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ খারিজ করে দিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। তাঁর যুক্তি, কাশ্মীরে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে রয়েছে পুলিশ ও আধাসেনা। জঙ্গি দমনেই সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে সেনার বিরুদ্ধে কাশ্মীরিদের হেনস্থা করার অভিযোগ ঠিক নয়। উল্টে তাঁর দাবি, বেশিরভাগ কাশ্মীরিই ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করছেন।
গত মাসের শুরুতে সেনা-আধাসেনায় গোটা উপত্যকা মুড়ে দিয়ে অনুচ্ছেদ ৩৭০ রদ করে কেন্দ্র। কাশ্মীরিদের বিক্ষোভ ঠেকাতে সেনা উপত্যকার মানুষের উপর অত্যাচার চালাচ্ছে বলে সরব হয়েছিলেন জম্মু-কাশ্মীর পিপলস মুভমেন্টের নেত্রী শেহলা রশিদ। গত কালই তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ দায়ের হয়। আজ সেনার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রসঙ্গে শেহলার নাম না নিয়ে ডোভাল বলেন, ‘‘কাশ্মীরে সেনার কাজ হল জঙ্গি দমন। পুলিশ ও আধাসেনা দেখে আইন-শৃঙ্খলা। তাই সেনার বিরুদ্ধে কাশ্মীরিদের বাড়িতে ঢুকে অত্যাচারের অভিযোগ কোনও ভাবেই খাটে না।’’
দিল্লিতে এ দিন দেশবিদেশের কিছু সংবাদমাধ্যমের সামনে কাশ্মীর পরিস্থিতির কথা তুলে ধরেন ডোভাল। প্রশ্ন ওঠে, পাঁচ সপ্তাহ ধরে যে ভাবে কাশ্মীরের নেতাদের গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে, তা কতটা আইনগ্রাহ্য। ডোভালের যুক্তি, সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবেই ওই নেতাদের আটক রাখা হয়েছে। যা আইনের চোখে স্বীকৃত। সরকারও আদালতে জবাব দিতে দায়বদ্ধ। আইনের বাইরে কিছু করলে সেখানে জরিমানার মুখে পড়তে হবে সরকারকে। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জানান, এই মুহূর্তে কাশ্মীর, জম্মু ও লাদাখের ১৯৯টি পুলিশ জেলার মধ্যে ১০টিতে বিধিনিষেধ রয়েছে। এই তিন এলাকাতেই অবশ্য ল্যান্ড লাইন টেলিফোন চালু রয়েছে। জম্মু-কাশ্মীরের ভৌগোলিক এলাকার ৯২.৫ শতাংশতেই কোনও বিধিনিষেধ নেই।
ডোভালের এই সব দাবির মধ্যেই আজ প্রায় সাত দিন বাদে পুঞ্চ এলাকায় ভারতীয় গ্রাম লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে পাক সেনা। গ্রামবাসীদের সীমান্ত এলাকা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ দিনই পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা দিবস উপলক্ষে সেনার মনোবল বাড়াতে নিয়ন্ত্রণ রেখায় পৌঁছন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও সেনাপ্রধান জাভেদ বাজওয়া। ইমরান হুমকি দিয়েছেন, পাক সেনা ভারতীয়দের সব আগ্রাসনের জবাব দিতে প্রস্তুত। ইসলামাবাদ জানিয়ে দিয়েছে, ভারতের রাষ্ট্রপতির বিমান পাক আকাশসীমা ব্যবহার করতে পারবে না। সোমবার আইসল্যান্ড-সহ তিন দেশ সফরে যাওয়ার কথা রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রভীশ কুমার বলেছেন, ‘‘যে কোনও স্বাভাবিক দেশ এমন অনুমতি দিয়ে দেয়। পাকিস্তানের সিদ্ধান্তে আমরা হতাশ।’’
গোয়েন্দাদের আশঙ্কা, ইমরানের সীমান্ত সফরের পরেই নুতন করে জঙ্গি গতিবিধি বাড়বে নিয়ন্ত্রণরেখায়। ডোভাল জানান, ভারতে ঢুকতে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে জড়ো হয়েছে ২৩০ জন জঙ্গির দল। কয়েক জন এ-পারে ঢুকতে পেরেছে। কিছু গ্রেফতার হয়েছে। সম্প্রতি পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের সঙ্গে জঙ্গিদের কিছু কথোপকথন রেকর্ড করে ভারতীয় গোয়েন্দারা। তাতে বলা হয়েছে, ‘আপেলের ট্রাকের গতিবিধি এত বেড়েছে কেন? আটকাতে পারছ না? আমরা কি চুড়ি পাঠাব? ডোভালের দাবি, সাঙ্কেতিক বার্তার মাধ্যমে জঙ্গিদের অস্ত্র ও গোলাবারুদ প্রয়োজন কি না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy