অরুণ জেটলি। —ফাইল চিত্র।
সোমবারই কেন্দ্রের চিঠিতে ইঙ্গিত ছিল। ছ’দিন পরে মুখ খুলে সেই পথেই হেঁটে নীরব মোদী-কেলেঙ্কারির দায় অন্যদের ঘাড়ে ঠেলে দিলেন অরুণ জেটলি।
পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের সাড়ে ১১ হাজার কোটি টাকা কেলেঙ্কারিতে প্রথম থেকেই বিরোধীরা প্রশ্ন তুলছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির নীরবতা নিয়ে। এ নিয়ে বারবার কটাক্ষও করছিলেন তাঁরা। প্রধানমন্ত্রী অবশ্য এ দিনও নীরবই থেকেছেন! আর মঙ্গলবার মুখ খুলেই কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী যাবতীয় কেলেঙ্কারির দায় চাপিয়ে দিলেন রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, পিএনবি কর্তৃপক্ষ এবং অডিটরদের ঘাড়ে। জেটলির যুক্তি, ব্যাঙ্কের নিজস্ব ও বাইরের অডিটরদের ভাবতে হবে, কেন তারা এই অনিয়ম ধরতে পারলেন না। নজরদারি সংস্থা অর্থাৎ, রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে নিশ্চিত করতে হবে, এই ধরনের ঘটনা যাতে অঙ্কুরেই নষ্ট করা যায় এবং এর পুনরাবৃত্তি না হয়।
একই দিনে আসরে নামলেন প্রধানমন্ত্রীর সেনাপতি তথা বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। নীরবের সঙ্গে দাভোসে প্রধানমন্ত্রীর ছবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘কারও সঙ্গে ছবি থাকলেই কিছু প্রমাণ হয় না। নীরব মামলা কেন্দ্র গুরুত্ব দিয়ে দেখছে।’’
আরও পড়ুন: নীরব মামলায় ধৃত মুকেশের খুড়তুতো ভাই
নীরব-কাণ্ডে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ভূমিকা নিয়ে গুচ্ছ প্রশ্ন তুলে সোমবারই কেন্দ্র বুঝিয়েছিল, তারা অন্যের ঘাড়ে দায় ঠেলবে। আজ সেই সুরেই জেটলি বোঝাতে চেয়েছেন, ব্যাঙ্কের নিজস্ব অডিট ব্যবস্থা রয়েছে। বাইরে থেকে চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টদের ব্যাঙ্কের লেনদেন পরীক্ষা বা অডিট করার দায়িত্ব দেওয়া হয়। ব্যাঙ্কগুলির নজরদারি সংস্থা হিসেবে কাজ করে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। ফলে রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে দায় নিতেই হবে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সূত্রে অবশ্য বলা হচ্ছে, তারা এখন আর ব্যাঙ্কের অডিটের কাজ করে না।
জেটলি এ দিন পিএনবি-কেও দুষেছেন। তাঁর বক্তব্য, সরকার ব্যাঙ্কগুলিকে স্বাধীন ভাবে কাজ করার ক্ষমতা দেওয়ায় ব্যাঙ্কগুলির দায়বদ্ধতা বেড়েছে। যখন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছে, তখন এটাই প্রত্যাশিত যে তারা সঠিক ও কার্যকরী সিদ্ধান্ত নেবেন। জেটলি বলেন, ‘‘অডিটরদের আত্মসমীক্ষা করে দেখতে হবে, কেন তাঁরা অনিয়ম ধরতে পারলেন না। যদি ব্যাঙ্কের নিজস্ব ও বাইরের অডিটরেরা অনিয়ম ধরতে না পারেন, তা হলে চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টদেরও আত্মসমীক্ষা করা উচিত।’’ ভবিষ্যতে এ ধরনের অনিয়ম ঠেকাতে নতুন ব্যবস্থা দরকার কি না, সেটা রিজার্ভ ব্যাঙ্ককেই ঠিক করতে হবে বলে জানান জেটলি। দোষীদের শাস্তি দেওয়ার হুঙ্কার দিয়েছেন তিনি।
মোদী সরকার যা-ই বলুক, আজ নীরবের আইনজীবী বিজয় অগ্রবাল বলেছেন, তাঁর মক্কেলের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ টিকবে না। বফর্স বা টু-জি মামলার মতোই সব উড়ে যাবে। পিএনবি কর্তাদের তোপ দেগে নীরবের আইনজীবী বলেন, ‘‘পিএনবি কর্তৃপক্ষ মিথ্যে গল্প বানাচ্ছেন। নিজেদের দায় এড়াতে মিথ্যে তথ্য সাজাচ্ছেন।’’ তবে নীরবের আইনি কৌশল নিয়ে মুখ খোলেননি তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy