Advertisement
E-Paper

অরুণাচলে নাগা জঙ্গি হানা, নিহত বিধায়ক-সহ ১১

এ বারের ভোটে প্রথম থেকেই উত্তপ্ত অরুণাচল। সেখানে লোকসভা ও বিধানসভা ভোট একই সঙ্গে হচ্ছে। ইতিমধ্যে দুষ্কৃতীদের আক্রমণে এনপিপি সমর্থক এক গাঁওবুড়ার মৃত্যুও হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৯ ০২:১২
নিহত বিধায়ক টিরং আবো। মঙ্গলবার অরুণাচলে। নিজস্ব চিত্র

নিহত বিধায়ক টিরং আবো। মঙ্গলবার অরুণাচলে। নিজস্ব চিত্র

এনপিপি প্রার্থী তথা অরুণাচলপ্রদেশের পশ্চিম খোনসার বর্তমান বিধায়ক টিরং আবো ও তাঁর পুত্র-সহ ১১ জনকে গুলি করে মারল নাগা জঙ্গিরা। পুলিশের সন্দেহ এনএসসিএন (আইএম) জঙ্গিরাই এই কাণ্ড ঘটিয়েছে।

এ বারের ভোটে প্রথম থেকেই উত্তপ্ত অরুণাচল। সেখানে লোকসভা ও বিধানসভা ভোট একই সঙ্গে হচ্ছে। ইতিমধ্যে দুষ্কৃতীদের আক্রমণে এনপিপি সমর্থক এক গাঁওবুড়ার মৃত্যুও হয়েছে। মার খেয়েছেন ম্যাজিস্ট্রেট, ভোটকর্মীরা। ভোট রুখতে একাধিক ঝুলন্ত সেতু বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি আরও ঘোরাল হয়েছে সশস্ত্র নাগা জঙ্গিদের উপস্থিতিতে। পুলিশ জানায়, আজ দেহরক্ষীদের সঙ্গে ছেলে ও পরিবারের কয়েকজন সদস্যকে নিয়ে চারটি গাড়িতে অসম থেকে খোনসার যাচ্ছিলেন ৫৬ বছর বয়সী টিরং। বেলা ১২টা নাগাদ বগাপানি এলাকায় ওৎ পেতে থাকা জঙ্গিরা তাঁদের গাড়ির রাস্তা আটকে স্বয়ংক্রিয় রাইফেল থেকে এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে থাকে। ঘটনাস্থলেই মারা যান টিরং-সহ সাত জন। পরে হাসপাতালে আরও চার জনের মৃত্যু হয়। দু’জন আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি।

এলাকায় সেনাবাহিনীকে পাঠানো হয়েছে। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেণ রিজিজু জানান, এই নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোরতম ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এনপিপি সভাপতি কনরাড সাংমা হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা করে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। ওই এলাকায় আফস্পা বলবৎ আছে। নির্বাচনের জন্য নিরাপত্তাও কঠোর। তারই মধ্যে মূল সড়কে এই হত্যাকাণ্ড ঘটায় কাঠগড়ায় সেনাবাহিনীও। সেনার দাবি, জওয়ানরা এত দীর্ঘ সড়কের সর্বত্র সব সময়ে নজর রাখতে পারে না। স্থানীয় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পুলিশের। রাজনৈতিক নেতারা তাঁদের গতিবিধি সেনাবাহিনীকে কখনওই জানান না। ঘনিষ্ঠ কেউই টিরংয়ে গতিবিধির খবর জঙ্গিদের দিয়েছে বলে তাদের সন্দেহ।

দলীয় সূত্রে খবর, রাজ্যের ধনীতম বিধায়কদের অন্যতম টিরংয়ের সঙ্গে এনএসসিএন (খাপলাং) গোষ্ঠীর ঘনিষ্ঠতা ছিল। তা নিয়ে অতীতে বেশ কয়েকবার এনএসসিএন (আইএম) তাঁকে সতর্ক করে। মার্চ মাসে টিরংয়ের এক সমর্থককেও হত্যা করা হয়। এ বার তারা সরাসরি টিরংয়ের উপরেই হামলা চালাল। তবে এনএসসিএন (আইএম)-এর এক সূত্র আনন্দবাজারকে জানায়, এখনই আইএম-কে দায়ী করা ঠিক নয়। এই আক্রমণের ব্যাপারে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কিছুই জানে না। দলের তরফে তদন্ত শুরু করা হচ্ছে। নিরীহ মানুষকে এ ভাবে হত্যা সংগঠন সমর্থন করে না।

এ দিকে, অরুণাচলের কলোরিয়াংয়ে নাম্পে ও গিম্বার বুথে তৃতীয়বার ভোট করানোর চেষ্টাও বিঘ্নিত হল। ১১ এপ্রিলের ভোটে গোলমালের জেরে ২৭ এপ্রিল ফের সেখানে ভোটের দিন ধার্য হয়। কিন্তু সেদিন ভোট কর্মীদের পৌঁছতেই দেওয়া হয়নি। আজ ফের দুই বুথে ভোট হয়। গত কাল ভোটকর্মীদের একটি দলকে লাংবাং এলাকায় ঘিরে ফেলে মুখে কাপড় বাঁধা শ’পাঁচেক মানুষ। অভিযোগ, তারা এনপিপি সদস্য। তাদের হাতে দা, লাঠি, তীর-ধনুক, দেশি বন্দুকের পাশাপাশি একে-৪৭ রাইফেলও ছিল বলে জানান নাম্পের সেক্টর ম্যাজিস্ট্রেট রিডো টারাক। তারা গুলিও চালায়। প্রাণহানির ভয়ে জওয়ানরা পাল্টা গুলি চালাননি। ভোট কর্মী ও জওয়ানদের কাছ থেকে ইভিএম ও অন্য সামগ্রী লুঠ করা হয়। অবশ্য হামলার আগাম আশঙ্কা থেকে অন্য পথ দিয়ে পাঠানো দলটি বুথে পৌঁছয়। আজ সকাল থেকে দুই কেন্দ্রে ভোটও হয়েছে। তবে আতঙ্কের কারণে কম ভোট পড়ে।

Arunachal Pradesh Terrorist Attack Naga Terrorist
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy