পাকিস্তানের সঙ্গে পরের আলোচনা শুধুই পাক অধিকৃত কাশ্মীর পুনরুদ্ধার নিয়ে হওয়া উচিত। মালয়েশিয়ায় গিয়ে এই কথাই জানালেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘অপারেশন সিঁদুর’ এবং তার পরবর্তী ভারত-পাক সংঘর্ষের পরে ভারতের অবস্থান বিশ্বব্যাপী পৌঁছে দিতে শাসক-বিরোধী সাংসদ, প্রতিনিধিদের নিয়ে তৈরি সাতটি দল বিভিন্ন দেশে ঘুরছে। অভিষেকদের প্রতিনিধিদল এ বার পৌঁছোল মালয়েশিয়ায়। সেখানে গিয়েই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন অভিষেক। অন্য দিকে, আলজিরিয়ায় গিয়ে পাকিস্তানের সমালোচনা করেছেন এআইএমআইএম সাংসদ আসাদউদ্দিন ওয়েইসি। পাকিস্তানে জঙ্গিদের কতটা ‘খাতির’ করা হয়, সেই তত্ত্বই তুলে ধরেছেন তিনি।
রবিবার মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে প্রবাসী ভারতীয়দের সঙ্গে কথোপকথন হয় অভিষেকদের। অভিষেক যে প্রতিনিধি দলে রয়েছেন, তার নেতৃত্বে রয়েছেন জেডিইউ সাংসদ সঞ্জয়কুমার ঝা। ওই দলে রয়েছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা সলমন খুরশিদ। কথোপকথনের সময় অভিষেক বলেন, ‘‘ওদের (পাকিস্তান) সঙ্গে দশকের পর দশক ধরে কথা চলছে। ধরন বদলেছে, সরকার বদলেছে। কিন্তু একটি বিষয়ই স্থির রয়েছে, তা হল পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাত।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘২২ এপ্রিল ২৬ জনকে গুলি করে খুন করা হয়েছে। তাঁদের ধর্ম এবং লিঙ্গের ভিত্তিতে...। আমি চাই, শাসকেরা পাকিস্তানের সঙ্গে একটি বিষয় নিয়েই আলোচনা করুক, তা হল পাকিস্তান অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীর পুনরুদ্ধার। নয়তো এই সন্ত্রাস হামলা চলবেই।’’ সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ভারতের অবস্থানও মালয়েশিয়ায় গিয়ে স্পষ্ট করেছেন অভিষেকরা। কেন ‘অপারেশন সিঁদুর’ চালানো হয়েছিল, তা-ও তুলে ধরেছেন তাঁরা।
কুয়ালালামপুরে হাই কমিশনের তরফে সমাজমাধ্যমে পোস্ট দিয়ে জানানো হয়েছে, মালয়েশিয়ার প্রবাসী ভারতীয়দের পাশাপাশি ভারতীয় মুসলিমেরাও এই সন্ত্রাসবাদী হামলার সমালোচনা করেছেন। অভিষেক জানিয়েছেন, ২২ এপ্রিলের হামলার পরে ভারত প্রায় দু’সপ্তাহ অপেক্ষা করেছিল, যাতে পাকিস্তান এই নিয়ে কোনও সুবিচার করে। কিন্তু সে সব হয়নি। ১৪ দিন পরে সিঁদুর অভিযান চালিয়ে পাকিস্তানের ন’টি জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করা হয়েছে। অভিষেক বলেন, ‘‘আমরা এখানে কিছু প্রমাণ সঙ্গে করে এনেছি। সমাজমাধ্যমে বেশ কিছু ছবি ছড়িয়ে পড়েছে, তাতে দেখা গিয়েছে, পাকিস্তানি সেনার শীর্ষকর্তারা জঙ্গিদের শেষকৃত্যে যোগ দিয়েছেন। বিশ্বকে আর কত বড় প্রমাণ দেবে ভারত?’’
অন্য দিকে, ওয়েইসি আলজিরিয়ায় জানান, ২৬/১১ মুম্বই হামলার অন্যতম চক্রী জ়াকিউর রহমান লকভি পাকিস্তানে কী ভাবে বিশেষ সুবিধা পেয়েছেন। এমনকি, জেলবন্দি থাকা অবস্থায় তিনি বাবাও হয়েছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘জ়াকিউর রহমান লকভি এমন এক জঙ্গি, যাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদী কাজকর্মের যোগাযোগের চার্জ রয়েছে। তাকে (জামিন দিতে) পৃথিবীর কোনও দেশ অনুমতি দেবে না। কিন্তু জেলে বসেই তিনি পুত্রসন্তানের বাবা হয়েছিলেন। এর পরে ফিনানশিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স (এফএটিএফ)-এর ধূসর তালিকায় পাকিস্তান স্থান পেলে তার বিরুদ্ধে বিচার দ্রুত হয়।’’